বাংলাদেশে আসছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান

বাংলাদেশে আসছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান

বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আগামী মে মাসের শেষের দিকে সফরটি হতে পারে- এমনটাই আভাস দিয়েছে ঢাকা ও ইসলামাবাদের দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্রগুলো।

জানানো হয়েছে- আট মুসলিম রাষ্ট্রের জোট ডি-৮ এর শীর্ষ সম্মেলনে ইমরান খানকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে ঢাকা। ৩০ এবং ৩১ মে ঢাকায় দু’দিনের ওই সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। শীর্ষ সম্মলেনের আয়োজক হিসাবে ঢাকা ডি-৮ সেক্রেটারিয়েটের সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রস্তাবিত তারিখে সদস্য রাষ্ট্রের শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যস্ততা বা আপত্তি আছে কি-না? জানতে চেয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর মতামত জানতে ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও চিঠি পাঠানো হয়েছে।

এখনও পাকিস্তান কিংবা ডি-৮ এর অন্য সব সদস্য রাষ্ট্রের জবাব আসেনি বলে দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বলেন, সামিটের হোস্ট হিসাবে বাংলাদেশ শীর্ষ নেতাদের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানাবে- এটাই রেওয়াজ। আমরা সে মতে একটি সম্ভাব্য তারিখ প্রস্তাব করেছি এবং এ নিয়ে পাকিস্তান সরকারের মতামত চেয়েছি। তাদের ডেলিগেশন সম্পর্কে ধারণা পেতে প্রস্তাবটি শেয়ার করা হয়েছে।

করাচিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাই কমিশনার নুর-ই হেলাল সাইফুর রহমান গত সপ্তাহে করাচির এক সেমিনারে বলেছেন- ঢাকায় ডি এইট শীর্ষ সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রিত। ইমরান খান সেই সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং এই সফরের মধ্যদিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ওই সেমিনারের বরাতে পাকিস্তানের এক্সপ্রেস ট্রিবিউন একটি রিপোর্ট করেছে। রিপোর্টে প্রকাশ- বাংলাদেশে পাকিস্তানের বড় বিনিয়োগ আসছে। বাংলাদেশে যে ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে সেখানে পাকিস্তানের ওই বিনিয়োগ আসবে। বিনিয়োগটি এতটাই আকর্ষণীয় যে পাকিস্তানের গণমাধ্যম এটাকে ‘ঐতিহাসিক বিনিয়োগ’ বলেছে। সেমিনারের আয়োজক ছিল করাচিস্থ বাংলাদেশ উপ-হাই কমিশন।

উপ-হাই কমিশনার সাইফুর রহমানকে উদ্বৃত করে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানায়- বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ ও সম্ভাবনা বিষয়ে পাকিস্তানী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে বন্দর নগরীতে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ মিশন। এতে ইসলামাবাদে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার তারিক আহসানও বক্তব্য রাখেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।

১৯৭১ সালে ৩০ লক্ষ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে সেই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন না হওয়ায় সেমিনারে উপ-হাই কমিশনার হতাশা ব্যক্ত করেছেন জানিয়ে ট্রিবিউন তার রিপোর্টে বলেছে, অনুষ্ঠানে হাই কমিশনারও আশা করেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আসন্ন ঢাকা সফর দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন তথা সার্বিকভাবে ঘনিষ্ঠতায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে। রাতে ঢাকা থেকে হাই কমিশনার তারিক আহসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডি-৮ সম্মেলনে অংশগ্রহণ বিষয়ে ইমরান খানের দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগে কথা স্বীকার করেন। বলেন, ইসলামাবাদকে শীর্ষ সম্মেলনে সম্ভাব্য তারিখটি শেয়ার করা হয়েছে এবং ওই সময়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর অন্য ব্যস্ততা আছে কি-না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রায় ২০ বছর পর বাংলাদেশ উন্নয়নশীল বৃহৎ আট মুসলিম রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ক জোট ডেভেলপিং-এইট বা ডি-৮ এর শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে। ১৯৯৭ সালে ইস্তাম্বুলে তুরস্ক, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশকে নিয়ে গঠিত ওই জোটের দ্বিতীয় সম্মেলন ১৯৯৯ সালে ঢাকায় হয়েছিল। অল্টারনেটিভ ভেন্যুতে দু’বছর অন্তর অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মলেনটির এবারের আয়োজক ঢাকা। আয়োজনটি সফল করার মধ্যদিয়ে আগামী দু’বছরের জন্য ডি-৮ এর চেয়ারম্যানশিপ গ্রহণ করবে বাংলাদেশ।