বিশ্বজুড়ে করোনার থাবা: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩,৮৩০

বিশ্বজুড়ে করোনার থাবা: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩,৮৩০

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮৩০ জনে। এ ছাড়া শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯ হাজার ৮৬২ জন। এর মধ্যে চীনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩ হাজার ১১৯ জনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে দেশটিতে নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। এ ছাড়া চীনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৭৩৫ জন। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ জন। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিএনও নিউজ এ খবর জানিয়েছে।

এরই মধ্যে বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। তবে চীনে ধীরে ধীরে কমে আসছে করোনাভাইরাসের প্রকোপ। চীনে কমে গেলেও ইউরোপের দেশ ইতালিতে বাড়ছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। ইতালিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে এক দিনেই প্রাণ হারিয়েছেন ১৩৩ জন। চীনের বাইরে ইতালিতেই সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সংক্রমণ ঠেকাতে ইতালির উত্তরাঞ্চলের লম্বার্ডিসহ ১৪টি অঞ্চলের এক কোটি ৬০ লাখ মানুষকে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে রাখার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। এপ্রিলের ৩ তারিখ পর্যন্ত এসব এলাকাকে পুরোপুরি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ কন্তে বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারি, এই সিদ্ধান্তে মানুষ দুর্ভোগে পড়বে ঠিকই, কিন্তু কঠিন কোনো কিছু মোকাবিলায় আমাদের সবার ছোট-বড় অনেক ত্যাগ করতে হয়। কারণ সময়টা দায়িত্বশীল হওয়ার।’

ইউরোপের আরেক দেশ স্পেনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৬৭৩ জনে দাঁড়িয়েছে।

অন্যদিকে, ইরানে ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ জনের প্রাণহানির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯৪ জনে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইউরোপের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ করেছে তেহরান। এর মধ্যেই গত শুক্রবার ফাতিমা রাহবার নামে ইরানের এক সংসদ সদস্যও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

এ ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্তের হার আগের চেয়ে কিছুটা কমলেও পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সেখানে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫১ জনের এবং আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ৩৮২ জনে।

এদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২২ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪০ জন। ফ্লোরিডায় নতুন করে দুজনের মৃত্যুতে আতঙ্কিত পুরো দেশ। নতুন নতুন অঙ্গরাজ্যেও ছাড়াচ্ছে ভাইরাস। এ অবস্থায় নিউইয়র্কসহ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা।

গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে চীনের উহান শহরে প্রথম ধরা পড়ে এ ভাইরাস। কোভিড-১৯ নামের এই রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে দিতে ক্লান্ত চীনা চিকিৎসকরা। প্রায় তিন মাসের এই লড়াইয়ে দেশটিতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ঠিকই, কিন্তু বিশ্বব্যাপী এর প্রকোপ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের আরো অনেক দেশের ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস দিনে দিনে আরো বেশি মানুষকে আক্রান্ত করছে। জনজীবনে এনে দিচ্ছে স্থবিরতা।

এদিকে, চীনে গত শনিবার ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের কোয়ারেন্টাইনে বা আলাদা করে রাখার জন্য ব্যবহৃত একটি পাঁচতলা হোটেল ধসে পড়ে। যেখানে বেশিরভাগই ভাইরাস সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন সন্দেহে নজরবন্দি ছিলেন।

এ ছাড়া কলম্বিয়া, বুলগেরিয়া, কোস্টারিকা, মাল্টা, মালদ্বীপ, প্যারাগুয়েতে ও বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে। লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে ব্রাজিলে প্রথম করোনা ছড়ালেও প্রথম মৃত্যু হয়েছে আর্জেন্টিনায়।

এরই মধ্যে দুশ্চিন্তায় পড়েছে বাংলাদেশ। দেশে গতকাল রবিবার তিনজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত করা হয়েছে। এর পর থেকে আতঙ্ক বিরাজ করছে পুরো দেশে। করোনা ঠেকাতে মাস্কসহ বিভিন্ন পণ্যের দিকে ঝুঁকছে মানুষ।