মোবাইল ফোন হ্যাকিংয়ের অভিযোগ

সৌদি ও আমিরাতের যুবরাজকে তলব যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের

সৌদি ও আমিরাতের যুবরাজকে তলব যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের

মোবাইল ফোন হ্যাকিংয়ের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সৌদি আরব ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানকে তলব করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত।

কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরার সংবাদ উপস্থাপিকা গাদা ওউইস মোবাইল ফোন হ্যাকিংয়ের অভিযোগ এনে চলতি মাসের শুরুতে ফ্লোরিডার জেলা আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।

শনিবার ওউইস তার টুইটারে আদালতের সমনের একটি ছবি পোস্ট করেন।

আদালত উভয় অভিযুক্তকে জবাব দেয়ার জন্য ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে সৌদির যুবরাজ সালমানের সাবেক সহযোগী সৌদ আল-কাহতানিসহ অনেকেই রয়েছেন। এই তালিকায় সৌদির আল আরাবিয়াহ গণমাধ্যমকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এই মামলার উদ্দেশ্য হল, ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা। একই সঙ্গে হ্যাকিংয়ের ফলে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার জন্য ৫ হাজার মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে। মামলার ফলে আলজাজিরা কর্মীদের ফোনে নজরদারি এবং হ্যাকিংয়ের রহস্য উন্মোচন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার অন্তত ৩৬ কর্মীর মোবাইল ফোন হ্যাক করে ইসরাইলি প্রতিষ্ঠান এসএসও গ্রুপের একটি স্পাইওয়্যার দিয়ে। সাইবার নিরাপত্তা গবেষকরা এই তথ্য জানান। হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়া ৩৬ জনের মধ্যে আল জাজিরার কর্মী, টিভি উপস্থাপক ও নির্বাহী কর্মকর্তারা রয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইফোন অপারেটিং সিস্টেমের একটি দুর্বলতা কাজে লাগাতে ইসরাইলি স্পাইওয়্যার ব্যবহার করা হয়। এটি সৌদি ও আমিরাত থেকে হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আলজাজিরার অনুসন্ধানী প্রতিবেদক তামের আলমিশাল জানান, কয়েক মাস আগে একটি প্রতিবেদনের জন্য তাকে ফোন করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। যে ধরনের নম্বর থেকে ফোন দেওয়া হয়েছিল, সেটি সাধারণত সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ব্যবহৃত হয়।

আলমিশাল বলেন, ‘এ ঘটনার পর আমার ফোন সিটিজেন ল্যাবকে দেওয়া হয়। তারা অনুসন্ধান করে জানতে পারে, আমার ফোন হ্যাক হয়েছিল। এরপর ৩৬ জনের ফোন হ্যাক হওয়ার বিষয়টি সামনে আসে। হ্যাকাররা আমাদের ফোন থেকে বিভিন্ন ছবি ও তথ্য হাতিয়ে নেয়। এরপর সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব কর্মকাণ্ডে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের অপারেটররা জড়িত।’

উল্লেখ্য, সন্ত্রাসে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ তুলে ২০১৭ সালে কাতারের সঙ্গে কূটনেতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয় সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিসর।