পরিস্থিতি যাই হোক না কেনো পদত্যাগ করবেন না রাজাপাকসে

পরিস্থিতি যাই হোক না কেনো পদত্যাগ করবেন না রাজাপাকসে

পরিস্থিতি যাই হোক না কেনো তাতে পদত্যাগ করবেন না শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসে। প্রবল আন্দোলনে বিপর্জস্ত গোটা শ্রীলঙ্কা। পদত্যাগ করেছেন মন্ত্রিসভার প্রায় সব সদস্যই। সরকারের পক্ষত্যাগ করেছেন আরও কয়েক ডজন আইনপ্রনেতা। কিন্তু এরপরেও ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে থাকবেন বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজাপাকসে। বুধবার সরকার পক্ষের চীফ হুইপ জনস্টন ফার্নান্দো এমপিদের উদ্দেশ্যে বলেন, দায়িত্বশীল সরকার হিসেবে আমরা বলতে চাই যে, কোন পরিস্থিতিতেই প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করবেন না।

বিবিসির খবরে জানানো হয়েছে, প্রচণ্ড অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দল ও জনসাধারণের মধ্য থেকে তার পদত্যাগের দাবি আসছিলো। এর মধ্যেই প্রেসিডেন্টের তরফ থেকে পদত্যাগ না করার এমন দৃঢ় ঘোষণা আসলো। ব্যাপক বিদ্যুৎ, খাদ্য, গ্যাসসহ জরুরি পণ্যের তীব্র সংকটের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশটিতে প্রবল বিক্ষোভ চলছে।

সরকার টিকিয়ে রাখতে বিরোধী এমপিদের প্রেসিডেন্ট জাতীয় ঐক্যের সরকারে যোগ দেয়ার আহবানও জানান রাজাপাকসে। তবে বিরোধীরা সেটি প্রত্যাখ্যান করে উল্টো প্রেসিডেন্টসহ পুরো সরকারের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে।

পরিস্থিতি বিবেচনায় গত শুক্রবার জরুরি আইন জারি করা হয় শ্রীলঙ্কায়। তবে মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ ও দলীয় বেশ কিছু এমপির দলছাড়ার প্রেক্ষাপটে রাজাপাকসা জরুরি আইন তুলে নেন। ওইদিনেই তার দলের ৪১ জন এমপি দল ছেড়ে নিজেদের স্বতন্ত্র ঘোষণা করেন। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এবারেই সবচেয়ে বড় সংকট পার করছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটি। ব্যাপক আমদানি নির্ভর দেশটির খাদ্য, জ্বালানিসহ দরকারি পণ্য কেনার মতো বৈদেশিক মুদ্রা নেই। দিনে ১৩ ঘণ্টার মতো লোডশেডিং, ভয়াবহ মূল্যস্ফীতি ও খাদ্যসহ মৌলিক পণ্যগুলোর ঘাটতিতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। বুধবার দেশজুড়ে জন বিক্ষোভ অব্যাহত ছিলো। জানুয়ারি থেকেই শান্তিপূর্ণ এ বিক্ষোভ চলে আসছে।

তবে গত ১৪ দিনে অনেক বেশি মানুষ রাস্তায় নেমে আসার কারণে পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা বলছেন যে মানুষ চাল,ডালসহ বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম দরকারি জিনিসগুলোও পাচ্ছে না। এমনকি কাজে বা স্কুলে যাওয়ার জন্য বাস পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না। বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ হলেও কোথাও কোথাও সহিংসতা দেখা গেছে বিশেষ করে রাজনীতিকদের বাড়িঘরে হামলা হচ্ছে আর পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছেন অনেকে। মঙ্গলবার জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা শ্রীলংকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।