রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর সেনাদের কাছ থেকে কেড়ে নেয়ার দাবি আরাকান আর্মির

রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর সেনাদের কাছ থেকে কেড়ে নেয়ার দাবি আরাকান আর্মির

কমপক্ষে দুই মাস তীব্র লড়াইয়ের পর বন্দরনগরী পাউকতোয়া পুরোপুরি নিজেদের দখলে নেয়ার দাবি করেছে মিয়ানমারের জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। তারা ২৪শে জানুয়ারি শেষের দিকে জানিয়েছে এই বন্দর নগরী তাদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এখন। এটি ২০ হাজার মানুষের একটি শহর। পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনের রাজধানী সিতওয়ের গুরুত্বপূর্ণ গভীর সমুদ্র বন্দরের খুবই কাছে এই শহর। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর বিদ্রোহীদের দাপটে সেখানে এক পর্যায়ে একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি হয়। কিন্তু সেই চুক্তি ভঙ্গ করে গত নভেম্বরে পাউকতোয়া স্বল্প সময়ের জন্য দখল করে আরাকান আর্মি। তখন থেকেই এই বন্দরনগরীতে নিয়মিতভাবে স্থল হামলা এবং নৌবাহিনীর জাহাজ ব্যবহার করে বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল সামরিক জান্তা। একই সঙ্গে হেলিকপ্টার ব্যবহার করে গুলি করতো।

পাউকতোয়ার নতুন কিছু ছবি পাওয়া গেছে গুগল আর্থে। তাতে দেখা যায়, এই শহরের বাইরের দিকে একটি ‘ব্লক’ বা অবরোধ ছিল।

তার প্রায় পুরোটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বন্দরের কাছে ধ্বংস হয়েছে বেশ কয়েকটি ভবন। পুলিশ স্টেশনেও বেশ কয়েকটি ভবন ধ্বংস হয়েছে। এ সপ্তাহের শুরুর দিকে আরাকান আর্মির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলেছেন, শহরে তাদের যোদ্ধারা ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চালাচ্ছেন। ২৩শে জানুয়ারি আরাকান আর্মি দাবি করে যে, ওই শহরে তীব্র লড়াই চলছে। এসব সংঘর্ষ, যুদ্ধ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি সামরিক জান্তা। নভেম্বরে জাতিসংঘ জানায়, যুদ্ধের কারণে ওই এলাকায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ১৮ হাজার মানুষ।

রাজ্যটির রাজধানী সিতওয়ে থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পূর্বদিকে এই পাউকতোয়া শহর। সেখানে যে গভীর সমুদ্র বন্দর আছে, তাতে কিছু অর্থায়ন করেছে ভারত। কারণ দেশটি মিয়ানমারের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গভীর করতে চেয়েছে। এ সপ্তাহের শুরুর দিকে মিয়ানমারের চেম্বারস অব কমার্স ভারতীয় ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের একটি দলের সঙ্গে সিতওয়ের এই বন্দরকে আরও আধুনিকায়ন করা নিয়ে আলোচনা করেছে। সামরিক জান্তা সমর্থিত মিডিয়ায় ২৫শে জানুয়ারি রিপোর্টে এ কথা জানানো হয়েছে।

২৫শে জানুয়ারি পাউকতোয়ার একজন বাসিন্দা বলেছেন, সিতওয়ে এবং পাউকতোয়ার মধ্যে চলাচল সামরিক বাহিনীর গেট এবং চেকপয়েন্ট বসিয়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল। ২৪শে জানুয়ারি আরাকান আর্মি বিবৃতিতে বলেছে, মরাউক-ইউ, মিনবাইয়া, কাউকতোয়া এবং রাথেডাং শহরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাদের তীব্র লড়াই চলছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি তারা।