মহানবী সা:-কে আল্লাহর ৯টি নির্দেশ

মহানবী সা:-কে আল্লাহর ৯টি নির্দেশ

নবী-রাসূলরা হলেন পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালার প্রতিনিধি। উম্মতকে সৎপথে পরিচালিত করা ও পাপাচার থেকে মুক্ত থাকার আহ্বান করাই তাদের কাজ। নবীদের সর্ববিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা। এ হিসেবে আমাদের প্রিয়নবী সা:-কে কিছু প্রয়োজনীয় বিষয়ের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, যাতে তিনি তার উম্মতদের এসব গুণে গুণান্বিত করতে পারেন। রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, আমার রব আমাকে ৯টি কাজের নির্দেশ দিয়েছেন।

১। আমি যেন প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে ন্যায় কথা বলি। কুরআন মাজিদে বলা হয়েছে- আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা, সদাচরণ এবং আত্মীয়স্বজনকে দান করার আদেশ দেন (সূরা নাহল-৯০)

২। নীরবতায় আমি যেন আল্লাহর চিন্তায় মগ্ন থাকি। আল্লাহ তায়ালা জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান লোকদের প্রশংসায় বলেছেন- (বুদ্ধিমান তারা) যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা-গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টির বিষয়ে। (সূরা আল ইমরান-১৯১)

৩। ক্রোধ ও সন্তুষ্টি উভয় অবস্থায় যেন ন্যায় কথা বলি। ক্রোধের অবস্থায় ধৈর্যহারা হওয়া ও ন্যায় কথা না বলা মুমিনের কাজ নয়। আর নবী তো ক্রোধ থেকে অনেক ঊর্ধ্বে। আল্লাহ তায়ালা নবীকে নরম স্বভাবের করে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন যদি আপনি কঠোর ও রুক্ষ মেজাজের হতেন, তবে মানুষ আপনার থেকে দূরে থাকত। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- হে ঈমানদাররা আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক কথা বলো। (সূরা আহযাব-৭০) আরো ইরশাদ করেন- (সৎকর্মশীল তারা) যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে এবং মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে। (সূরা আল ইমরান-১৩৪)

৪। সচ্ছলতা ও অসচ্ছলতা উভয় অবস্থায় যেন ম্যধপন্থা অবলম্বন করি। কেননা সচ্ছল অবস্থায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যয় করা অপচয়, আর প্রয়োজনের সময় ব্যয় না করা কৃপণতা।

৫। যে আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে, আমি যেন তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন না করি বরং বজায় রাখি।

৬। যে আমাকে বঞ্চিত করে আমি যেন তাকে বঞ্চিত না করে কিছু দান করি।

৭। যে আমার প্রতি জুলম করে প্রতিশোধ গ্রহণের শক্তি থাকা সত্ত্বেও আমি যেন তাকে ক্ষমা করে দেই। কেননা ক্ষমাই মহত্ত্বের লক্ষণ। রাসূল সা: রাহমাতুল্লিল আলামিন। তিনি সব সৃষ্টির জন্য রহমত। মহানবী সা: বলেন, যে ব্যক্তি তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে, তুমি তার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করো। যে তোমার প্রতি জুলম করে, তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও। যে তোমাকে বঞ্চিত করেছে, তুমি তাকে দাও। (মিশকাত)

৮। আমার বচন যেন হয় আল্লাহর জিকর। মহানবী সা: বাণীও ওহি। কেননা নিজে কিছুই বলেন না, যতক্ষণ না তার কাছে প্রত্যাদেশ করা হয়। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন তিনি নিজের থেকে বলেন, যা বলেন তা ওহি, যা তার কাছে প্রত্যাদেশ করা হয়। (সূরা আন নজম-৩)

৯। আমার দৃষ্টি যেন হয় উপদেশমূলক এবং আমি যেন ভালো কাজের আদেশ করি। অসৎ ও অন্যায় কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখি। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখতে বলেছেন। (রজিন, মিশকাত-মিশকাত হাদিস নং ৫০০৪)।

প্রধান ফকিহ্, আল-জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদ্রাসা, ফেনী