ঢাকা, ১৫ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : বোরকা বা নিকাব পরিধান করার কারণে জরিমানার আইন করেছে ডেনমার্ক। চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে দেশটিতে এ নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে। বোরকা পরিধান করার দায়ে ইতিমধ্যে একাধিক নারীকে জরিমানা করা হয়েছে।
ডেনমার্ক সরকার বোরকার ওপর জরিমানার এ বিধান করার পর মুসলমান নারীদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ফ্রান্সের নাগরিক রাশিদ নাক্কাজ। যেসব নারীকে জরিমানা করা হবে তাদের জরিমানার সেই অর্থ তিনি পরিশোধ করবেন।
রাশিদ নাক্কাজ আলজেরিয়ান বংশোদ্ভুত ফ্রান্সের নাগরিক। তিনি বর্তমানে একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬টি দেশে শাস্তির শিকার ৫ শতাধিক নারীর জরিমানা পরিশোধ করেছেন।
এদিকে নাক্কাজ এ ঘোষণা দেয়ার পর এ পর্যন্ত ৮ নারীকে জরিমানার তথ্য তিনি পেয়েছেন। তাদের জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে তিনি শিগগীরই ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
ডেনমার্কের নতুন এ আইন অনুযায়ী নিকাব পরার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে ১ হাজার ক্রোনার এবং দ্বিতীয়বার অমান্য করলে ১০ হাজার ক্রোনার জরিমানার বিধান রয়েছে।
রাশিদ নাক্কাজের এই জরিমানা প্রদানের ঘোষণার সমালোচনা করেছে ডেনমার্ক কর্তৃপক্ষ। ডেনিশ পিপলস পার্টি নেতা মার্টিন হেনরিকসেন বলেন, নাক্কাজের এই পরিকল্পনা ডেনমার্কের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। আমি তার এই পদক্ষেপের নিন্দা জানাই। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, জরিমানার সঙ্গে নিষেধ অমান্যকারী নারীদের করও দিতে হবে।
নাক্কাজ জরিমানার সঙ্গে কর দিতেও রাজি হয়েছেন। এছাড়াও নিকাব নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীকে গ্রেফতার করে কারাগারে নিক্ষেপ করা হলে সেক্ষেত্রে তিনি আইনি লড়াইয়ে সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন। প্রয়োজনে তিনি ইউরোপীয় আদালত ও জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার দারস্থ হওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
রাশিদ নাক্কাজের দাবি অনুযায়ী তিনি এ বছরের মার্চে ইরান সফরে গিয়েছিলেন সেখানে কারাগারে আটক ২৯ জন নারীকে সহযোগিতার জন্য। ইরান সরকার হিজাব না পরার কারণে তাদের আইন অনুযায়ী ওই নারীদের গ্রেফতার করেছে। তিনি তাদের মুক্ত করতে ৭৭ হাজার ইউরো খরচ করেছেন বলে দাবি করেন। আমি রাস্তায় বোরকা বা নিকাব পরা না পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোর বিরোধী। আমি ব্যক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি।
রাশিদ নাক্কাজ ১৯৭২ সালে ফ্রান্সে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মা আলজেরিয়ান। তিনি ফ্রান্স ও আলজেরিয়া দুই দেশেরই নাগরিক। তিনি একজন ধনী ব্যবসায়ী। পাশাপাশি তিনি রাজনীতিও করেন। ২০০৭ সালে নিজেকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। তবে নির্বাচনের শর্ত পূরণ করতে না পারায় প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে পারেননি।
(জাস্ট নিউজ/এমআই/১০৩০ঘ.)
