দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা

নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে দেশে: তারেক রহমান

নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে দেশে: তারেক রহমান

দেশে নীরব দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি বিরাজ করছে মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বর্তমানে দেশের কোটি কোটি মানুষের দিন কাটছে অর্ধাহার-অনাহারে। ক্ষুধার যন্ত্রণায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভীতি উপেক্ষা করেও একমুঠো খাবারের দাবিতে অসহায় মানুষ নেমে আসছে রাজপথে। 

তিনি বলেন, ‘বাড়ছে বুভুক্ষ মানুষের হাহাকার। দেশে চলছে নীরব দুর্ভিক্ষ। এমন পরিস্থিতিতেও সারাদেশে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা ত্রাণের চাল চুরি, নানা কৌশলে অসহায় মানুষদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি টাকা আত্মসাৎ, সরকারিভাবে গরিব কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের জন্য করা তালিকাতেও চলছে জালিয়াতি। মানুষের এমন ঘোর বিপদকালেও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের চুরি-দুর্নীতি প্রমান করে, এই ‘দল এবং সরকার’ এখন সম্পূর্ণভাবে লুটেরা পরিবেষ্টিত।’

শুক্রবার (২২ মে) লন্ডন থেকে এক ভিডিও বার্তায় তারেক রহমান এসব কথা বলেন।

দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশবাসী এবার এক অবর্ণনীয় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পবিত্র সিয়াম পালন করেছে। এবারের ঈদে অনেকের ঘরেই থাকছেনা ঈদ উৎসবের আমেজ। কারণ, মরণঘাতী করোনাভাইরাসের হানায় অনেকেই স্বজন হারিয়েছেন। নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। হারিয়েছেন অল্প আয়ের চাকুরী কিংবা স্বল্প পুঁজির ব্যবসা-বাণিজ্য। অপরদিকে ক্ষমতাসীন অপশক্তির, গুম-খুন-অপহরণ আর জেল জুলুম অনেক পরিবারকে নিঃস্ব করে দিয়েছে।’

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ক্ষতির কথা উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘একদিকে করোনাভাইরাস আতঙ্ক অন্যদিকে খাদ্যাভাবে ঘরবন্দি অসংখ্য অগণিত মানুষের হাহাকার। এরইমধ্যে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাত জনজীবনে নতুন করে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।’

তারেক রহমান বলেন, ‘এমন অমানবিক পরিস্থিতি মোকাবেলায়, সময়ের দাবি হলো, দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দলমত-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে একে অপরের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রদর্শন। ‘সতর্কতা-সহায়তা-মানবিকতা’র চেতনায় অসহায় মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া।’

প্রায় ১৭ মিনিটের বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করোনাকালে দেশের অবস্থা,করোনা মোকাবেলায় সরকারের করণীয়, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডব এবং সারাদেশে অসহায় মানুষের জন্য বিএনপির অব্যাহত মানবিক সহায়তা কর্মসূচিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বের প্রতিটি দেশ, প্রতি মানুষ এক কঠিন সময় পার করছে। মরণঘাতী করোনাভাইরাস আতংকে দেশে দেশে শত শত কোটি মানুষ ঘর বন্দি। এমন আতংকের পৃথিবী অতীতে কখনো কেউ দেখেছে এমন একজন মানুষও পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যাবেনা। বিগত এক শতকে দু’টি বিশ্ব যুদ্ধ হলেও সেই যুদ্ধ ছিল দৃশ্যমান শত্রুর বিরুদ্ধে। আর এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র।’

তারেক রহমান বলেন, ‘এক অদৃশ্য শত্রুর মোকাবেলায় প্রতিটি দেশ নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি নিয়েছে। তবে যে দেশের সরকার যত বেশি জবাবদিহিমূলক, জনবান্ধব, গণমুখী এবং দায়িত্বশীল সে সব দেশের নাগরিকগণ নিজেদের ততবেশি নিরাপদ মনে করেন।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমান সরকার জবাবদিহিমূলক কিনা কিংবা করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকার আসলেই কতটা প্রস্তুত, এ নিয়ে নাগরিকদের মনে প্রশ্ন রয়েছে।’

দেশের করোনা মোকাবেলার বেহাল দশার চিত্র তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘করোনাভাইরাস আতংকিত মানুষ এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতাল ঘুরতে ঘুরতে চিকিৎসা না পেয়ে পথিমধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। ক্ষমতাসীন সরকার দাবি করে তারা নাকি বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে একটি মডেল রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপন করেছে। কিন্তু করোনার করাল গ্রাস যখন মানুষকে মানবিক হতে শিখিয়েছে ঠিক সেই সময়টিতেও বাংলাদেশ যখন গরিব মানুষের ‘ত্রাণ চুরি’র কারণে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার সংবাদের শিরোনাম হয় তখন নাগরিকদের মনে প্রশ্ন জাগে, বাংলাদেশ কাদের কাছে? কিসের মডেল? চাল চুরি? নাকি গরিবের ত্রাণ চুরির?’

তারেক রহমান বলেন, ‘একদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতংক আর অপ্রতুল চিকিৎসা ব্যবস্থা অপরদিকে অসংখ্য মানুষের ঘরে ঘরে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর অভাব এমন পরিস্থিতিতে মানুষের প্রতিটি দিন কাটছে ভয়-ভীতি আর আতংকে। তাই আপাতত এই সময়ে তিনি ক্ষমতাসীনদের অপকীর্তি অনাচারের দীর্ঘ ফিরিস্তি তুলে ধরতে চাননা।’

তিনি বলেন, ‘লকডাউনের এই দুঃসহ সময়টিতে মানুষের যখন অর্থনৈতিক সহায়তা ভীষণ প্রয়োজন তখন ক্ষমতাসীনদের কয়েকটি মেঘা লুটপাটের ঘটনা উল্লেখ না করলেই নয়।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘গত একদশকে দেশ থেকে নয় লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ফান্ড থেকে ৮১০ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে, দেশে এই মুহূর্তে খেলাপি ঋণের পরিমান প্রায় একলক্ষ কোটি টাকা, সরকারের প্রশ্রয়ে কয়েকটি ব্যাংকের মূলধন পর্যন্ত হজম করে ফেলা হয়েছে, শেয়ার বাজারের শত শত কোটি টাকা যারা লুট করেছে তারা ধরা ছোয়ার বাইরে।’

তারেক রহমান বলেন, ‘খোদ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় লুটেরা দল এভাবে দেশের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচার, লোপাট আর লুটপাট করার সুযোগ না পেলে জনগণকে হয়তো এখন অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটাতে হতোনা।’

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকার জন্য দুর্নীতি, ক্ষমতা রাখার জন্য দুর্নীতি, ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে দুর্নীতি, এভাবে প্রতি পদে পদে দুর্নীতির মাধ্যমে সরকার দৃশ্যতঃ দুর্নীতিকেই নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছে।’

তারেক রহমান আরো বলেন, ‘প্রতিবাদী জনগণের পেছনে র্যা ব-পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে … ক্ষমতাসীনরা এতদিন যে কোনো ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করতো কিন্তু বর্তমানে র্যা ব-পুলিশ দিয়ে করোনা ভাইরাস মোকাবেলা সম্ভব না হওয়ায় চলমান এই সংকটকালে প্রতিটি ক্ষেত্রেই ক্ষমতাসীনদের অযোগ্যতা আর ব্যর্থতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।’

তিনি বলেন, ‘সারাদেশে অসহায় ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষদেরকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান এবং ত্রাণের চাল ও খাদ্য সামগ্রী বিতরনের দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেয়ার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে আহবান জানানো হয়েছিল। অথচ সেনাবাহিনীকে না দিয়ে সে দায়িত্ব তুলে দেয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের হাতে। ফলে, গরিব মানুষের জন্যে দেয়া ত্রাণের চাল এখন পাওয়া যাচ্ছে আওয়ামী নেতাদের গুদামে, পুকুরে কিংবা খাটের নিচে।’

তারেক রহমান বলেন, ‘ত্রাণ চোর’ থেকে ‘চাল চোর’, সেই একই চক্র, একই দল, একই কাহিনী, একই বাহিনী।

করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি সম্পর্কে তারেক রহমান বলেন, ‘প্রতিটি দেশ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত বিশ্ব স্বীকৃত কোনো মেডিসিন আবিষ্কার হয়নি। এই অবস্থায় সকল দেশই করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে। প্রতিদিন বেশিসংখ্যক মানুষকে টেস্টের আওতায় এনে করোনা উপসর্গ থাকলে আগেভাগেই আইসোলেশনে নেয়া কিংবা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণকেই অন্যতম সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশে ঠিক উল্টো চিত্র।’

তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ নিজ উদ্যোগে করোনাভাইরাস পরীক্ষা এবং করোনা চিকিৎসা করাতে গিয়েও নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। অনেকেই বলছেন, বেশীসংখ্যক মানুষকে টেস্ট করলে বেশি রোগী শনাক্ত হওয়ার কারণেই হয়তো অধিক সংখ্যক মানুষকে টেস্টের আওতায় আনা হচ্ছেনা।’

তারেক রহমান বলেন, ‘এটা এখন সরকারকেই স্পষ্ট করতে হবে, তারা কি সক্ষমতা না থাকায় অধিকহারে করোনা টেস্ট করছেনা নাকি এর পেছনে সরকারের অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে।’

বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তারেক রহমান বলেন, ‘নানা অজুহাতে করোনা টেস্ট না করে কিংবা টেস্ট করতে গড়িমসি করে সরকার হয়তো করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এবং মৃতের সংখ্যা কম দেখিয়ে মেকি সাফল্য লাভ করতে চায়। কিন্তু এর পরিণতি হতে পারে হিতে বিপরীত।’

দেশ এবং জনগণের স্বার্থে সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘করোনাভাইরাস আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কম দেখিয়ে নিজেদের কাগুজে সাফল্য দেখানোর চেয়ে সরকারের জন্য বেশি জরুরী করোনাভাইরাস টেস্ট নিয়ে দেশে- বিদেশে বাংলাদেশের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন। কারণ, গ্লোবাল ভিলেজের এই সময়ে করোনা ভাইরাস টেস্টের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশ বিশ্বাসযোগ্যতা হারালে ভবিষ্যতে নাগরিকদেরকে অত্যন্ত চড়া মূল্য দিতে হতে পারে। নাগরিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দেশে যেমন ভয়ংকর অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নাগরিকদের বিদেশের শ্রম বাজারে থাকা না থাকার বিষয়টিও অনেকটাই নির্ভর করবে সরকার কিভাবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে তার ওপর।’

তারেক রহমান বলেন, ‘বিশ্বের প্রভাবশালী দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করে সরকার যতই নিজেদের সাফল্য জাহির করতে চায়। কিন্তু দলে দলে কূটনীতিকরা কেন ঢাকা ছাড়লো এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভেবে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের ৬৮ টি কারাগারে লক্ষাধিক মানুষ বন্দি। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুন বেশি বন্দির বসবাস হওয়ায় কারাগারগুলো করোনা ভাইরাসের হটস্পটে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ইতোমধ্যেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সিলেট কারাগারে একজন বন্দির মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন কারারক্ষীসহ আরও কয়েকজন। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও হানা দিয়েছে করোনা। এসব খবর উদ্বেগজনক।’

এই অবস্থায় তিনি সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, ‘দলীয় স্বার্থ কিংবা দোষারোপের রাজনীতি নয়.করোনা মোকাবেলায় দরকার সমন্বিত পদক্ষেপ। প্রয়োজন দেশে অগ্রাধিকারভিত্তিতে করোনা টেস্টের সক্ষমতা বাড়ানো।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশে বিদেশে বিএনপি তথা বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তির লক্ষ কোটি নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভার্থী-শুভাকাঙ্খী রয়েছেন। গত একযুগ ধরে সারাদেশে বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী ক্ষমতাসীন অপশক্তির গুম খুন অপহরণ জেল জুলুম মিথ্যা মামলা হামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। মিথ্যা মামলার খরচ বহন করতে করতে হাজার হাজার পরিবার অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে পড়েছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ধারাবাহিক সংগ্রামে অনেকেই হারিয়েছেন সহায়-সম্পদ। তবে বিএনপি নেতাকর্মীরা মনোবল হারাননি, নিজেরা নির্মম অমানবিকতার শিকার হয়েও মানবতা হারাননি।’

এর প্রমান তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘এই করোনা সঙ্কটকালে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীরা, বিশেষ করে আমার বিভিন্ন পর্যায়ের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সামর্থের সবটুকু নিয়ে অসহায় জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ নিজের শখের মোবাইল কিংবা মোটরসাইকেল বিক্রি করে অথবা স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখে সেই অর্থ দিয়েও অসহায় মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন।’

‘সতর্কতা-সহায়তা-মানবিকতা’ এই চেতনায় সারাদেশে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দেশে অসহায় মানুষের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীরা সাধ্যমতো ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছে। অব্যাহত রেখেছে ‘মানবিক সহায়তা’ কর্মসূচি।’

তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি দলীয়ভাবে মার্চ মাস থেকেই করোনাভাইরাস সম্পর্কে লিফলেট বিতরণ শুরু করেছিল। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকেও সারাদেশে দলীয় উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম মনিটর করার জন্য বিভাগ ও জেলাভিত্তিক কমিটি করে দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত বিএনপি’র বিভিন্নস্তরের নেতাকর্মীরা এক কোটিরও বেশি মানুষের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন।’

দলের নেতাকর্মীদের প্রশংসা করে তিনি আরও বলেন, ‘সারাদেশে অনেক অসহায় গরিব কৃষক বর্গা চাষিদের ক্ষেতের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে ছাত্র দল, যুবদল ও কৃষক দলের নেতাকর্মীরা। একইসঙ্গে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন, ডক্টরস এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ ড্যাবের মতো পেশাজীবী সংগঠনগুলোও হাসপাতালগুলোতে পিপিই, সার্জিকাল মাস্ক, তৈরী খাবার সরবরাহ, অনলাইন চিকিৎসা পরামর্শ দেয়া হাত ধোয়ার জন্য বিভিন্নস্থানে বেসিন স্থাপনসহ সম্ভব সবধরণের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। গত একযুগ ধরে ক্ষমতাসীন অপশক্তির রাজনৈতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক নিপীড়ণের শিকার হওয়ার পরও দেশের এই সংকটকালে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা যেভাবে সম্পূর্ণ নিজেদের আর্থিক সামর্থে নিজ উদ্যোগে সারাদেশে বিপদাপন্ন মানুষের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন এমন মানবতাবাদী নেতাকর্মীদের নিয়ে আজ আমি সত্যিই আনন্দিত,গর্বিত।’

তিনি বলেন, ‘করোনা উপসর্গ নিয়ে কিংবা করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে যখন কেউ ভয়ে দাফন পর্যন্ত করতে যেতে চাননা এমন অন্তিম যাত্রায়ও বিএনপির কোনো কোনো নেতাকর্মী সাহসের সঙ্গে দায়িত্ব নিয়ে মৃতের দাফন কার্য সমাধা করছেন। তিনি বলেন, করোনা উপসর্গ নিয়ে কিংবা করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে যখন কেউ ভয়ে দাফন পর্যন্ত করতে যেতে চাননা এমন অন্তিম যাত্রায়ও বিএনপির কোনো কোনো নেতাকর্মী সাহসের সঙ্গে দায়িত্ব নিয়ে মৃতের দাফন কার্য সমাধা করছেন।’

তারেক রহমান বলেন, ‘যে দলে এমন মানবিকবোধ সম্পন্ন নেতাকর্মী রয়েছে সেই দলটিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবেনা।’

অসহায় মানুষের সহযোগিতায় বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যেভাবে ভূমিকা রেখে চলছেন এ জন্য তারেক রহমান দল ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে তাদেরকে অভিনন্দন জানান। একইসঙ্গে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সাহসিকতার সঙ্গে সামনের কাতারে থেকে নেতৃত্ব দেয়ায় চিকিৎসক-নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদেরকেও আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান তারেক রহমান। তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে তাদেরকে হয়তো আরো কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তাদের এই সাহস ও ত্যাগ সারাবিশ্ব শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান।

জিএস/

বক্তব্যটি শুনতে ক্লিক করুন: