ঈদ যাত্রায় ডেঙ্গু আতঙ্ক

গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩২৬ জন হাসপাতালে ভর্তি

গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩২৬ জন হাসপাতালে ভর্তি

ডেঙ্গু পরিস্থিতি ঈদ যাত্রায় উদ্বেগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের উপর ভর করে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়তে পারে বিপদজনকভাবে এমন সতর্কতা আগেই দেয়া হয়েছিলো। এতোদিনেও এর প্রকোপ না কমায় এখন ঈদ যাত্রায় ডেঙ্গুর বিস্তার নিয়ে সারাদেশেই এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ২৩২৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ২৩২৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।

এর আগে সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বড় আকারে দেখা দিয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বেই এখন ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। ফিলিপাইনে ৬০০ জন মারা গেছেন ডেঙ্গুতে। অন্যান্য দেশেও লাখ লাখ লোক আক্রান্ত হচ্ছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সর্বশক্তি দিয়ে ডেঙ্গু মোকাবেলায় কাজ করছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা যে রিপোর্ট পাচ্ছি তাতে প্রতিদিন ১০০ জনের মতো রোগী বাড়ছে। প্রতিদিন যে সংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছে এর সমসংখ্যক রোগী ছুটিও পাচ্ছে। এমন অবস্থা তো হচ্ছে না, হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ছাড়া অন্য রোগী ভর্তি করা যাচ্ছে না। এভাবে যদি রোগী ভর্তি হয় আর ছুটি পায় তাহলে তো সমস্যা নেই। যারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন তাদের অর্ধেক রোগীকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দিতে পারতাম। কিন্তু মানুষের মধ্যে ভয় ধরে গেছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বেশি।

কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত ৩২ হাজার ৩৪০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ৩৮, ফেব্রুয়ারিতে ১৮, মার্চে ১৭, এপ্রিলে ৫৮, মে মাসে ১৯৩ জন, জুনে ১ হাজার ৮৮৪, জুলাইয়ে ১৬ হাজার ২৫৩ এবং আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ১৫ হাজার ৮৭৯ জন। এর মধ্যে চিকিৎসা শেষে ২৩ হাজার ৬১০ জন বাড়ি ফিরেছেন এবং ৮ হাজার ৭০৭ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সরকারি তথ্য বিবরণী
ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকা মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন শহর হতে ঘরমুখো মানুষের জন্য সরকারিভাবে ডেঙ্গু সম্পর্কে কিছু সতর্কতামূলক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ডেঙ্গু থেকে রেহাই পেতে সরকারি এক তথ্য বিবরণীতে এসব পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, ঈদে বাড়ি যাওয়ার সময় বাসার সকল কক্ষের দরজা-জানালা ভালোভাবে বন্ধ করার পাশাপাশি বাসার টয়লেটের কমোড ঢেকে রাখা, বাথরুম/টয়লেটের জানালা বন্ধ করা এবং বালতি, বদনা ও ড্রাম খালি অবস্থায় উল্টো করে রেখে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়,বারান্দায়/ছাদে ফুলের টব বা এমন কোন পাত্র রাখা যাবে না যেখানে বৃষ্টির পানি জমতে পারে। ফোসা, পর্দা ও ঝুলন্ত কাপড়ের নিচে লুকিয়ে থাকে এডিস মশা এ কথা উল্লেখ করে এসব জায়গায় অ্যারোসল স্প্রে করা এবং ফ্রিজের পানি জমার জায়গায় ন্যাপথলিন দিয়ে রাখারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সরকারি তথ্য বিবরণী বলা হয়, রান্নাঘরে কোথাও যেন পানি জমে না থাকে তা খেয়াল করে দেখা, যাওয়ার আগে ঘরের মেঝে, বারান্দা ও বাথরুম পরিষ্কার ও অ্যারোসল স্প্রে করা, অব্যবহৃত বোতল/ কন্টেইনারসহ অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে দেওয়া এবং অফিস, আঙ্গিনা এবং কর্মস্থলেও অনুরূপ ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।