চাকরির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান সেই মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের

চাকরির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান সেই মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের

অবহেলা ও ছেলেকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করার ঘটনায় অসিয়ত মোতাবেক রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই দাফন করা হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনকে।

এর একদিন পরই জেলা প্রশাসকের দেয়া চাকরির প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিয়েছে অভিমানী সেই মুক্তিযোদ্ধার পরিবার।

মুক্তিযোদ্ধার ছেলে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠ সম্মানটুকু না নিয়ে আমার বাবা বিদায় নিয়েছেন। এমন প্রশাসনের দেয়া চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই।

এদিকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধার দাফন হওয়ার ঘটনায় রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।

কমিটির প্রধান জানিয়েছেন, এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ সময় মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের ছেলে নুরুজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী নুর নেহার বেগম বলেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান চাই।

নুর নেহার বেগম জানান, ছেলেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, যার কারণেই স্বামীকে হারিয়েছেন তিনি। এ ঘটনার তদন্ত করে শাস্তি দাবি করেন তিনি।

জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম মরহুম সেই মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে যান। এ সময় তিনি মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী নুর নেহার বেগম ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি নুর ইসলামকে আশ্বাস দেন, চাকরি ফিরিয়ে দেয়া হবে এবং সরকারি যে বাড়িতে থাকত, সে বাড়িতেই থাকবে নুর ইসলাম ও তার পরিবার।

শনিবার সরেজমিন গিয়ে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের কাছে জানতে চাইলে চাকরিচ্যুত নুর ইসলাম ও তার বড় ভাই নুরুজ্জামানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা জানান, জেলা প্রশাসক এসেছিলেন। আমরা তাকে সম্মানের সঙ্গে কথা বলে বিদায় দিয়েছি। তিনি চাকরি ও বাড়ি ফেরত দেয়ার বিষয়ে বলেছেন। কিন্তু আমরা কোনো সিদ্ধান্ত দেইনি। তার সেই সিদ্ধান্ত আমরা পরে প্রত্যাখ্যান করছি।

আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপির সুপারিশে চাকরি হয়েছিল, আর জেলা প্রশাসক চাকরি খেয়েছেন।

মরহুম মুক্তিযোদ্ধার ছেলে নুরুজ্জামান বলেন, জেলা প্রশাসক আমার ভাইকে চাকরি দেয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু ওই চাকরি আমরা গ্রহণ করব না। কারণ ২ মাস পর আবার আমার ভাইকে চাকরিচ্যুত করা হতে পারে। তাছাড়া আমার বাবার প্রতি চরম অবহেলা করা হয়েছে। আমরা সরকারের প্রতিনিধি হুইপ ইকবালুর রহিমের দিকে চেয়ে আছি, তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই আমরা মেনে নেব।

আমার বাবা জীবদ্দশায় যার সাক্ষাৎ পাননি, মরণের পরেও যাদের কারণে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা গ্রহণ করেননি, তাদের আমরা ক্ষমা করার কে।