‌‘মিয়ানমারের বিরুদ্ধে পাবলিক ট্রায়াল শুরু’

‌‘মিয়ানমারের বিরুদ্ধে পাবলিক ট্রায়াল শুরু’

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে পাবলিক ট্রায়াল শুরু হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিদায়ী পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক। তিনি বলেন, ‘পাবলিক ট্রায়াল শুরু হয়ে গেছে। এখন এই সমস্যা তাদের (মিয়ানমারকে) দীর্ঘদিন ভোগাবে। আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতের শুনানিতে দুইশ’ বারের বেশি ‘মিয়ানমারে গণহত্যা’ শব্দটি উচ্চারিত হয়েছে এবং মানুষ সেটি শুনেছে।’

রবিবার রোহিঙ্গা সমস্যা এবং দায়বদ্ধতা বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক এসব কথা বলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালত এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে একইসঙ্গে একই বিষয় নিয়ে মামলা চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাশাপাশি আজেন্টিনাতেও মামলা চলছে, যা সামগ্রিক বিচারিক প্রক্রিয়াকে দৃঢ় করবে।রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন তদন্তে জাতিসংঘের উদ্যোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইনভেসটিগেশন মেকানিজম কাজ শুরু করেছে। ১৩৪টি দেশ এটি শুধু সমর্থনই করেনি, এর সঙ্গে এটি কার্যকর করার জন্য অর্থ সরবরাহের বিষয়েও একমত হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে অনেকে বলে থাকে- আমি তোমার সঙ্গে আছি, কিন্তু যখন অর্থ দেয় তখন বোঝা যায় প্রতিশ্রুতি কতটুকু শক্তিশালী। রোহিঙ্গা সঙ্কট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যকার বিবাদ নয়, বরং এটি মিয়ানমার এবং তাদের অধিবাসীদের মধ্যে সমস্যা। এই সমস্যা অনেক আগে সমাধান হওয়া উচিত ছিল কিন্তু তারা এটি করেনি।’

বাংলাদেশের প্রস্তুতি: এদিকে ২০১৩ সালে রোহিঙ্গা বিষয়ে কাজ করার জন্য কেবিনেটের অনুমোদন নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব। বলেন, ২০১৩ সালে আমরা রোহিঙ্গা ইস্যুটি নিয়ে কেবিনেটে যাই। কেবিনেটের কাছে আমরা তিনটি প্রস্তাব চাই।

প্রথমটি হচ্ছে- ওই সময়ে বাংলাদেশে কতজন রোহিঙ্গা রয়েছে তার একটি শুমারি, দ্বিতীয়টি হচ্ছে- রোহিঙ্গা সম্পর্কিত কার্যকলাপে সমন্বয়কারী কমিটি গঠন যা পরবর্তীতে জাতীয় টাস্কফোর্স নামে পরিচিত পায় এবং তৃতীয় হচ্ছে- কূটনৈতিক প্রয়াস বাড়ানো, যাতে করে রাখাইনে কী হচ্ছে সেটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জানতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা ভাগ্যবান যে, ওই সময়ে মিয়ানমারে দায়িত্বরত আমাদের দেশের রাষ্ট্রদূত সুফিয়ুর রহমান মিয়ানমারের উদ্দেশ্য ধরতে পেরেছিলেন এবং আমাদের রিপোর্ট পাঠিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে তার পাঠানো একটি রিপোর্ট আমি সবসময় কাছে রাখি, যেখানে তিনি বলেছিলেন- মিয়ানমার রাখাইনে বড় আকারের কিছু করতে যাচ্ছে এবং রোহিঙ্গা সমস্যা বৈশ্বিক রূপ নিতে যাচ্ছে। জেনে আশ্চর্য হবেন, উনি সেই সময়ে বলেছিলেন- সম্ভবত দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ যথেষ্ঠ হবে না এবং বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক ফেরামের কাছে নিতে হবে।