মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় দুই শিশুকে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার সেনগাঁও ইউনিয়নের দেওধা গ্রামে ঘটেছে এমন ঘটনা। এ ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় শিশু নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, নির্যাতিত শিশু সুমনের মা সরিফা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, থানায় এজাহার করার সাতদিন গত হলেও দোষীরা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
সরিফা জানান, তার স্বামীর বড় ভাই মোতালেব আলী তাকে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে তিনি রাজী হননি। শেষে তাকে ঘায়েল করতে ১১-১২ বছর বয়সী ছেলে সুমন ও চাচাতো দেবরের ছেলে কামরুল ইসলামকে গত ২২ মে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে আটক করে গ্রামে শালিস বৈঠক আয়োজন করে।
তিনি আরো বলেন, ‘এলাকার ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম নেতৃত্বে মোতালেব আলীসহ আরও কয়েকজন আমার ছেলে ও কামরুলের হাত-পা বেধেঁ লাঠি দিয়ে বেদম মারপিট করে। এতে ওই দুই শিশু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’
নির্যাতনের সেই চিত্র ক্যামেরায় ধারণ করে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে নির্যাতনকারীরা। কিন্তু দাবি পূরণে ব্যর্থ হলে টাকার বদলে বাড়ি থেকে একটি গরু নিয়ে যায় তারা। এ ঘটনায় গত শুক্রবার (৫ জুন) পীরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন বলে জানান সরিফা খাতুন।
জানতে চাইলে ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আব্দুল লতিফ নামে এক ব্যক্তির একটি মোবাইল ফোন চুরি করে দুষ্ট প্রকৃতির ওই দুই শিশু। এর আগে তারা নানা রকম অপরাধ করে। পারিবারিকভাবে তাদের শাসন করা হচ্ছিল। তা ছাড়া যার মোবাইল ফোন চুরি হয় তিনি তাদের ক্ষুব্ধ হয়ে মারপিট করেন, আমি না। সরিফা আমার ও মোতালেবসহ একই পরিবারের ৬ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করেছে।’
এ বিষয়ে পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় বলেন, শিশুদের নির্যাতন করাটা অন্যায় হয়েছে। মামলার আসামিরা কেউ এলাকায় নেই, তাদেরকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।