আতঙ্কে তিস্তাপাড়ের মানুষ, ভাঙনে বাড়িঘর বিলীন

আতঙ্কে তিস্তাপাড়ের মানুষ, ভাঙনে বাড়িঘর বিলীন

গত কয়েক দিনের টানা ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে করে কুড়িগ্রামে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত দুদিনে জেলার রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের দুটি গ্রামের ১৫-২০টি বাড়িঘরসহ আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নিরুপায় হয়ে নদী তীরবর্তী মানুষ তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।

তিস্তা নদীর পানি পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলসহ অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে আবাাদি জমিও তলিয়ে গেছে। ভাঙনের তীব্রতায় নদী তীরবর্তী মানুষের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তিস্তার পানির প্রবল স্রোতে বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুরা ও পাড়ামলা এলাকায় তিস্তা নদীর তীর প্রচণ্ড ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে চরম আতঙ্ক ও দুর্ভোগে দিন কাটছে নদী তীরবর্তী মানুষের।

ইতোমধ্যে নদী তীরবর্তী আহাম্মদ আলী (৬০), আয়নাল হক (৩৮), আঞ্জুয়ারা বেগম (৪৮), হবিবর রহমান (৬৫), মতিয়ার রহমান (৫৫), আলমগীর হাসান (৩২), নিশিকান্ত (৪৭), উকিল মাহমুদ (৪৫), তরনিকান্ত (৫৫), ইয়াকুব আলী (৬০), নুরজাহান বেওয়া (৬০), মনসাধু ৬৫), দুলাল হাসানসহ প্রায় ১৫-২০ জনের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও প্রায় ১০-১২ বিঘা আবাদি জমিও বিলীন হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

হুমকির মুখে রয়েছে ওই এলাকার কালিরহাট বাজারসহ কালিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ ও অসংখ্য ঘরবাড়ি। ভাঙনরোধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এলাকাটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

এলাকাবাসীর অভিযাগ, নির্বাচনের সময় এমপিরা নদী খনন এবং ভাঙন রোধে অনেক প্রতিশ্রুতি দিলেও সময়মতো তাদের দেখা যায় না। গত বছর কিছু জিও ব্যাগ ফেললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

এ ব্যাপারে বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাইজুল ইসলাম বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকার ভিটেমাটি হারাদের তালিকা করা হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যোবায়ের হোসেন খবর পেয়ে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের আশ্বাস দিয়েছেন

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, এ সময় পানি বৃদ্ধি, বন্যা ও ভাঙন দেখা দেয়। জরুরি ভিত্ততে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এমজে/