ভারতীয় মিডিয়ায় ‘খয়রাতি’ শব্দের ব্যবহার ছোট মানসিকতার পরিচয়: আব্দুল মোমেন

ভারতীয় মিডিয়ায় ‘খয়রাতি’ শব্দের ব্যবহার ছোট মানসিকতার পরিচয়: আব্দুল মোমেন ড. এ কে আব্দুল মোমেন

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, চীন আমাদের প্রায় আট হাজার পণ্য ৯৭ শতাংশ বিনা শুল্কে রপ্তানির সুযোগ দিয়েছে। চীনের দেওয়া এমন সুবিধাকে আনন্দবাজারসহ ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘খয়রাতি’ উল্লেখ করে খবর প্রকাশ করা মোটেও সমীচীন হয়নি। মিডিয়ার এই শব্দটি ব্যবহার ছোট মানসিকতার পরিচয়।

সোমবার গণমাধ্যমকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।

গত ১৯ জুন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, চীনের বাজারে আরো পাঁচ হাজার ১৬১টি পণ্যের শুল্কমুক্ত রফতানি সুবিধা পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে দেশটিতে মোট শুল্কমুক্ত পণ্যের সংখ্যা দাঁড়াল আট হাজার ২৫৬টি। এর ফলে চীনে বাংলাদেশের মোট রফতানি পণ্যের ৯৭ শতাংশই শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় এলো।

সম্প্রতি লাদাখ সীমান্তে চীনের সঙ্গে সংঘর্ষে ভারতের ২০ জন সেনা নিহত ও ৭৬ জন আহত হয়েছে। এ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই চীনের তরফ থেকে বাংলাদেশের জন্য এই বাণিজ্য সুবিধা দেয়ার খবর প্রকাশিত হয়। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের হলেও ভারতীয় মিডিয়া মনে করছে, নয়াদিল্লির সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে ঢাকাকে বাগে রাখার ‘টোপ’ এটি বেইজিংয়ের। আনন্দবাজার পত্রিকা এবং জি নিউজের বাংলা সংস্করণ ‘২৪ ঘণ্টা’র খবরে বিষয়টিকে ‘খয়রাতি’ বলেও আখ্যা দেয়া হয়েছে।

এই ‘খয়রাতি’ শব্দটিই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যখন তুমুল আলোচনা চলছে তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘ভারত সরকার এ বিষয়ে এখনো কিছু বলেনি। দেশটির কয়েকটি পত্রিকা আপত্তিকর ভাষায় মন্তব্য করেছে। তারা এমন শব্দ ব্যবহার করেছে যা কোনোভাবেই ব্যবহার করা উচিত নয়।’

তিনি বলেন, ভারতীয় কয়েকটি পত্রিকার প্রতিবেদন আমাদের নজরে এসেছে। চীনের দেওয়া সুবিধা সম্পর্কে যে শব্দের ব্যবহার তারা করেছে তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। তবে এর বিরুদ্ধে আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে চাই না। চীন যে সুবিধা দিয়েছে তা আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের দীর্ঘদিনের ফসল। অনেক আগেই আমরা এই সুবিধা চীনের কাছে চেয়ে আসছিলাম। এমনকি প্রতিবেশী ভারতের কাছেও এ ধরনের সুবিধা চেয়েছি। চীন খুবই উপযুক্ত সময়ে অন্য এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশকে এই সুবিধা দিয়েছে।

উল্লেখ্য, এশিয়া প্যাসিফিক ট্রেড এগ্রিমেন্টে চিনে ৩০৯৫টি বাংলাদেশ পণ্য শুল্কমুক্ত। এবার নতুন করে ছাড় দেওয়ায় চীনে শুল্কহীন হল ৮২৫৬টি বাংলাদেশি পণ্য। চীন সরকার জানিয়েছে, স্বল্পোন্নত দেশের আর্থিক উন্নয়নে সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তবে শুল্ক ছাড় ছাড়াও বাংলাদেশে বিনিয়োগও বাড়িয়েছে চীন।

মাসখানেক আগে কোভিড-১৯ নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আলোচনার কথাও এক প্রকার আফসোসের সুরে প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যমটি।