৫ মাসে ৩২০ বিলিয়ন ডলার লোকসানে বৈশ্বিক পর্যটন: জাতিসংঘ

৫ মাসে ৩২০ বিলিয়ন ডলার লোকসানে বৈশ্বিক পর্যটন: জাতিসংঘ

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারিতে ব্যাপক লোকসানের শিকার হয়েছে বৈশ্বিক পর্যটন শিল্প। মহামারির পাঁচ মাসে ৩২ হাজার কোটি ডলার হারিয়েছে বৈশ্বিক অর্থনীতির তৃতীয় বৃহত্তম রফতানি খাত।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরা এমনটা জানিয়েছেন। এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে তিনি বলেন, জ্বালানি ও রাসায়নিক পদার্থের পর বৈশ্বিক অর্থনীতির সবচেয়ে বড় খাত হচ্ছে পর্যটন শিল্প। ২০১৯ সালে বৈশ্বিক বাণিজ্যের ৭ শতাংশই এসেছে এ খাত থেকে।

গুতেরা বলেন, পৃথিবীর প্রতি ১০টি চাকরির একটি আসে পর্যটন খাত থেকে। বিশ্বজুড়ে কোটি মানুষের জীবিকা এর ওপর নির্ভরশীল। অর্থনীতি বৃদ্ধির পাশাপাশি এটি মানুষকে বিশ্বের সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ দেখার সুযোগ করে দেয়। মানুষকে পরস্পরের কাছে নিয়ে আসে। আমাদের অভিন্ন মানবতাকে ফুটিয়ে তোলে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ২০২০ সালের প্রথম পাঁচ মাসে করোনা মহামারির কারণে, আন্তর্জাতিক পর্যটন অর্ধেকের বেশি কমে গেছে। এটা উন্নত দেশগুলোর জন্য ‘বড় ধরণের আঘাত’, কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এটি জরুরি অবস্থা তৈরি করেছে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর বহু ছোট দ্বীপ ও আফ্রিকান দেশগুলোর জন্য এটি জরুরি অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু দেশের মূল জিডিপির ২০ শতাংশেরও পর্যটন নির্ভরশীল।

জাতিসংঘের বৈশ্বিক পর্যটন সংস্থার বাজার বুদ্ধিমত্তা ও প্রতিযোগিতা বিষয়ক প্রধান সান্দ্রা কারভাও বলেন, জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত পর্যটন শিল্প ৩২ হাজার কোটি ডলার হারিয়েছে। ২০০৯ সালের আর্থিক মন্দার সময়ের তুলনায় এটি তিন গুণ বেশি।

জাতিসংঘের নীতিমালা ব্রিফিং অনুসারে, বৈশ্বিক পর্যটন শিল্পের রফতানি রাজস্ব চলতি বছর ৯১ হাজার কোটি ডলার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি ডলার কমার আশঙ্কা রয়েছে। তেমনটা হলে বৈশ্বিক জিডিপি ১.৫ শতাংশ থেকে ২.৮ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে।

পর্যটন শিল্পে লোকসান কেবল এই খাতের ওপরই প্রভাব ফেলবে না এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট খাতগুলোকেও প্রভাবিত করবে। বিশ্বজুড়ে ১৪ কোটি ৪০ লাখ মানুষ কাজ হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে। এমতাবস্থায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে ছোট আকারের ব্যবসাগুলো।

গুতেরা বলেন, পর্যটন বিশ্বজুড়ে প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণেও মুখ্য ভূমিকা রাখে। বিশ্বজুড়ে ৭ শতাংশ পর্যটনই বন্যপ্রাণী সংশ্লিষ্ট। এ খাতে লোকসান বন্যপ্রাণী শিকার ও প্রাণীদের বাসস্থান ধ্বংস বাড়িয়ে দিয়েছে।