আ’লীগ লুটেরা লীগে পরিণত হয়েছে: রিজভী আহমেদ

আ’লীগ লুটেরা লীগে পরিণত হয়েছে: রিজভী আহমেদ

আওয়ামী লীগ লুটেরা লীগে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

রবিবার দুপুরে এক অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর স্মরণে মাদ্রাসার এতিম শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা প্রদানে এই অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানটি বাড্ডার একটি মাদ্রাসায় হওয়ার কথা থাকলেও পুলিশের বাঁধার কারণে এটি নয়া পল্টনের কার্যালয়ে হয়।

রিজভী আহমেদ বলেন, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি এতো করুন অবস্থা, দেশের সার্বভৌমত্ব এতো দূর্বল যে আপনার প্রায় দুইদিন-তিন দিন পর বর্ডারে মানুষকে মারছে, মানুষ হত্যা করছে, দেশের মানুষ রক্তাক্ত হচ্ছে। পৃথিবীর মধ্যে সবচাইতে রক্তাক্ত সীমান্ত অঞ্চল হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের এই সীমান্ত। আপনি এতো নতজানু সরকার যে একটা প্রতিবাদও করতে পারছেন না এটার জন্য।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে চাপাইনবাবগঞ্জের বর্ডারে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে, সুনামগঞ্জের বর্ডারে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে, লারমনিরহাটের বর্ডারে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে, না হলে মেরে ফেলা হচ্ছে। আপনার (সরকার) পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক থাকলে সীমান্তে মানুষ মারা যায় কিভাবে? অর্থাৎ এই কথাটার মধ্যে আপনাদের যে আনুগত্য কত হেয় টাইপের এটা অত্যন্ত সুস্পষ্ট।

বিএনপি সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে বিশ্বাসী উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির নীতি হচ্ছে, পার্শ্ববর্তী দেশ, দূরবর্তী দেশ সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। কিন্তু নিজের স্বার্থকে ক্ষুন্ন করে নয়। শেখ হাসিনা নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য নিজের দেশের স্বার্থকেও তিনি বিসর্জন দিচ্ছেন। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক।

সরকারের কঠোর সমালোচনা করে রিজভী আহমেদ বলেন, এই ক্যাসিনো কান্ড, এই সমস্ত ভয়ংকর যারা লুটপাট করেছে সরকারি টাকা, সেই সরকারি টাকা লুটপাটকারীদের আমরা দেখেছি। কিন্তু এদের কাছ থেকে বখরা পেয়েছে যেই সমস্ত নেতারা, সেই সমস্ত গডফাদারদেরকে তো স্পর্শও করতে পারেনি দুদক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই যে জিকে শামীমের কথা বলা হয়- ৬ হাজার কোটি টাকার সে কাজ নিয়েছে। পিডাব্লিউডির ঠিকাদারিতে সে কাউকে কাজ নিতে দিতো না। সেই জিকে শামীমের জামিন হয়ে যায় গোপনে। কি ভয়ংকর অবস্থা চিন্তা করে দেখুন। যে ব্যক্তিটি রুপপুর প্রকল্পে ৭ হাজার টাকা দিয়ে বালিস কিনেছে এবং সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা দিয়ে পর্দা কিনেছে। সেই প্রকল্পের আবাসিক ভবনগুলো অভ্যন্তরীন সাজ-সজ্জার জন্য ১৬৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। তার যে ঠিকাদার শাহাদাত সে কিন্তু জামিন পেয়ে গেছে। তাহলে বলুন আমরা কোন শাসনের অধীনে আছি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের একদিকে জামিন বাতিল করে কারাগারে নিচ্ছে। অন্যদিকে দুর্নীতিবাজ ক্ষমতাসীন দলের লোকজন জামিন পাচ্ছে। এক দেশে আইনের দুইরকম প্রয়োগ হচ্ছে। আইন, বিচার, প্রশাসন, আইনি প্রক্রিয়া- সব কিছু সরকার প্রধানের নির্দেশে হয়। সব কিছু তার কথায় হয়। অর্থাৎ সে যাকে পছন্দ করে না তাকে জেলে যেতে হবে, তাকে মামলায় পড়তে হবে, সে নিরুদ্দেশ হবে, সে গুম হবে। আর যে তার প্রিয় লোকজন সে শত শত কোটি টাকা দুর্নীতি করুক, পর্দাকান্ড, বালিশকান্ড হোক-তাদের সাত খুন মাফ, সব কিছু মাফ। আজকে লুটেরা লীগে পরিণত হয়েছে আওয়ামী লীগ। এটা আজকে বাস্তবতা। প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললে তার প্রমাণ দেখবেন।