রিমান্ডে থাকা নারী আসামিকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ

রিমান্ডে থাকা নারী আসামিকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ

রিমান্ডে থাকা এক নারী আসামিকে যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বরিশালের উজিরপুর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে, তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করছে পুলিশ। কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও থানা, আদালত ও আইনজীবীর চেম্বারে ছুটে বেড়াচ্ছেন বরিশালের উজিরপুরের মিনতি বিশ্বাস মিতুর স্বজনরা। তাদের অভিযোগ, মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে মিতুকে রিমান্ডের নামে যৌন ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে।

মিতুর ভাই উত্তম অধিকারী বলেন, 'উজিরপুর থানার পুলিশ আমার বোনকে মিথ্যে মামলা দিয়ে দুইদিন রিমান্ডে নিয়ে যৌন নির্যাতন করেছে। আমি এর তদন্ত চাই ও বিচার চাই। হুমকি দিচ্ছে অন্য কোথাও পেলে মেরে ফেলবে।'

গত ২৬ জুন উজিরপুর উপজেলার জামবাড়ি থেকে বাসুদেব চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওইদিনই মিতুকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৩০ জুন মিতুকে দুইদিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। রিমান্ড শেষে ২ জুলাই (শুক্রবার) মিতুকে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখে এর কারণ জানতে চান বিচারক। এসময় পুলিশের বিরুদ্ধে যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করেন মিতু। তাৎক্ষণিক এক নারী কনস্টেবল দিয়ে তার পরীক্ষা করালে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায় আদালত। পরে মিতুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।

মিতুর আইনজীবী মজিবর রহমান বলেন, 'অমানবিক ঘটনা এটি। এর বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাই। কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদালতকে নিবেদন করছি।'

এ ঘটনার অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন, মিতুর স্বজন, আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীরা। বরিশাল মানবাধিকার জোটের যুগ্ম সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, 'এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। সেই সাথে এ ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে।'

তবে, তাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করছেন উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান। তিনি বলেন, 'রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামি মিতু আদালতে যা বলেছেন তা সঠিক নয়। সে অনেক কিছু অতিরিক্ত ও অতিরঞ্জিত করে বলে নিজের ধুরন্দরতা প্রকাশ করেছে।'

এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজাহান। তিনি বলেন, 'নিঃসন্দেহে আমরা তদন্ত করে দেখবো। এরপর আমরা ব্যবস্থা নেবো।'

এমজে/