হরতালে রাজধানীতে যান চলাচল স্বাভাবিক

হরতালে রাজধানীতে যান চলাচল স্বাভাবিক

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ডাকা বাম গণতান্ত্রিক জোটের হরতালে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। সোমবার (২৮ মার্চ) সকালে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে নির্দিষ্ট কিছু এলাকা ছাড়া প্রায় সবখানেই এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে স্বাভাবিক দিনের চেয়ে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা তুলনামূলক কিছুটা কম দেখা গেছে।

হরতালের দিনে রাজধানীর নয়া পল্টন, শাহবাগসহ কয়েকটি এলাকায় বামজোটের শরিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। পল্টন এলাকায় সকাল ৬টার দিকে হরতালে সমর্থনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের শরিক দল সিপিবি, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির নেতাকর্মীরা পল্টন মোড়ে মিছিল বের করেন। মিছিলটি মতিঝিল, গুলিস্তান, বিজয়নগর ঘুরে আবার পল্টন মোড়ে অবস্থান নেয়। এছাড়া পল্টন মোড়ে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় হরতাল সমর্থকেরা। গাড়ি না পেয়ে অনেককেই হেঁটে গন্তব্যে রওনা দিতে দেখা যায়।

সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে টিএসসি থেকে মিছিল বের করে প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীরা। শাহবাগ মোড়ে পৌঁছে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করে। প্রগতিশীল ছাত্রজোট মিছিল নিয়ে শাহবাগ হয়ে কাঁটাবন ঘুরে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নেয়। এখন পর্যন্ত কোনও ধরনের পিকেটিং বা সহিংসতা লক্ষ্য করা যায়নি।

তবে রাজধানীর সায়েদাবাদ, খিলগাঁও, মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, বাংলামোটর, নীলক্ষেত, এলিফ্যান্ট রোড, ধানমন্ডি, শুক্রাবাদ, শ্যামলী, কল্যাণপুর ও গাবতলী এলাকা ঘুরে হরতালের কোনও প্রভাব চোখে পড়েনি। এসব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ৬টা থেকে যান চলাচল কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়কে যান চলাচল বাড়তে থাকে। তবে কোথাও কোথাও অন্যান্য দিনের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা কিছুটা কম দেখা গেছে।

নাশকতা ঠেকাতে রাজধানীর প্রতিটি মোড়ে মোড়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান দেখা গেছে।

হরতালে ঢাকা, শহরতলি ও আন্তজেলা রুটে বাস-মিনিবাস চলাচল করবে বলে আগেই জানিয়েছেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ। গত শনিবার (২৬ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ তথ্য জানান। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাম গণতান্ত্রিক ঐক্যজোটের ডাকা ২৮ মার্চের হরতালের ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য ঢাকাস্থ পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের এক যৌথ সভা ডাকা হয়। ওই সভা শনিবার বিকালে ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় পরিবহন নেতারা বলেন, ‘অযৌক্তিক অজুহাতে ডাকা এই হরতাল মালিক-শ্রমিকরা সমর্থন করে না। ২৮ মার্চ ঢাকা শহর, শহরতলি এবং আন্তজেলার সব রুটে বাস-মিনিবাস চলাচল অব্যাহত থাকবে। গাড়ি চলাচলে যাতে কোনও বাধার মুখে পড়তে না হয় সেজন্য শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান তারা।

এদিকে হরতালে জনগণ সঙ্গে রয়েছে দাবি করে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, আমরা পল্টনে এ সব বাধা উপেক্ষা করে এখন পর্যন্ত অবস্থান করছি। পল্টনসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হচ্ছে। জনগণ হরতালের প্রতি যে গণ রায় দিয়েছে তাই প্রমাণিত হল। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নেমে হরতালের সমর্থন দিয়েছে। আমরা মনে করি ইতোমধ্যে হরতাল জনগণের হরতালে পরিণত হয়েছে। হরতালের প্রতি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ গণ রায় ঘোষণা করেছে। আমাদের হরতাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে চলবে।

প্রসঙ্গত, এরআগে ২০১৯ সালের ৭ জুলাই গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে হরতাল ডেকেছিলো বাম গণতান্ত্রিক জোট। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে কোনও হরতাল ডাকা হয়নি। দুই বছর পর আবারও বামদলগুলোর ডাকে হরতাল পালিত হচ্ছে সোমবার।