বাম্পার ফলনেও হতাশ পেঁয়াজ চাষিরা

বাম্পার ফলনেও হতাশ পেঁয়াজ চাষিরা

পেঁয়াজের রাজধানী খ্যাত পাবনায় বাজারে উঠতে শুরু করেছে মৌসুমি নতুন পেঁয়াজ। জেলার সুজানগর ও সাঁথিয়া উপজেলা ঘিরে গাজনার বিলে দেশের সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। এবারো বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশের চাহিদার চার ভাগের এক ভাগ জোগান আসে এখান থেকেই। কিন্তু বাজারে যে দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে তাতে ন্যায্যমূল্য তো দূরে থাক, উৎপাদন খরচই উঠছে না। উৎপাদন ভালো হলেও বাজার দর বৃদ্ধি না পেলে পেঁয়াজ চাষিদের বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পাবনার সুজানগর, আতাইকুলা, বনগ্রাম হাটে নতুন পেঁয়াজের ছড়াছড়ি। পাইকার ব্যাপারীদের হাঁকডাকে সরগরম বাজার। আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় হতাশ চাষিরা। তারা জানান, গত একসপ্তাহ ধরে মৌসুমি চারা পেঁয়াজ পুরোদমে বাজারে আসতে শুরু করেছে। গুণগত মানে সবচেয়ে ভালো পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি করা হচ্ছে মণপ্রতি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। এতে উৎপাদন খরচও উঠছে না তাদের।

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ছয় লাখ ৩৫ হাজার ৫১৩ হেক্টর জমিতে চারা পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। গত কয়েক বছর ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা পেঁয়াজ আবাদে যতœবান হয়েছেন। গত বছর শুধু সুজানগরেই ১৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে চারা পেঁয়াজের আবাদ হলেও এবারে এ উপজেলায় পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে। অনুকূল আবহাওয়া ও সঠিক সময়ে সার বীজ দিতে পারায় কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল চারা প্রতি বিঘায় ৮০ থেকে ৯০ মণ এবং হাইব্রিড জাতের চারা থেকে প্রতি বিঘায় ১০০-১২০ মণ পর্যন্ত পেঁয়াজ ঘরে তুলতে পারছেন।

কৃষকরা জানান, এবার প্রতি কেজি পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ হয়েছে ২৬ থেকে ২৯ টাকা। অথচ বাজারে ২০ থেকে ২২ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রতি মণ পেঁয়াজ প্রকারভেদে ৮০০-৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রতি মণে ৩০০-৪০০ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। উত্তরাঞ্চল দেশের পেঁয়াজের ভাণ্ডার বলে পরিচিত এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী উপজেলা সুজানগর।

এদিকে পাবনার সুজানগর উপজেলায় বাম্পার উৎপাদন হলেও এ পেঁয়াজ সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই কৃষকরা পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় ছয় লাখ ৩৫ হাজার ৫১৩ হেক্টর জমিতে চারা পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। মাঠের পরিস্থিতি বলছে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও উৎপাদন বেশি হবে। পেঁয়াজ বেশি উৎপাদন হলে দাম কমে যায়। ধৈর্য্য ধরলে তারা ন্যায্য দাম পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।