সরকার বিরোধী মন্তব্যের অভিযোগে ঢাবি শিক্ষার্থীকে পুলিশে সোপর্দ

সরকার বিরোধী মন্তব্যের অভিযোগে ঢাবি শিক্ষার্থীকে পুলিশে সোপর্দ

বিভাগের মেসেঞ্জার গ্রুপে আওয়ামী লীগের সমালোচনা করার ‘অপরাধে’ এক শিক্ষার্থীকে গতরাতে পুলিশে সোপর্দ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন। গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ওই শিক্ষার্থীকে পুলিশে দেন তিনি। তবে তাকে আজ শুক্রবার সকালে ছেড়ে দেয়া হয়।

সমালোচনা করা সেই শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের (১৪ তম ব্যাচ) অধ্যায়নরত। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রয়োজনীয় একাডেমিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য আলাদা মেসেঞ্জার গ্রুপ তৈরি করেন। গ্রুপের নামটি তাদের ব্যাচের নাম অনুসারে হয়। তেমনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের গ্রুপটির নাম ‘চৌদ্দশিখা’ । ওই গ্রুপে নানা সময় সহপাঠীদের মধ্যে সমসাময়িক বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।

গতকাল রাতে ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে চলতি মাসের ১৭ই আগস্ট ছাত্রলীগের সমাবেশ ও মিছিলের ফলে রাস্তায় যানজটে পথচারীদের ভোগান্তি, ছাত্রলীগের ঘন ঘন কর্মসূচিতে হলের শিক্ষার্থীদের জোর করে নিয়ে যাওয়া এসব বিষয়ে আলোচনা চলছিল। তর্ক হচ্ছিল সেই হামলায় বিএনপি সরকারের দায় কতটা তা নিয়েও।

আলোচনার এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিখেন, বিএনপি আমলে জঙ্গি হামলার জন্য বিএনপি দায়ী হলে বর্তমান সরকারের আমলে সকল জঙ্গী হামলার জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ। তার এই মন্তব্যটি প্রাইভেট গ্রুপ থেকে লিক হয়ে হল ছাত্রলীগের কাছে চলে যায়। হল ছাত্রলীগ বিষয়টি হল প্রভোস্টের নজরে আনেন।

পরে হল প্রভোস্ট তাকে প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহাবাগ থানায় হস্তান্তর করে।

এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন গতকাল রাতে সেখানে উপস্থিত একাধিক গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, হল প্রশাসনের কাছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ছাত্রের কর্মকান্ড ‘রাষ্ট্রবিরোধী ও জঙ্গি সংশ্লিষ্ট’ বলে প্রতীয়মান হয়েছে, তাই শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হয়। এখন পুলিশ তদন্ত করে বাকি ব্যবস্থা নেবে।

এ বিষয়ে রাতে শাহবাগ থানায় ডিউটিরত সাব ইন্সপেক্টর টিপু সুলতানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আমরা তার এলাকায় খোঁজ খবর নিচ্ছি। তার কোন ধরনের রাজনৈতিক সম্পর্ক সম্পৃক্ততা ছিল কিনা তা জানার চেষ্টা করছি। তিনি জানান, তার ব্যাপারে কাল (আজ) সকালে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে থানার ওসি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

পরে আজ নানা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ সময় থানায় তার বিভাগের শিক্ষক ও সহপাঠীরা উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ওসি মওদুদ হাওলাদার জানান, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে কোর্টে চালান দেয়ার মত পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ না থাকায় আপাতত বিভাগীয় শিক্ষকের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।