ঐতিহাসিক নূর হোসেন দিবস আজ

ঐতিহাসিক নূর হোসেন দিবস আজ

আজ ঐতিহাসিক নূর হোসেন দিবস। বুকে স্বৈরাচার নিপাত যাক আর পিঠে গণতন্ত্র মুক্তি পাক। শরীরজুড়ে দ্রোহের শ্লোগান খচিত সেই মানুষটি স্বৈরাচার বিরোধী মিছিলে শহীদ হন পুলিশের গুলিতে। ঐতিহাসিক সেই ছবি তুলেছেন দিনু আলম। ৩৫ বছর পর তিনি দিয়ে গেলেন সেই সময়ের ৩৫টি ছবি।

রক্ত মাংসের শরীরকে অবাক করা পোস্টার বানিয়ে রাজপথে নেমে এসেছিলেন এক সাহসী যুবক। উদ্যত রাইফেলের বুলেট উদাম গায়ে এঁকে দিয়েছিল মৃত্যুর পরোয়ানা।

বুকে-পিঠে লেখা সাদা রঙের সেই স্লোগান আজ ইতিহাস, যার গায়ে লেখা, সেই নূর হোসেন আজ ইতিহাস। অথচ শহীদ নূর হোসেন অচেনাই রয়ে যেত, যদি না এই আলোকচিত্রীর ক্যামেরা সেই মুহূর্তটাকে ক্যাপচার করতো।

আলোকচিত্রী দিনু আলম বলেন, দেখে মনে হচ্ছিল জ্বলন্ত পোস্টার হেঁটে যাচ্ছে। বললাম ভাই একটু দাঁড়ান ছবি তুলি। আমার মনে আছে, ছবির ওই পোচটা দিয়ে বলেন, দাঁড়াইয়া গেলাম ভাই, লইয়া লন।

৩৫ বছর পর ৩৫টি ছবি নিয়ে দিনু আলম ফিরেছেন দেশে। ফিরেছেন সেদিনের ইয়াসিকা ক্যামেরাটি সঙ্গে নিয়ে। এনেছেন ছবির নেগেটিভ রোল এবং সেসময় প্রিন্ট করা ছবিও। সংগ্রহে রেখেছেন তার তোলা ছবি দিয়ে প্রকাশিত স্বারক ডাকটিকিটও।

দিনু আলম বলেন, ৩৫ বছর পর ৩৫টি ছবির একটি লম্বা ফিল্ম। কি একটা কোয়েন্সিডেন্স।

কানাডার টরেন্টো থেকে এতোবছর বাদে আসবার উদ্দেশ্য একটাই, যে ছবিটি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের প্রতীক, যে ছবিটি একটি ইতিহাসের দলিল, সেই ছবিটি সহ সেসময়ের তোলা বাকি সব ছবিকেই সবার কাছে উন্মুক্ত করতে।

আলোকচিত্রী বলেন, ছবিগুলো আপনাদের দিয়ে গেলাম। আপনারা আগামী প্রজন্মের জন্য এগুলো ব্যবহার করবেন। এগুলো ইতিহাসের অংশ, এগুলো অন্য সবাইকে জানাবেন, অন্য মানুষ জানবে।

বললেন, স্থিরচিত্র সবসময়ই সময়ের আলোকবর্তিকা, প্রতিবাদের ভাষা, সময় পেরিয়েও যা থাকে অমর অক্ষয়।

আলোকচিত্রী দিনু আলম বলেন, স্বৈরাচার নিপাত যাক এবং গণতন্ত্র মুক্তিপাক। এ দুটো ছবি মিলেই কিন্তু একত্রিতভাবে আমাদের জন্য এক নূর হোসেন। শহীদ নূর হোসেন।

১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর নূর হোসেনের মৃত্যুর মাত্র মিনিট দশেক আগে তোলা ছবিটি এখন সারাদেশের। এই ছবির ফেরিওয়ালার কাছে এটিই পুরস্কার।