৯ কোটি টাকার সেতুটি এক দিনের জন্যও ব্যবহার করতে পারেননি এলাকাবাসী

৯ কোটি টাকার সেতুটি এক দিনের জন্যও ব্যবহার করতে পারেননি এলাকাবাসী

মাস ছয়েক আগে প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। কিন্তু সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় সেতুটি কোনো উপকারে আসছে না। এর ওপর দিয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার নাংলা ইউনিয়নের বন্ধরৌহা গ্রামের কাটাখালী নদীর ওপর। সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছিল চলতি বছরের জুনে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেতুটি চালু হলে নাংলা ইউনিয়নের পুঠিয়ারপাড়া, খাসিমারা, ললছিয়া ও মাহমুদপুর গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের যাতায়াত সহজ হবে। এই চার গ্রামের মানুষেরা এখন পুঠিয়ারপাড়া-শাহীন বাজার কাঁচা সড়ক ব্যবহার করে যাতায়াত করেন। বর্ষা মৌসুমে সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ জন্য গ্রামবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কাটাখালী নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এটি চালু হলে দুই পারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীরা সহজে যেতে পারবেন। তা ছাড়া উপজেলা সদরের সঙ্গে কমে আসবে সড়কপথের দূরত্ব।

সম্প্রতি ওই এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটি নদীর ওপর দাঁড়িয়ে আছে। তবে দুই পাশে কোনো সড়ক নেই। সেতুর পশ্চিম পাশে ধানের খেত আর পূর্ব পাশে একটি গ্রাম। ধানখেত দিয়ে সেতুতে যেতে হয়। তবে দুই পাশ উঁচু থাকায় সেতুতে ওঠার উপায় নেই।

পুঠিয়ারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শেখ মাহমুদ বলেন, তাঁরা সবাই মিলে কর্তৃপক্ষের কাছে বহুবার গিয়েও সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করাতে পারছেন না। ফলে তাঁরা এই সেতু ব্যবহারের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। প্রায় এক কিলোমিটার বেশি ঘুরে উপজেলা সদরে যেতে হয় তাঁদের।

খাসিমারা গ্রামের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম বলেন, বর্ষা মৌসুমে সবাইকে অনেক কষ্ট করে কাঁচা রাস্তায় যাতায়াত করতে হয়। পুরো রাস্তা কাদাপানিতে ভরা থাকে। তারপরও প্রায় এক কিলোমিটার ঘুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে হয়। সেতুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হলে এই দুর্ভোগ থেকে শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসী মুক্তি পাবেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) জামালপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সায়েদুজ্জামান বলেন, সেতুটি ওই গ্রামগুলোর চিত্র বদলে দেবে। সেতু নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়ার সময় গ্রামবাসী বলেছিলেন, সড়ক নির্মাণের জন্য জায়গা দেবেন। কিন্তু যখন সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হয়, তখন গ্রামবাসী জমি দিতে রাজি হননি। পরে ভূমি অধিগ্রহণ করে জমি নেওয়া হয়েছে। এ জন্য দুই পাশের সড়ক নির্মাণে একটু দেরি হচ্ছে। ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ। সড়ক নির্মাণকাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হবে।-প্রথম আলো