সরকারের বিরুদ্ধে সব রাজনৈতিক দলসমূহকে রুখে দাঁড়ানোর আহবান চরমোনাইয়ের পীরের

সরকারের বিরুদ্ধে সব রাজনৈতিক দলসমূহকে রুখে দাঁড়ানোর আহবান চরমোনাইয়ের পীরের

দুর্নীতির টাকায় খেয়েদেয়ে হৃষ্টপুষ্ট হয়ে বর্তমান সরকার নিজেদের বাঘ মনে করছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম। তার দাবি, বর্তমান সরকার জনগণকে কেয়ারই (গুরুত্ব) করছে না। এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে এরপর জাতীয় সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন করবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শুক্রবার বিকালে ঢাকায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আয়োজিত ছাত্র ও যুব সমাবেশে এসব কথা বলেন চরমোনাইয়ের পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ও যুব আন্দোলন যৌথভাবে এই সমাবেশের আয়োজন করে।

নিশ্চুপ বসে না থেকে এই সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে এই সমাবেশ থেকে অন্য দলগুলোর প্রতিও আবেদন জানান সৈয়দ রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি নিশ্চুপ বসে থাকি, তাহলে আমাদের এই জন্মভূমি বাংলাদেশ একপর্যায়ে আমাদের স্বাধীনতা বিলীন হবে, আমাদের ইসলাম ধ্বংস হবে।’

সমাবেশে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘বাঘ যখন জঙ্গলে হুংকার দেয়, মনে হয় সামনে আর কেউ নাই। কিন্তু দুর্বল প্রাণীগুলো একত্রিত হয়ে বাঘের ওপর যখন ঝাঁপিয়ে পড়ে, তখন বাঘও পালাতে বাধ্য হয়।’

এই সমাবেশ থেকে ২৭ অক্টোবর সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল এবং ৩ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন সৈয়দ রেজাউল করিম। তার দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির প্রবর্তন এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করা।

এই সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের একটি বক্তব্য উদ্ধৃত করে চরমোনাইয়ের পীর সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, ‘আপনি বলেছেন, দিল্লি আছে তো আমরা আছি। আপনি কি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকার করেন না? আপনি এই বক্তব্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে অপমান করেছেন, বাংলাদেশকে তাঁবেদার বানিয়েছেন। এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন জনগণ হতে দেবে না।’

‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে বসে থাকব’—প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক এই বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন চরমোনাইয়ের পীর সৈয়দ রেজাউল করিম। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কষ্টার্জিত সম্পদ, টাকায় দেশের উন্নয়ন হয়েছে। আর উন্নয়নের নামে কী হয়েছে, বাংলাদেশের মানুষ সব দেখেছে। যেখানে ১০ টাকা লাগবে, সেখানে সরকারের মদদপুষ্টরা লোপাট করে খরচ দেখিয়েছে ১০০ টাকা। এর হিসাব জনগণকে দিতে হবে।

সমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচন, প্রহসনের নির্বাচন ছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচন, ডাকাতের নির্বাচন ছিল। আগামী নির্বাচন এই সরকারের অধীনে হবে না। আগামী নির্বাচন প্রহসনের নির্বাচন হতে দেব না। দিল্লির গোলামি আমরা মানব না।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর জ্যেষ্ঠ সদস্য সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ, মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আশরাফ আলী আকন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব ইমতিয়াজ আলম, বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ প্রমুখ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিন। সমাবেশের উদ্বোধক ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি শরিফুল ইসলাম।