গাজীপুরে সড়কে আগুন দিয়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

গাজীপুরে সড়কে আগুন দিয়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

নতুন মজুরি কাঠামো প্রত্যাখ্যান করে গাজীপুরে কোনাবাড়ীর নাওজোর এলাকায় বাইপাস সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন পোশাকশ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, আশপাশের কারখানার বেশ কিছু শ্রমিক কাঠ ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন। অনেক কারখানা ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেসব কারখানার শ্রমিকদের অনেককে বাড়ি ফিরে যেতে দেখা গেছে। এদিকে, সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।

ইসলাপুর রোডের কিছু অলিগলিতে অবস্থান করে কাঠ ও কাগজে আগুন জ্বালিয়েছেন শ্রমিকরা। শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে হ্যান্ডমাইকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফিরে যান। কোনো ফৌজদারি অপরাধে জড়াবেন না। আপনাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।’

কারাখানা বন্ধ ঘোষণা করায় শত শত শ্রমিককে ফিরে যেতে দেখা গেছে। তাদের একজন নর্প ইন্ডাস্ট্রির শ্রমিক রতন মিয়া। তিনি সমকালকে বলেন, ‘সকাল ৮টায় অফিসে গিয়েছি। এক ঘণ্টা পরে স্যাররা বলেছেন- চলে যান, আজ কাজ বন্ধ।’

কোনাবাড়ীর মতো চৌরাস্তা এবং চান্দনা এলাকায়ও থমথমে অবস্থা দেখা গেছে। মোড়ে মোড়ে পুলিশ, বিজিবি ও র‍্যাবের প্রচুর সদস্য দেখা গেছে। এ এলাকায়ও কাজ বন্ধ থাকায় শত শত সাধারণ শ্রমিক কারখানা থেকে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

গাজীপুর পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম বলেন, ‘কিছু কারখানার শ্রমিকেরা রাস্তায় নামার চেষ্টা করেছে। তাদেরকে বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।’

শ্রমিকদের যেকোনো গুজবের বিষয়ে সতর্ক থাকার অনুরোধ করেছেন পুলিশ সুপার।

পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণার পরও গতকাল বুধবার গাজীপুর-আশুলিয়া ছিল অশান্ত। বেতন কাঠামো প্রত্যাখ্যান করে মজুরি আরও বাড়ানোর দাবিতে গাজীপুরের শ্রমিকরা রাস্তায় নামলে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় ব্যাপক সংঘাত হয়েছে। এ ঘটনায় এক নারী শ্রমিক নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। এর মধ্যে হঠাৎ সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্যের হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

কিছুদিন ধরে মজুরি বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সরকারের মজুরি বোর্ড মালিকপক্ষের প্রস্তাবের সঙ্গে সংগতি রেখে ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেয়। তবে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে বেশ কিছু শ্রমিক সংগঠন।