ইউএস থিংক ট্যাঙ্ক উইলসন সেন্টারের অভিমত

বিরোধীপক্ষ দমনে ওয়াশিংটনের ডলার খরচ না করার তাগিদ

বিরোধীপক্ষ দমনে ওয়াশিংটনের ডলার খরচ না করার তাগিদ

 ঢাকা, ৪ নভেম্বর (জাস্ট নিউজ): সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার নামে যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো ডলার যাতে বিরোধীপক্ষ দমনে খরচ না করা হয় সে বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে তাগিদ দেবার আহবান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা থিংক ট্যাঙ্ক উড্রো উইলসন সেন্টার। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের করণীয় ভূমিকা নিয়ে লেখা এক অভিমতে এ আহবান জানানো হয়।

উইলসন সেন্টার থেকে জাস্ট নিউজে প্রেরিত অভিমতে বলা হয়, বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলো দমনে সরকার যাতে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অর্থনৈতিক সহায়তার ডলার ব্যবহার না করে। যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের উচিত ঢাকাকে এ জন্য চাপ প্রয়োগ করা যে, বিরোধীদলের প্রতি আচরণে সরকার যেন সংযত হয়, শুধু মানবাধিকার বা সন্ত্রাস দমনের বিষয়ে খেয়াল রাখলেই চলবে না।

বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাস দমনে বিরোধী দলগুলোর ওপর চড়াও হচ্ছে উল্লেখ করে অভিমতে বলা হয়, সন্ত্রাসবাদ দমনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার রাজনৈতিক বিরোধীশক্তিগুলোর ওপর কঠিনভাবে চড়াও হচ্ছে।

দুর্ভাগ্যবশত ক্রমেই বাংলাদেশের রাজনীতি বিভক্তির পথে অগ্রসর হচ্ছে মন্তব্য করে মিকাইল কোগেলম্যান লিখিত এই অভিমতের বলা হয়, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিরোধী নেত্রীর মধ্যে প্রতিহিংসার ধারা বিরাজিত। এ অবস্থা চলতে থাকলে যে কোনো মুহূর্তে ঢাকার রাজনীতি অমীমাংসিত পথে চলে যেতে পারে।

অভিমতে আরো বলা হয়, বিগত দশকে কিংবা তারো বেশি সময় ধরে দক্ষিণ এশিয়ায় ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ককে আফগানিস্তান, ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে গুরুত্ব দিয়েছে ওয়াশিংটন। এটা স্পষ্টভাবেই বলা যায় যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশকে অনেক বেশী গুরুত্ব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠাই যুক্তরাষ্ট্রের মূল গুরুত্বের বিষয় হওয়া উচিত উল্লেখ করে অভিমতে বলা হয়, স্থিতিশীলতা এবং যুক্তরাষ্ট্র নাগরিকদের নিরাপত্তা দুটিই এখন বাংলাদেশে ঝুঁকিতে রয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা স্বত্ত্বেও দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় কোনো হুমকি ছিলনা। বাংলাদেশের বর্তমান অস্থিতিশীল অবস্থা দেশটির নীতিকে বদলে দিয়েছে। বিশেষ করে গত জুলাই আইএস ঘোষিত ঢাকার হলি আর্টিজান ক্যাফেতে হামলা ও সন্ত্রাসবাদ ক্রমাগত গজিয়ে উঠছে। অন্যান্য হামলার মতো এটিতেও বিদেশিদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করা হয়।

ঘটে যাওয়া এসব ঘটনাই বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা আরো জোরদারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলে দেয় উল্লেখ করে অভিমতে বলা হয়, বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকার সঙ্গে ওয়াশিংটনের সন্ত্রাসবাদবিরোধী সহযোগিতা আরো বাড়াতো হবে। যাতে করে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করা যায়, তাদের সঙ্গে বিদেশি আল-কায়দা বা আইএস এর যোগসূত্র খুঁজে বের করা যায়।

গণমাধ্যম বন্ধের সমালোচনা করে অভিমতে বলা হয়, রাজনৈতিক বিরোধী শক্তিসমূহের ওপর অভিযান চালিয়ে, সংবাদ মাধ্যমের সম্প্রচার বন্ধ করে চরমপন্থা বিকাশের পথকে আরো সুগম করে দেওয়া হচ্ছে।

(জাস্ট নিউজ/জিইউএস/১৮৪০ঘ)