নিভৃতচারী দেশপ্রেমিক রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খান

নিভৃতচারী দেশপ্রেমিক রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খান

মুশফিকুল ফজল আনসারী

মানুষের হৃদয় রাজ্যে বাস করার অভিলাষেই কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক,/ আমি তোমাদেরই লোক। কোনো তকমা কিংবা প্রশংসার ফুলঝুরি নয়, সকলের একজন হয়েই বেঁচে থাকতেই হয়তো এমন পণ করেছিলেন রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খান। এরকম মানুষ হাতে গুনা। নিরবে নিভৃতে মানুষের তরে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিলেন এই ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্ব। যশ, খ্যাতি, প্রতিপত্তি তাঁকে তাড়া করলেও তিনি সেসবে ফিরেও তাকাননি।

মাটি-আর মানুষকে আপন করার ইচ্ছে লালন করার তাগিদেই স্বাধীন ভূখন্ড প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বুনেন আপনমনে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সহ্য করেছেন পাকিস্তান সরকারের গৃহবন্দিত্বের খড়গ। ভাতা ভোগ বা আয়েশি জীবনকে তুচ্ছ করে অটল থেকেছেন স্বাধীন স্বদেশে নি:শ্বাস নেয়ার দীপ্ত শপথে।

মাহবুব আলী খান ছিলেন দেশপ্রেমে অবিচল একজন সত্যনিষ্ট মানুষ। দেশের অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ইঞ্চি পর্যন্ত ছাড় দেননি তিনি। দেশের সমুদ্রসীমা রক্ষা, সমুদ্রে জেগে ওঠা দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপকে বাংলাদেশের সম্পদ হিসেবে আগলে রাখা তাঁর নিখাঁদ দেশপ্রেমের জ্বলন্ত উদাহরণ। মানুষের দোরগড়ায় প্রশাসনকে নিয়ে যেতে তিনিই প্রথম উপজেলা পদ্ধতির চালুর পরিকল্পনা করেন। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ গঠনে মাহবুব আলী খানের শ্রম-ঘামের স্বাক্ষী এই জনপদ।

মাহবুব আলী খানের রয়েছে অবাক করার মতো পারিবারিক ঐতিহ্য। বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খানের জন্ম ১৯৩৪ সালের ৩ নভেম্বর সিলেটের বিরাহীমপুরের সম্ভ্রান্ত ও বিখ্যাত মুসলিম পরিবারে। তৎকালীন ভারতের প্রথম মুসলিম ব্যারিস্টার আহমেদ আলী খান তার পিতা।

১৯০১ সালে বার এ্যাট ‘ল ডিগ্রিধারী আহমেদ আলী খান ছিলেন নিখিল ভারত আইনপরিষদের সদস্য (এম এল এ) ও আসাম কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট। মাহবুব আলী খানের মায়ের নাম জোবায়দা খাতুন দু’ভাই ও এক বোনের মধ্যে মাহবুব আলী খান ছিলেন ছোট। সিলেটের বিরাহীমপুর, কলকাতা ও ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ভাগ হওয়ার পর পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকার ৬৭ পুরানাপল্টন লাইনের বাড়িতে মাহবুব আলী খানের শৈশব ও কৈশোর অতিবাহিত হয়। তিনি কলকাতা ও ঢাকাতে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন শান্ত অথচ চৌকস। অজানাকে জানা আর অসাধ্যকে সাধন করার ব্রত তাঁর বাল্যকাল থেকেই। পড়াশোনায় তিনি ছিলেন কৃতীছাত্র। তার কলেজ জীবনের শিক্ষা ঢাকা কলেজে।

মায়ের দিক থেকেও মাহবুব আলী খান ছিলেন বর্ণাঢ্য পারিবারিক ঐতিহ্যের এক গর্বিত উত্তরাধিকার। জোবায়দা খাতুনের দাদা সমাজহীতকর কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ তৎকালীন ব্রিটিশদের রাজকীয় খেতাবে ভূষিত হন । মাহবুব আলী খানের পিতার চাচা গজনফর আলী খান ১৮৯৭ সালে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস (আই.সি.এস) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ছিলেন বাংলা ও আসামের প্রথম মুসলিম আই.সি.এস। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের পর ১৯৩২ সালে গজনফর আলী খান নাগপুর ডিভিশনের কমিশনার হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। তাঁর কর্মদক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ‘অফিসার অব দি ব্রিটিশ এম্পায়ার’ এবং সি.আই.ই উপাধিতে ভূষিত করে।

মাহবুব আলী খানের দাদা ছিলেন ভারতের বিশিষ্ট চিকিৎসক খান বাহাদুর আছদ্দর আলী খান। তিনি বিহার ও আসামের দারভাঙ্গা মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও পাটনা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক। ১৯২৪ সালে তিনি সিলেটে নাফিজাবানু চ্যারিটেবল হাসপাতাল ও ১৯৩০ আরেকটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।

মাহবুব আলী খানের পিতা আহমেদ আলীর মামা বিচারপতি আমীর আলী ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। দ্য স্পিরিট অব ইসলাম ও অ্যা শর্ট হিস্ট্রি অব সারাসেন’ এদু’টি বই রচনা করে আজও তিনি খ্যাতির শীর্ষে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী ছিলেন মাহবুব আলী খানের চাচাতো ভাই।

দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে মাহবুব আলী খান ছোট। বড়বোন সাজেদা বেগম। মেজভাই চিকিৎসক সেকেন্দার আলী খান। সেকেন্দার আলী খানের মেয়ে আইরিন খান কাজ করেছেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব হিসেবে। সম্প্রতি জাতিসংঘের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মতামত সংক্রান্ত বিশেষ রেপুটিয়ারের দায়িত্ব লাভ করেছেন আইরিন খান।

১৯৫৫ সালে ২১ বছর বয়সে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হন সৈয়দা ইকবালমান্দ বানুর সাথে। একজন বিদ্যোৎসাহী এবং চিত্রশিল্পী হিসাবে সৈয়দা ইকবালমান্দ বানুর নাম সুপ্রতিষ্ঠিত। দুই কন্যা সন্তানের জনক মাহবুব আলী খান। শাহিনা খান জামান (বিন্দু) এবং ডা জোবায়দা রহমান (ঝুনু)। শাহিনা খান জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। কনিষ্ঠা কন্যা জোবায়দা রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসা শাস্ত্রে ডিগ্রি লাভ করেন। যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত সোয়াস থেকে তিনি প্রিভেনটিভ কার্ডিওলজি থেকে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। এতে বিশ্বের ৫২টি দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অর্জন করেন প্রথম স্থান।

বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমডোর সৈয়দ শফিউজ্জামান মাহবুব আলী খানের জ্যেষ্ঠ জামাতা। আর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বড় পুত্র বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জননন্দিত জননেতা তারেক রহমান মাহবুব আলী খানের কনিষ্ঠ জামাতা। মাহবুব আলী খানের একমাত্র নাতনী ব্যারিস্টার জায়মা রহমান পারিবারিক ঐতিহ্যের নবপ্রেরণা।

১৯৫২ সালে পাকিস্তান নৌবাহিনীতে যোগ দেন মাহবুব আলী খান। ক্যাডেট হিসেবে প্রশিক্ষণ লাভ করেন কোয়েটার সম্মিলিত বাহিনীর স্কুল থেকে। যুক্তরাজ্যের ডার্মউইথ রয়্যাল নেভালকলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন করেন। ১৯৫৪ সালে ব্রিটিশ বিমানবাহিনীর রণতরী ট্রাম্পে প্রশিক্ষণ নেন। ১৯৫৬ সালের মে মাসে স্থায়ী কমিশন লাভ করেন। রয়্যাল কলেজ, গ্রিনিচসহ ইংল্যান্ডের রয়্যাল নেভাল ইনস্টিটিউশনে বিভিন্ন কোর্স সমাপ্ত করেন।

১৯৬৩ সালে কৃতী অফিসার হিসেবে যুক্তরাজ্যে রানী এলিজাবেথ কর্তৃক পুরস্কৃত হন। একই বছর যুক্তরাজ্যে ভূমি থেকে টর্পেডো ও অ্যান্টি-সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার অফিসার হিসেবে উত্তীর্ণ হন এবং পাকিস্তান নেভাল স্টাফ কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন করেন। করাচিতে পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট থেকে সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট কোর্স সম্পন্ন করেন। এর আগে ১৯৬০ সালে পিএনএস তুগ্রিলের গানারি অফিসার হন। পরে ১৯৬৪ সালে পিএনএস টিপু সুলতানের টর্পেডো ও অ্যান্টি-সাবমেরিন অফিসার হন। ১৯৬৭-৬৮ সালে তিনি রাওয়ালপিন্ডিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে জয়েন্ট চিফ অফ সেক্রেটারিয়েট স্টাফ অফিসার (ট্রেনিং এবং মিলিটারি অ্যাসিস্ট্যান্স) হিসেবে দায়িত্ব পালন।

১৯৭০ সালে পিএনএস হিমালয়ে টর্পেডো ও অ্যান্টি-সাবমেরিন স্কুলের অফিসার ইনচার্জ ও করাচিতে সি-ওয়ার্ড ডিফেন্স অফিসারের দায়িত্বপালন করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে স্ত্রী ও কন্যাসহ মাহবুব আলী খান পশ্চিম পাকিস্তানে চাকরিরত ছিলেন। যুদ্ধকালীন সময়ে পরিবারসহ তিনি গৃহবন্দী হন। তিন বছর বন্দী থাকার পর ১৯৭৩ সালে স্ত্রী ও কন্যাসহ আফগানিস্তান ও ভারত হয়ে বাংলাদেশে পৌঁছেন।

এরপর ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে চট্টগ্রাম মার্কেন্টাইলএকাডেমির প্রথম বাংলাদেশী কমান্ড্যান্ট নিযুক্ত হন। ১৯৭৪ সালে নৌ-সদর দপ্তরে পারসোনেল বিভাগের পরিচালক পদে নিয়োগ পান। ১৯৭৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি নৌবাহিনীর সহকারি স্টাফ প্রধান (অপারেশন ওপারসোনেল) নিযুক্ত হন। ১৯৭৬ সালের ডিসেম্বরে রয়্যালনেভি কর্তৃক হস্তান্তরিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রথম রণতরী বিএনএস ওমর ফারুক (সাবেক এইচএমএম ন্যাভডক) এর অধিনায়ক হন। রণতরীটি নিয়ে আলজেরিয়া, যুগোশ্লোভিয়া, মিসর, সৌদি আরব এবং শ্রীলঙ্কার বন্দরগুলোতে শুভেচ্ছা সফর করেন। ১৯৭৯ সালের ৪ নভেম্বর তিনি নৌবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হন এবং ১৯৮০ সালের ১ জানুয়ারি রিয়ার এডমিরাল হিসাবে অভিষিক্ত হন।

স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে বিশ্বমানের আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে তিনি কঠোর পরিশ্রম করেন। নৌবাহিনীর আইন প্রণয়ন করেছেন তিনি। দেশের সমুদ্রসীমা রক্ষা, সমুদ্রে জেগে ওঠা দ্বীপসহ দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপের দখল রক্ষা, জলদস্যু দমন, সুন্দরবনের নিরাপত্তায় নৌবাহিনীকে সচেষ্ট করতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। তিনি সরকারের সশস্ত্র বাহিনীর বেতন ও পেনশন কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়া দেশের প্রশাসনিক পুনর্গঠনে জাতীয় বাস্তবায়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন। ১৯৮২ সালে দেশে সামরিক আইন জারি হলে, রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খান উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিযুক্ত হন। এ সময় তাকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা করা হয়। ১৯৮২ সালের ১০ জুলাই থেকে ১৯৮৪ সালের ১ জুন পর্যন্ত তিনি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় শাহজালাল সেতু, লামাকাজী সেতু, শেওলাসেতুসহ বড় বড় উন্নয়ন কাজের সূচনা হয়। দেশের রাস্তাঘাট, সেতু নির্মানসহ অবকাঠামো উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখেন তিনি।

১৯৮২ সালের এপ্রিল মাসে রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খান নৌ, রেল ও সড়ক প্রতিনিধি দলের নেতা হিসেবে চীন সফর করেন এবং চীনের নৌঘাঁটিগুলো পরিদর্শন করেন। জুন মাসে জেদ্দায় অনুষ্ঠিত ওআইসি সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন। একই বছর নভেম্বরে তিনি রাশিয়া গমন করেন এবং প্রেসিডেন্ট ব্রেজনেভের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। ডিসেম্বরে জ্যামাইকায় অনুষ্ঠিত সমুদ্র আইনবিষয়ক সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন ও কনভেনশন অন অফ-সি কনফারেন্সে বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন। ১৯৮৩ সালের মার্চে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত রেলওয়ে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। জুলাই মাসে তিনি কোরিয়া সফরে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। ১৯৮৪ সালের ৩০মার্চ তিনি গিনির প্রেসিডেন্ট আহমদ সেকুতুরের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সঙ্গে মাহবুব আলী খানের সম্পর্ক ছিল অতন্ত ঘনিষ্ঠ। ১৯৭৫ সালের পরে, জিয়াউর রহমান সরকারের সময় নৌবাহিনী প্রধানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি তৎকালীন সরকারের যোগাযোগ উপদেষ্টা ছিলেন। মাহবুব আলী খান শহীদ জিয়া সূচিত সবুজ বিপ্লব ও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির অন্যতম সহযোগি হিসাবে সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। সৎ ও অভিজ্ঞ মাহবুব আলী খানকে পরবর্তী সরকার বাংলাদেশের যোগাযোগ ও কৃষিমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদান করে।

১৯৮৪ সালের ৫ আগস্ট ঢাকায় খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে অবতরণ করার সময় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফকার এফ২৭-৬০০ জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (এখন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর) কাছাকাছি একটি জলাভূমির মধ্যে বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা বিমানবন্দর থেকে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পূর্বনির্ধারিত ঘরোয়া যাত্রী ফ্লাইট পরিচালনা করছিল। সে ঘটনায় মোট ৪৯ জন যাত্রি মারা যান। ফ্লাইট পরিচালনাকারী বাংলাদেশের প্রথম মহিলা পাইলট কানিজ ফাতেমা রোকসানাও মর্মান্তিক ওই বিমানদূর্ঘটনায় নিহত হন। রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খান তাৎক্ষণিক ছুটে যান দূর্ঘটনাস্থলে। সেখানে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাঁকে স্থানান্তর করা হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। ৬ আগস্ট মাত্র ৪৯ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন নিভৃতচারী এই ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্ব। রেখে যান কর্ম, উদ্যোম, সততা, সাহসিকতা ও দেশপ্রেমের অনন্য নজির ।

লেখক: সাংবাদিক

কৃতজ্ঞতা: দৈনিক নয়া দিগন্ত ও মানবজমিন