সংবিধানের মধ্যেই দেখিয়ে দেবো, কীভাবে দাবি মানা সম্ভব: মান্না

সংবিধানের মধ্যেই দেখিয়ে দেবো, কীভাবে দাবি মানা সম্ভব: মান্না

ঢাকা, ৩০ অক্টোবর (জাস্ট নিউজ) : জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আমরা সংবিধানের মধ্যেই দেখিয়ে দেবো, কীভাবে আমাদের দাবি মেনে নেয়া সম্ভব। আমাদের সুস্পষ্ট কথা হচ্ছে, সাত দফাই আমাদের দাবি।

মঙ্গলবার রাজধানীতে বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে নাগরিক ঐক্যে যোগদান অনুষ্ঠানে মান্না এ মন্তব্য করেন।

নির্বাচন ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের আহ্বানে সাড়া দেয়াকে সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেরিতে হলেও উনার শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে, উনি ডাকছেন, কথা বলতে চান, আমরা গিয়ে কথা বলব।

তিনি আরো বলেন, সরকারের আমন্ত্রণে সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যাবে। তবে সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের এজেন্ডা নিয়ে সংলাপে আন্তরিকতার সঙ্গে কথা বলতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন ‘উনারা বলেছেন, সংবিধানের বাইরে আমরা কোনো কথা বলতে চাই না।’ আমরা সংবিধানের মধ্যেই দেখিয়ে দেবো কীভাবে আমাদের দাবি মেনে নেয়া সম্ভব। আমাদের সুস্পষ্ট কথা হচ্ছে, সাত দফাই আমাদের দাবি।

এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার অভিযোগ করে মান্না সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন।

তিনি বলেন, ‘কোনো রকম দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে থাকবার দরকার নেই, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি আমাদের দাবি, ঐক্যফ্রন্টের দাবি, এটা সবার দাবি। কারণ, আমরা মনে করি, বেগম খালেদা জিয়ার ওপর যেটা করা হচ্ছে, সেটা নেহাতই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

তিরি আরো বলেন, এদিকে আগামী ১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বহুল প্রতীক্ষিত সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। সেই সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা, গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনকে চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর চিঠি পৌঁছে দিতে আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বেইলি রোডে ড. কামাল হোসেনের বাসায় যান আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। দুই নেতা একে অপরের সঙ্গে হাত মেলান এবং কুশল বিনিময় করেন। ড. কামাল হোসেন গোলাপের চিঠি গ্রহণ করে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন। এ সময় সেখানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুও উপস্থিত ছিলেন।

চিঠি দেয়া শেষে আবদুস সোবহান গোলাপ সাংবাদিকদের বলেন, ‘উনারা যে সময় চেয়েছেন আলোচনার জন্য, সেই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী পহেলা নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) ২০১৮ গণভবনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা উনাদের আমন্ত্রণ করেছেন সন্ধ্যা ৭টায়। সেই পত্রটি আমি সরাসরি ড. কামাল হোসেন সাহেবের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।’

আর ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা ও ১১ লক্ষ্য নিয়ে সংলাপে-আলোচনা করা হবে। ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে সংলাপে থাকবেন ১৫ জন সদস্য।

মন্টু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা কয়জন যাচ্ছি এবং কে কে যাচ্ছি, লিস্টটা উনারা চেয়েছেন। আজকে আমরা লিস্টটা দিয়ে দেবো। আমরা শুধু সাত দফা নয়, সাত দফাসহ অন্যান্য বিষয় এবং বর্তমান যে ইস্যুগুলো আছে, সবগুলো নিয়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করার প্রেক্ষাপট তৈরি করার জন্য উনাকে অনুরোধ করব। এবং এর জন্য উনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) যদি কোনো সাহায্য-সহযোগিতা আমাদের কাছে চান, অবশ্যই আমাদের পক্ষ থেকে ড. কামাল হোসেন সাহেব বিস্তারিত কথা বলতে পারবেন।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবির প্রথম দফায় ছিল অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার নিশ্চিত করতে হবে।

অন্যদিকে সকালে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ কারো চাপে বা আন্দোলনের কাছে নতিস্বীকার করে সংলাপে বসছে না। সম্পূর্ণ আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতেই সংলাপে বসতে যাচ্ছি আমরা। এই সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্য নিয়েও আলোচনা হবে। সংলাপে সংকটের বরফ গলবে। যারা সংশয় প্রকাশ করেছিল, সংলাপের মধ্য দিয়ে তাদের সংশয় কেটে যাবে।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৬৫৫ঘ.)