বিদেশি কাউকে সুবিধা দিতে পোশাকখাতে সরকার অস্থিরতা সৃষ্টি করছে : বিএনপি

বিদেশি কাউকে সুবিধা দিতে পোশাকখাতে সরকার অস্থিরতা সৃষ্টি করছে : বিএনপি

বিদেশি কাউকে সুবিধা দিতে সরকার পরিকল্পিতভাবে গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে গার্মেন্টস শিল্পকে ধ্বংস করছে। বিদেশি কাউকে সুবিধা এর পেছনে সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে। মালিক-শ্রমিককে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে সরকার দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তিকে ধ্বংস করছে। গার্মেন্টস সেক্টরের সৃষ্টি সংকট নিরসনে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যায্য পারিশ্রমিক নির্ধারণ করে তা মালিকদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে সরকারের ব্যর্থতা গত কয়েকদিন ধরে ফুটে উঠেছে। বিদেশী কাউকে সুবিধা দিতে এর পেছনে সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য কাজ করছে বলেই দেশের জনগণ বিশ্বাস করে। অতীতেও আপনারা দেখেছেন-স্বাধীনতার পর কিভাবে আওয়ামী লীগ পাট শিল্পকে ধ্বংস করেছে। বড় বড় পাটের গুদাম ও মিল-কলকারখানা কিভাবে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল তা জনগণ এখনও ভুলে যায়নি।
এটা কাদের স্বার্থে করা হয়েছিল সেটাও জনগণ জানে। এখন ভুয়া ভোটের সরকার গার্মেন্ট শিল্পকে নিয়ে বিপজ্জনক খেলায় মেতেছে।

রিজভী বলেন, গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলন দমাতে হত্যা, লাঠিচার্জে ক্ষত-বিক্ষত করা ও ব্যাপক গ্রেপ্তারের মধ্যদিয়ে কোন সমাধান আসবে না। অবিলম্বে দেশের রপ্তানী আয়ের প্রধান উৎস এই গার্মেন্ট শিল্পকে রক্ষা করতে সব পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মানতে হবে এবং আলোচনার ভিত্তিতে উদ্ভুত সমস্য সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে। শুধুমাত্র অলীক তৃতীয় পক্ষ বা অন্যের হাত আছে এসব বলে সংকটের সমাধান হবে না।

তিনি বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকার চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে সম্পূণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। গত কয়েকদিনে ফের কয়েকদফা চালের দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি চালের দাম গত এক সপ্তাহে বেড়েছে ৬ থেকে ৮ টাকা। সরকারদলীয় সিন্ডিকেটের লোকেরাই কারসাজি করে এই দাম বৃদ্ধি করছে। দশ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়ানোর কথা বলে একসময় ভোট চাইলেও বর্তমানে মোটা চালের দামও পঞ্চাশ টাকার নিচে নয়। অন্যান্য চাল ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, গত পরশু খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন- ইজ্জত রক্ষার্থে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখুন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা মন্ত্রীর ইজ্জত রেখেছেন চালের দাম আরও বৃদ্ধি করে। জনগণের ভোটে এমপি নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হলে ইজ্জত ঠিকই থাকতো। সিন্ডিকেটের লোকেরা ভোট ডাকাতির নির্বাচনে সহযোগিতা করে এখন ফায়দা নিতেই চালের দাম বৃদ্ধি করেছে। তাদের বিরুদ্ধে এ্যকশন নেয়ার ক্ষমতা খাদ্যমন্ত্রীর আছে কি না সেটিই বড় প্রশ্ন। কারণ চারিদিকে সরকারী দুর্নীতির জয়জয়কার। গরীব মানুষের পকেট কেটে বিপুল অর্থ লুটে নিচ্ছে সিন্ডিকেট। আর এদিকে দেশের জনগণকে দু:সহ জীবন-যাপনে বাধ্য করা হচ্ছে। চালের এই অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে নিম্ন আয়ের মানুষরা ক্ষুধার্ত থাকছে। এই চালের মৌসুমেও চালের দরের উর্ধগতি সামনের মাসগুলোতে খাদ্য সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে। চালের দাম বৃদ্ধিতে সরকারের ব্যর্থতার তীব্র নিন্দা জানান রিজভী।

এ সময় তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা সাজানো মামলায় বন্দি করার মূল কারণই ছিল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। কারণ বেগম খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে ভোট ডাকাতির এ রকম নির্বাচন সম্ভব ছিল না। বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের জনগণের মাঝে উচ্চারিত একজন জনপ্রিয় নেত্রীর নাম। তিনি জীবনে কখনও নির্বাচনে পরাজিত হননি। পাঁচটি ও সবশেষে তিনটি আসনে তিনি বাংলাদেশের যে প্রান্ত থেকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন সেখানেই তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এই জনপ্রিয়তাই তার জন্য কাল হয়েছে। তার এই জনপ্রিয়তা কোনভাবেই সহ্য করতে পারেনি আওয়ামী লীগ প্রধান ও দেশী-বিদেশী চক্রান্তকারীরা।

এমজে/