মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা বাংলাদেশে সম্ভব নয়: মোশাররফ

মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা বাংলাদেশে সম্ভব নয়: মোশাররফ

ঢাকা, ৩০ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : ৮ ফেব্রুয়ারির রায়ের ভিত্তিতে দেশের রাজনীতি নির্ভর করবে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা এই বাংলাদেশে করা সম্ভব হবে না।

তিনি বর্তমান সরকারকে স্মরণ করে দিয়ে বলেন, যারা মাইনাস টু চিন্তা করেছিল তারা কিন্তু সকলে মারা যায় নাই। এই সমাজে আছে। তারা ওঁৎ পেতে বসে আছে। আপনাকে দিয়ে মাইনাস ওয়ান করে, তারা আপনাকে মাইনাস করে তারপরে মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়ন করতে চায়। সেই ষড়যন্ত্র করছে। আপনারা সেই ব্যাপারে হুঁশিয়ার থাকবেন। যদি মাইনাস ওয়ান, মাইনাস টু, ১/১১ এর সময় সম্ভব না হয়ে থাকে, ইনশাআল্লাহ আমরা বলতে চাই মাইনাস ওয়ান সম্ভব হবে না।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক গোলটেবিল আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন। ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনে সকল রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা শীর্ষক’ এই গোলটেবিলের আয়োজন করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক আন্দোলন।

প্রধান অতিথি ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে এই সরকার মাইনাস ওয়ান তথা আমাদের নেত্রীকে মাইনাস করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। আমরা শুধু স্মরণ করে দিতে চাই ১/১১ জরুরি আইনে মাইনাস টু করার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্র ঘোষণা করে পদক্ষেপ নিয়েছিল। শুধু স্মরণ করে দিতে চাই জনগণ এবং তৃণমূল নেতাকর্মীদের দৃঢ়তার জন্য মাইনাস টু করা সম্ভব হয়নি। যারা ১/১১ এর কুশিলব ছিলেন তারা বিদেশে পালিয়ে আছেন কিন্তু দুই নেত্রী বাংলাদেশে আছেন। আজকে সেই ১/১১ এর যারা ধারাবাহিকতার সরকার তাদেরকে দিয়ে সেই ১/১১ এর যারা কুশিলব যারা মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছিল তারা সুকৌশলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে মাইনাস ওয়ান করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে।

বিএনপির এই নীতি নির্ধারক বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে যদি অন্যায়ভাবে কোনো রায় চাপিয়ে দেয়া হয় তাহলে এদেশের জনগণের সেন্টিমেন্টের উপর রায় দেয়া হবে। এ দেশের জনগণের বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি যে সমর্থন সে সমর্থনের বিরুদ্ধে রায় দেয়া হবে। বেগম জিয়া যে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে সেই গণতন্ত্রের ওপর আঘাত হবে। খালদা জিয়ার বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে রায় দেয়া হলে জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে রায় দেয়া হবে। তাই এই রায় শুধু খালেদার বিরুদ্ধে রায় নয়। আমরা আগে থেকেই বলছি এই রায় যদি চাপিয়ে দেয়া হয় তাহলে এদেশের জনগণ তা গ্রহণ করবে না। সারা দেশের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষ খালেদা জিয়ার ওপর নির্ভরশীল। খালেদা জিয়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে এটা তাদের বিশ্বাস। বেগম জিয়া জনগণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিবে এটা তাদের বিশ্বাস। অতত্রব যদি অন্যায়ভাবে কোনো রায় হয় তা জনগণের বিশ্বাসের ওপর আঘাত করা হবে। আঘাত হবে গণতন্ত্রের ওপর জনগণের অধিকারের উপর।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি কি হয় তার ওপর নির্ভর করবে রাজনীতিতে সম্পূর্ণ পরিবর্তন এবং নতুন মোড় নিবে। ভবিষ্যতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপিকে বাহিরে রেখে আমাদেরকে জেলে রেখে এই দেশের জনগণ আবার ২০১৪ মতো নির্বাচন একাদশ জাতীয় নির্বাচনক হতে দিবে না। সেজন্য বলছি ৮ ফেব্রুয়ারির উপর নির্ভর করছে আগামী দিনের রাজনীতি আগামী দিনের নির্বাচন। আবারো বলতে চাই খালেদা জিয়াকে ছাড়া বিএনপিকে ছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে না এবং হতে দেয়া হবে না।

সম্প্রতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার বিষয়ে বিএনপির এই প্রবীণ নেতা বলেন, গতকাল কেবিনেটে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে। এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৫৭ ধারা অত্যন্ত বিতর্কিত। এই ধারা সকল সাংবাদিক সকল মুক্তমনা মানুষ বাতিল চেয়েছিল। খসড়া রায়ে ৫৭ ধারা বাতিলের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তার পরিবর্তে যে ধারা আনা হয়েছে তা এই ৫৭ ধারা থেকেও আরো ভয়ংকর। নতুন আইনে শাস্তি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এবং যে যে কাজ করলে ৫৭ ধারায় অভিযুক্ত হওয়ার কথা ছিল সেগুলোকে আরো সম্প্রসারিত করা হয়েছে। ৫৭ ধারাকে বাদ দিয়ে মানুষের চোখকে ফাঁকি দেয়ার জন্য একটা প্রতারণা করে ৫৭ ধারা থেকে আরো ভয়ংকর ধারা সংযোজন করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধনী তারা খসড়া চুড়ান্ত করেছেন। আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

ড. মোশাররফ বলেন, অনুসন্ধানী কিছু প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদেরকে কিছু কাজ গোপনে করতে হয়। এখন তা করা যাবে না। এভাবে বাকশালী কায়দায় সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়েছিল। সব সংবাদপত্র বাতিল করে ৪টা রাখা হয়েছিল। আমরা মনে করি যেহেতু সরকার অলিখিত বাকশালের পথে হাটছে, মুক্তমনের ব্যক্তিদের মতপ্রকাশের শক্তিকে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করার জন্য এই আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা এদেশে পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চাই।

(জাস্ট নিউজ/ওটি/১৫৪০ঘ.)