দেশ ডুবছে, প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে ছুটি কাটাচ্ছেন: বিএনপি

দেশ ডুবছে, প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে ছুটি কাটাচ্ছেন: বিএনপি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘আজকে উত্তরবঙ্গ থেকে শুরু করে ঢাকা এবং আশেপাশের জেলাগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, জামালপুরে মানুষ বানের পানিতে ভেসে যাচ্ছে। গবাদিপশু ভেসে যাচ্ছে। গোটা দেশ তলিয়ে যাচ্ছে। কোথাও সরকারি ত্রাণ নেই। সর্বত্রই ত্রাণের জন্য হাহাকার। অথচ প্রধানমন্ত্রী ১৮ দিনের ছুটিতে চলে গেলেন লন্ডন। তিনি সেখানে গিয়ে বৈঠক করছেন। এই হচ্ছে এই সরকারের দায়িত্ব। কারণ তাদের তো নির্বাচন, ভোট ও জনগণ লাগে না। যারা রাতের অন্ধকারে ভোট করে তাদের দায়িত্ব তো এরমকই হবে।’

সোমবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘জনরোষেই বেগম খালেদা জিয়ার পতন হয়েছে’ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী আহমেদ বলেন, ‘জনরোষ নয় শেখ হাসিনার রোষেই বন্দি করা হয়েছে গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে।’

তিনি সরকারী দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘জনগণ একটু মত প্রকাশের স্বাধীনতা পেলেই আওয়ামী লীগ রাজপথ তো দূরে থাক, গলিপথ দিয়েও পালানোর পথ পাবে না। জনগণ ফুঁসে উঠলে কারো গায়ে মুজিব কোট থাকবে না।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মানুষের সামনে উন্নয়নের নামে ফানুস উড়ায়। আসলে তারা বিগত ১০ বছর ধরে জোর করে ক্ষমতায়। কোনো উন্নয়নই হয়নি। আজকে ঢাকা থেকে গাজীপুরে যেতে সময় লেগে যায় ৫ ঘন্টা। ময়মনসিংহ যেতে সময় লাগে ৭ ঘন্টা। বৃষ্টি হলেই খানাখন্দ হয়ে যায় সড়ক। দেশের কোনো উন্নয়নই হয়নি। আসলে উন্নয়ন আওয়ামী লীগ নেতাদের ঠোঁটে এবং মুখে।’

দেশের গুম-খুন-ধর্ষণ প্রসঙ্গে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘আজকে ক্রসফায়ার আর গুমের মাধ্যমে মানুষকে নিরুদ্দেশ করে দেয়া হচ্ছে। দেশের সব মানুষকেই তারা নিরুদ্দেশ করতে চায়। সে কারণে শিশুখাদ্যে (দুধ) অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংস করতে চায়। ব্যাগের মধ্যে শিশুর ছিন্ন মাথা পাওয়া যাচ্ছে। শিশু থেকে বৃদ্ধা পর্যন্ত ধর্ষিত হচ্ছে। আজকে ফেনী থেকে বরগুনা সর্বত্রই শুধু আহজারি, শুধু কান্না। এটাই আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার উন্নয়ন। অথচ ঢাকায় ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করেছে। সেদিকে সরকারের নজর নেই। তাদের নজর হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের দিকে, সোনালি ব্যাংকের দিকে, রূপালী ব্যাংকের দিকে, সরকারি ট্রেজারিগুলোর দিকে। কারণ সেখান থেকে টাকা তুলে নিয়ে তারা কানাডা, মালয়েশিয়াতে সেকেন্ড হোম ও বেগম পল্লী বানাবে।’

মৎস্যজীবী দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে রিজভী আরো বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মৎস্যজীবী দলকে গুরুত্ব দিতেন। তাই আপনাদের দায়িত্ব হলো দেশের সব মৎস্যজীবীদেরকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। তাদের দুঃখ, দুর্দশায় পাশে দাঁড়াতে হবে। গণতান্ত্রিক ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে হবে। তাহলেই মৎস্যজীবীদলের সার্থকতা আসবে।

মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাবের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আব্দুর রহিমের পরিচালনায় সাধারণ সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজল বক্তব্য রাখেন। এসময় আহ্বায়ক কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এমআই