সিনহা হত্যাকান্ডের তদন্ত রিপোর্ট মিডিয়ায় প্রকাশের দাবি বিএনপির

সিনহা হত্যাকান্ডের তদন্ত রিপোর্ট মিডিয়ায় প্রকাশের দাবি বিএনপির

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যাকান্ডের তদন্ত রিপোর্ট গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিযেছে তদন্ত কমিটি। এই রিপোর্ট মিডিয়ায় প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা।

মঙ্গলবার সংসদ ভবনের মূল ফটকের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই দাবি জানান বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশিদ।

তিনি বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন গত ৩১শে জুলাই বাংলাদেশে যে বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা এবং তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তার পরিবার আদালতে যে মামলা দায়ের করেছে সেটি এখনো বিচারাধীন রয়েছে। এই ক্ষেত্রে সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। এই তদন্ত কমিটি গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি রিপোর্ট দাখিল করে। আপনাদের সংবাদ মাধ্যমের উচলিায় যে তথ্যগুলো পেয়েছি সেটি আমাদের খুব উদ্বিগ্ন করেছে। কারণ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটির ক্ষেত্রে যে তথ্য আমরা পেয়েছি, আমরা আশা করব এর পূর্ণাঙ্গ তথ্যটি মিডিয়ায় প্রকাশিত হোক।

এতে জনগণ আরো পরিস্কার হবে যে তদন্ত কমিটি কি কাজ করেছে। এই বিষয়টি আমাদেরও জানা দরকার এস কে সিনহা কেন হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন? এর উদ্দেশ্য কি ছিল? কেন তাকে হত্যা করা হয়েছে? এই কারণগুলো নিশ্চয়ই আমরা এই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানতে পারবো। তারপরে আমরা এই বিষয়ে আমাদের মন্তব্য করতে পারবো। হারুন বলেন, আমি মনে করি এই হত্যকান্ড গোটা রাষ্ট্রের ভিত্তিকে নাড়া দিয়েছে। বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড আজকে যেভাবে মহিরু আকার ধারণ করেছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে এ দেশের নাগরিকদের উপর্যুপুরি হত্যা করা হচ্ছে। এরপর বিভিন্ন গল্প বানানো হচ্ছে এইসব বিষয় নিয়ে সত্যিই আমরা উদ্বিগ্ন। এখানে সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। গুম এবং বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের বিষয়ে জাতিসংঘ যে সনদ তৈরী করেছে সেখানে বাংলাদেশ ওই আইনে এখনো স্বাক্ষর করেনি। তাহলে কি আমি ধরে নিবো যে সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড প্রলম্বিত করতে চায়। আমরা এসকল ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি যে, জাতিসংঘের যে আইন বা সনদটি রয়েছে বাংলাদেশ অবশ্যই এই আইনে স্বাক্ষর করবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে সাংসদ বলেন, সিনহা হত্যান্ডের ঘটনায় যেহেতু ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে আদালত মামলাটি গ্রহণ করেছে এবং সেটা তদন্ত হচ্ছে। সুতরাং এর পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এধরনের উচ্চ তদন্ত কমিটি দিয়ে বিচারকে প্রভাবিত করবে কিনা। কারণ আজ হোক, কাল হোক এটাতো প্রকাশিত হবে। যখন তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশিত হবে এবং এজহারে চার্জশিট যখন দাখিল করা হবে তখন তদন্ত কমিটির রিপোর্টের সঙ্গে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের সঙ্গে কোন সংঘর্ষ তৈরী হয় কিনা, বিচার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে এটা কোন বাধা সৃষ্টি করবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়। ওসি প্রদীপের ফোনালাপ নাকি তদন্ত কমিটি পায়নি। কিন্তু আমরাতো গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এগুলো শুনেছি। তাহলে এগুলো কি সত্য নয়? আমরা এখনো আশাবাদি যে এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িতর তাদের প্রকৃত অর্থে বিচার হবে। এ সময় বিএনপির সাংসদ মোশাররফ হোসেন এবং আমিনুল ইসলাম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

এমজে/