কোয়ারেন্টিন পরিবেশেই আছেন খালেদা জিয়া

কোয়ারেন্টিন পরিবেশেই আছেন খালেদা জিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। কোয়ারেন্টিন পরিবেশেই দিন কাটছে তার। গতকাল শনিবারও তার চেকআপ হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা আগের মতোই আছে। করোনার কারণে কারাগার থেকে বাসায় আসার পর থেকেই তিনি বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করে দিনযাপন করছেন।

গতকাল খালেদা জিয়ার চেক আপ করেছেন ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও তার ভাগ্নে ডা: মামুন। তিনি বলেন, ‘আমি প্রায় প্রতিদিনই চেকআপের জন্য তার বাসায় যাই। আমি যখন যাই তখন আমার সাথে টেকনোলজিস্ট সবুজও যান। আমরা ডায়াবেটিস ও অন্যান্য বিষয় নিয়মিত চেকআপ করি। তবে করোনা পরীক্ষার জন্য তার কোনো নমুনা নেয়া হয়নি।’

কারাগারের চৌহদ্দি থেকে মুক্তি পেয়ে একরকম ‘গৃহবন্দী’ অবস্থায় দিন পার করছেন খালেদা জিয়া। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ শর্তযুক্ত মুক্তির পর থেকেই গুলশানের বাসভবনে অন্তরীণ রয়েছেন তিনি।

সরকারের তরফ থেকে বেঁধে দেয়া মুক্তির শর্ত হচ্ছে- খালেদা জিয়া বাসায় চিকিৎসা নেবেন, বিদেশে যেতে পারবেন না। এর মধ্যে দুই দফা ছয় মাস করে তার মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার।

প্রায় ১৪ মাস ধরে কারাগারের বাইরে রয়েছেন ৭৫ বছর বয়সী অসুস্থ খালেদা জিয়া। এই পুরো সময়টাই গুলশানের ফিরোজায় একান্ত জীবনযাপন করছেন তিনি। দলীয় কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেননি। এমনকি কোনো আলাপচারিতায়ও ছিলেন না। কদাচিৎ দলের কাউকে কাউকে সাক্ষাৎ দিলেও করোনার কারণে তা হয়েছে সতর্কতা মেনেই। বিএনপির নেতারা বলে আসছেন, বেগম খালেদা জিয়া তিন বছর ধরে বন্দী রয়েছেন। গত মার্চে কারাগার থেকে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হলেও তিনি মূলত গৃহবন্দী।

পারিবারিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, একান্তই পারিবারিক পরিমণ্ডলে দিন কাটছে খালেদা জিয়ার। বোন ও ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরা নিয়মিতই তাকে দেখতে যান। বিদেশ থেকে পরিবারের সদস্যরা ভার্চুয়ালি তার সাথে যোগাযোগ রাখেন। নাতনীদেরও সময় দেন তিনি।

পরিবারের ঘনিষ্ঠ একজন সদস্য গতকাল জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে করোনার কারণে তার সঠিক কোনো চিকিৎসা এখনো শুরু হয়নি। তার হাত-পায়ের ব্যথা তেমন কোনো উন্নতি নেই। গৃহকর্মী ফাতেমাসহ পারিবারের সদস্যরা খালেদা জিয়ার দেখভাল করেন। এ ছাড়া দু’জন নার্স রয়েছেন, তারাও সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে থাকেন। খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দায়িত্বে আছেন লন্ডনে অবস্থানরত পুত্রবধূ ডা: জোবায়দা রহমানও।

অস্টিও আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছেন খালেদা জিয়া। তার মেরুদণ্ড, বাম হাত ও ঘাড়ের দিকে মাঝে মধ্যে শক্ত হয়ে যায়। দুই হাঁটু প্রতিস্থাপন করা আছে। তিনি ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খান। বাম চোখেও একটু সমস্যা রয়েছে তার।

বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য জানান, পরিবারের সদস্যরা নিয়মিতই ম্যাডামের খোঁজখবর রাখেন। তারা বাসায়ও যান।

জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চায় বিএনপি। সরকারের কাছে এ দাবিও জানিয়েছে দলটি। তবে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় আপাতত বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে সক্রিয় কোনো চিন্তা নেই নীতি-নির্ধারকদের।