বাংলাদেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে: বিএনপি

বাংলাদেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে: বিএনপি

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের চলমান সংলাপ প্রসঙ্গে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেছেন, প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি বলেছেন আমার হাতে ক্ষমতা খুব সীমিত। আসলে তার হাতে কোন ক্ষমতা নাই। প্রেসিডেন্ট সংলাপে ডেকেছেন রাজনৈতিক দলগুলোকে। আর আসল সংলাপ হচ্ছে অন্য জায়গায়। সেখানে একজন, একজন করে ডাকা হচ্ছে। কে কিভাবে তাকে জেতাতে পারবেন। কিছুদিনের মধ্যেই আমরা পত্রিকার মাধ্যমে দেখতে পাবো আরও একটি জাতীয় চোর কমিশন ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এসব এবার আর করতে পারবেন না।

সোমবার বিকেলে দলীয় কার্যালয়ের সামনে কেডি ঘোষ রোডে সাবেক ছাত্রনেতাদের সংবর্ধনা ও ছাত্র গণজমায়েত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, দেশে এখন কোনো ভোট হয়না। এখন রাতেই ভোট হয়। ডাকাতেরা জনগণের ভোটাধিকার চুরি করে নিয়ে গেছে। এখন তারা মরা মানুষের ভোটও দিয়ে দেয়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ৭ জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। এগুলোতো শুধু কান। কান টানলে মাথা এমনিতেই আসবে।

সোহেল বলেন, আজকে দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। যিনি স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী। তিনি তো রাজনীতি না করলেও পারতেন। কিন্তু দেশের মানুষ ও দেশের প্রয়োজনে স্বামীর শাহাদাতের পর বিএনপির হাল ধরেন। এরপরই শুরু হয় বেগম খালেদা জিয়ার লড়াই। স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে আন্দোলন করেছেন। আজ সেই নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দী করে রেখেছে। তাকে শত বছরের পুরনো পরিত্যক্ত একটি কারাগারে রেখেছিলেন। সেখানেই তাকে পয়জনিং করা হয়েছে। এখন তাকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এখন দেশনেত্রীর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আসলে সেটা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের রক্তক্ষরণ।

ছাত্রদলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এবার কুসুম কুসুম আন্দোলনে নামলে হবে না। নামতে হবে নামার মতো করে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসা দেয়ার দাবিতে এবং দেশনায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বর্তমান অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে। এই আন্দোলনে সামনে থেকে ছাত্রদলকেই নেতৃত্ব দিতে হবে। সমুদ্রে যেমন সাইক্লোন হয় তেমনি রাজপথেও সাইক্লোন তুলতে হবে। বাংলাদেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে।

খুলনা বিএনপির (ভারপ্রাপ্ত) সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, দেশের অসংখ্য গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সম্মুখে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রদল। আজকে দেশের জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন ছাত্রদলের সাবেক নেতারা। তাই আবারো ছাত্রদলকে জেগে ওঠে রাজপথে নামতে হবে। আমাদেরকে আর ঘরে বসে থাকলে চলবেনা। এখনই সময় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে মাঠে নামতে হবে।

ছাত্রসমাবেশ উপলক্ষে খুলনা বিভাগের যশোর, সাতক্ষীরা, মাগুরা, ঝিনাইদহ, বাগেরহাট, নড়াইল, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। এরআগে ঢাকা থেকে যশোর পৌঁছে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক মন্ত্রী মরহুম তরিকুল ইসলামের কবর জিয়ারত করেন। সংগঠনের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত তিনদিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনা মহানগর ও জেলা ছাত্রদল আয়োজিত এই সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবীদ শামীমুর রহমান শামীম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি রকিবুল ইসলাম বকুল, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, সহ-সভাপতি পার্থ দেব মন্ডল, ওমর ফারুক কাওসার, মাজেদুল ইসলাম রুমন, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানজিল হাসান, তবিবুর রহমান সাগর, রিয়াদ ইকবাল, খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল আহমেদ সুমন প্রমূখ। এছাড়া সমাবেশে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা বিএনপির আহবায়ক আমির এজাজ খান, মহানগর সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলা সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পী, মহানগর সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো. তারিকুল ইসলাম জহির ও জেলা সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক শেখ আবু হোসেন বাবু। খুলনা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল মান্নান মিস্ত্রির সভাপতিত্বে শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নগর ছাত্রদলের আহবায়ক ইসতিয়াক আহমেদ ইস্তি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা তুহিন ও মহানগর সদস্য সচিব মো. তাজিম বিশ্বাস।