দেশে খুন, ধর্ষণ, চুরি ও লুটপাট ছাড়া আর কিছুই নেই: বিএনপি

দেশে খুন, ধর্ষণ, চুরি ও লুটপাট ছাড়া আর কিছুই নেই: বিএনপি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সারা দেশে হত্যা, খুন, জখম, রাহাজানি, ধর্ষণ, চুরি ও লুটপাট ছাড়া আর কিছুই নেই। বর্তমান সরকার চুরি-ডাকাতি করতে করতে দেশকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে গেছে, যে দলের সাধারণ সম্পাদক নিজেই সে কথা স্বীকার করেছেন। ওবায়দুল কাদের কর্তৃক নেতা-কর্মীদের চুরি স্বীকার করার বিষয়টি এখন ‘ঐতিহাসিক সত্য’।

আজ শনিবার দুপুরে দিনাজপুর শহরের জেল রোড ইনস্টিটিউটের মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল। এর আগে লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বর্তমানে দেশ ও জাতি একটা ‘ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে’ মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম। আমাদের স্বপ্ন ছিল, আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল, একটা সুখী, সমৃদ্ধ, মুক্ত, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার। আজ ৫০ বছর পর এসে ব্যথা–বেদনায় আমরা হতাশ। আওয়ামী লীগ মুখে সব সময় গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার কথা বলে, কিন্তু কাজ করে তার উল্টো। বাকশাল কায়েম করে একবার তারা গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছিল। ১৯৯০ সালে সেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছি। আজকে এক যুগ ধরে আবারও গণতন্ত্রকে হত্যা করে জনগণের অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়ে, স্বাধীনতার স্বপ্নগুলোকে ব্যর্থ করে দিয়ে দেশকে সত্যিকার অর্থেই একটা স্বৈরাচারী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।’

বর্তমান সরকার বিচার বিভাগ ও প্রশাসনকে ধ্বংস করেছে বলে সম্মেলনে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, গণমাধ্যমকে দলীয়করণ করে দেশটাকে নিজের জমিদারি ও পৈতৃক সম্পত্তি মনে করে ধ্বংসের পথে নিয়ে গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি মানবাধিকার সংগঠনের রিপোর্টের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার যে বিচার, সেটা রাজনৈতিক বিচার হচ্ছে। তাঁকে যে কারাগারে দেওয়া হয়েছে, সেটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে দেওয়া হয়েছে। এ কথা সবার জানা, নতুন করে ঢাকঢোল পিটিয়ে বলার কিছু নেই।

বক্তব্যের শেষে তরুণদের উদ্দেশে মহাসচিব বলেন, ‘আজকে দেশের মানুষ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। ২০২৩ সালের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে, সমৃদ্ধশালী নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। যেখানে নির্যাতন-নিপীড়ন থাকবে না। যেখানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকবে, গণতন্ত্রের চর্চা থাকবে।’

সম্মেলনের আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রেজিনা ইসলাম। এ সময় বক্তব্য দেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব, দিনাজপুর পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

এক যুগ পর দিনাজপুর জেলা বিএনপির সম্মেলন হচ্ছে। এর আগে সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১০ সালের ২৬ জানুয়ারি। পরবর্তী সময়ে ২০১৬ সালে ২৬ আগস্ট ওই কমিটি ভেঙে যায় এবং আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এবার সম্মেলনে সভাপতি পদে ৪ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ২ জনসহ মোট ৭টি পদে ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উপজেলা ও পৌরসভার ২০টি ইউনিটের ১ হাজার ৯১৯ জন কাউন্সিলর দলীয় কার্যালয়ে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।