হামলার প্রতিবাদে রবিবার সারা দেশে বিক্ষোভ

বিএনপিকে রাজপথ থেকে সরানো যাবে না: মির্জা ফখরুল

বিএনপিকে রাজপথ থেকে সরানো যাবে না: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এভাবে সন্ত্রাসী হামলা করে, আহত করে, জখম করে, হত্যা করে, গ্রেপ্তার করে আন্দোলনকে দমিয়ে রাখা যাবে না, বিএনপিকে রাজপথ থেকে সরানো যাবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার পল্লবীতে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার পরও সেখানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

শুক্রবার সকালে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি ও ভোলায় নুরে আলম, আবদুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধান হত্যার প্রতিবাদে জনমত তৈরির জন্য আমরা ঢাকায় ১৬টি স্থানে কর্মসূচি পালন করছি। পল্লবী জোনে সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল ডি ব্লকের ঈদগাহ মাঠে। পরে পুলিশ কর্তৃপক্ষ বেলা একটায় মুকুল ফৌজ মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়। যখন আমাদের কর্মী ভাইয়েরা মঞ্চ তৈরি করছিলেন, ঠিক তখনই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে আক্রমণ করে। এতে আমাদের প্রায় ৭৫ জন আহত হয়েছেন। পরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ জনকে।’

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘গতকাল আক্রমণকারীদের প্রতিহত করার জন্য আমাদের নেতা-কর্মীরা যখন দাঁড়িয়ে থাকেন, তখন তাঁদের সরিয়ে দিতে পুলিশ তাঁদের ওপর লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস এবং শেষে গুলি করে। পুলিশের ভূমিকা হওয়া উচিত নিরপেক্ষ থাকা। কিন্তু পুলিশ পুরোপুরিভাবে গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের পক্ষে কাজ করছে।’

গতকাল ঢাকাসহ সারা দেশে বিএনপির সমাবেশে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ১৮ সেপ্টেম্বর সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরসহ সব মহানগর, জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ হবে। ঢাকায় নয়াপল্টনে বেলা তিনটায় এই সমাবেশ হবে।

আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী শক্তি

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের অধিকারকে হরণকারী শক্তি। আওয়ামী লীগ অতীতেও একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল, এখনো তারা একই উদ্দেশ্যে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আমরা মনে করি, পুরোপুরিভাবে উসকানি দিয়ে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনষ্ট করা, বিরোধী দলকে রাজনীতি এবং নির্বাচনী মাঠ থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য তারা এই কাজগুলো করছে।’

নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস করছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ যে কাজটি করতে চাইছে, তা হচ্ছে যেন এখানে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ তৈরি না হয়, যাতে নিরপেক্ষ সরকার কিছুতে করা না যায় এবং তাদের একদলীয় শাসনব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করতে তারা এমন নির্বাচন করতে চায়, যে নির্বাচনে কোনো বিরোধী দল থাকবে না।

হামলায় কারা জড়িত

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান পল্লবীর সমাবেশে হামলার ঘটনায় ১৩ জন জড়িত থাকার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘এসব আক্রমণ করে কোনো লাভ হবে না। ঢাকায় আমাদের যে কর্মসূচি ২৮ তারিখ পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়েছে, সেই কর্মসূচি চলবে। যেকোনো প্রতিকূলতার মধ্যে এই কর্মসূচি ইনশা আল্লাহ অব্যাহত থাকবে।’

পল্লবীর সমাবেশে হামলার নিন্দা জানিয়ে মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘আমাদের একটাই কথা, মাঠে আমরা এখনো নামিনি, মাত্র নামছি। মাঠে থেকে গুলি করে মৃত্যু হলেও আমাদের ওঠাতে পারবে না। সরকারকে চিন্তা করতে হবে তারা লাশ চায়, না অন্য কিছু।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কামরুজ্জামান রতন, নাজিম উদ্দিন আলম, মহানগর উত্তরের আমিনুল হক, দক্ষিণের রফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।