বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টিতে নেই আওয়ামী লীগ: কাদের

বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টিতে নেই আওয়ামী লীগ: কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে জনগণের কষ্ট দূর করার জন্য নেত্রী (শেখ হাসিনা) রাতে ঘুমান না, ঘুমাতে পারেন না। সর্বক্ষণ এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চিন্তায় মগ্ন থাকেন। যেখানে যাঁকে প্রয়োজন যোগাযোগ করেন। বৈঠকের নিয়মিত ফলোআপ তিনি করে যাচ্ছেন। চিন্তার কোনো কারণ নেই, আমাদের নেত্রী ভাগ্যবতী। পরিস্থিতি আমরা সামাল দিতে পারব।’

সোমবার আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির ২২তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির বৈঠকে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

অভাবগ্রস্ত ও কষ্টপীড়িত লোকজনকে বিএনপি উসকানি দিচ্ছে, এমন দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি ভোট নেবে কী বলে? আমাদের যত কাজ, তত প্রচার নেই। ফেসবুকে আমাদের উপস্থিতিটা একেবারেই দুর্বল।’

আওয়ামী লীগের ক্ষমতার মোহ নেই দাবি করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনগণ চাইলে আছি, না হলে নেই, এটা নেত্রী বলে দিয়েছেন। ক্ষমতা আমাদের জন্য জনসেবার মহান ব্রত, ক্ষমতা কোনো মোহ নয়।’

বিএনপিকে আওয়ামী লীগের দুর্বল করা লাগবে না, এমন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা যেভাবে চলছে, নেতিবাচক রাজনীতিতে নিজেরাই দুর্বল হয়ে যাবে। নিজেরাই নিজেদের দুর্বল করার জন্য যথেষ্ট। আওয়ামী লীগের কোনো দরকার নেই। তিনি বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টি কেন করব? আমাদের সামনে দৃশ্যমান কাজ আছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অনেকেই অনেক কথা বলতে পারেন, আমি দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমরা বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টিতে নেই। তারা সম্মেলন করে না, আমরা আমাদের নিয়মিত সম্মেলনের কাজ করছি।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় সম্মেলন ও দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক কবে হয়েছে, জানতে চান কাদের। তিনি বলেন, যারা দলের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা করে না, তারা দেশের মধ্যে কীভাবে গণতন্ত্রের চর্চা করবে?

বিএনপির জনপ্রিয়তা দেখে সরকার ঈর্ষান্বিত, দলটির নেতাদের এমন দাবির জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনপ্রিয়তাটা কীভাবে বুঝব? নির্বাচনে আসেন। সেখানে প্রমাণ হবে কারা জনপ্রিয়।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির নামে কয়েকজন বসে সিদ্ধান্ত নেন বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তাঁদের দল ও সংগঠন করার দরকার নেই। তাঁদের কিছু লোক দরকার বিদেশিদের নালিশ করার জন্য। বিএনপির নেতারা সকালে ঘুম থেকে উঠেই ব্রেকফাস্ট পার্টিতে যান এবং রাতে ডিনার করেন। তাঁরা নালিশ করেন দেশের বিরুদ্ধে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।

ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরুদ্ধে অশ্রাব্য ভাষায় অপপ্রচার করা হয় জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক দলের নেতাদের বলেন, ‘এগুলোর জবাব আপনারা দেবেন না?’

প্রচার উপকমিটির সদস্যদের ফেসবুকে সরব উপস্থিতি দেখেন না বলে জানান তিনি। বলেন, কাউন্টার করবেন কে? এটা কাউন্টার করতে হবে। মিথ্যাচার ও বিষোদ্‌গারের জবাব দিতে হবে।

দলীয় নেতাদের টেলিভিশন টকশোর বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘টকশোতে অনেকেই যান। মাঝেমধ্যে সময় পেলে শুনি। কাউন্টারটা যথাযথ না হলে কাউন্টার করে লাভ নেই। কেউ কেউ আছেন, চৌকস কাউকে আমাদের প্রতিপক্ষ থেকে বেছে নেন, আমাদের এখান থেকে দুর্বল একজনকে দাঁড় করান। এটাও কিন্তু চতুরতার সঙ্গে করা হয়।’

সম্মেলনের দিন কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শুধু দুপুরবেলার খাবার সরবরাহ করা হবে বলে জানান কাদের। সম্মেলন উপলক্ষে দাওয়াত কার্ড যাতে সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করা হয়, সেই নির্দেশনা দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সম্মেলনে কাউন্সিলরদের দ্বিগুণ হচ্ছেন প্রতিনিধি। ৮ হাজারের মতো কাউন্সিলর, প্রতিনিধি হবেন ১৬ হাজার।