তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি জীবন্ত ইস্যু : মির্জা আলমগীর

তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি জীবন্ত ইস্যু : মির্জা আলমগীর

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি জীবন্ত ইস্যু। সারা বিশ্ব চায় বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন হোক।

রোববার (১১ জুন) দুপুরে গাজীপুর মহানগর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলে আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবে না। এ জন্যই এই দলের সাধারণ সম্পাদক বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি ডেড ইস্যু। কিন্তু না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি জীবন্ত ইস্যু। সারা বিশ্ব চায় বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন হোক।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের দল নয়, প্রকৃতপক্ষে তারা একটি সন্ত্রাসী দল। তাই তারা নির্বাচন চায় না। তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজই বলে দেয় তারা সন্ত্রাসী ছাড়া আর কিছুই না। তাদের সাথে ফয়সালা হবে এবার রাজপথেই।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে, দেশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে এনে, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে।

তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কেন পেরেছেন এবং আওয়ামী লীগ কেন পারে নাই এ জন্য তাদের ঈর্ষা হয়। শত্রু মারা হেলেও মানুষ শোক জানায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কোনো নেতা মারা গেলেও শোক জানায় না। জিয়াউর রহমানের নামাজে জানাজায় ৩০ লক্ষাধিক লোক কেন হলো এবং বঙ্গবন্ধুর জানাজায় কেন লোক হলো না এ জন্যও আওয়ামী লীগের গাত্রদাহ হয়।

বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু বলেন, বিএনপির লক্ষ্য একটিই- গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধার করা। বিএনপি ছাড়া যারাই ক্ষমতায় গেছে তারাই গণতন্ত্র হরণ করেছে। দেশে দুটি শক্তি- একটি গণতন্ত্রের পক্ষের, আরেকটি বিপক্ষের। বিএনপি গণতন্ত্রের পক্ষের স্বীকৃত শক্তি।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা: মাজহারুল আলম বলেন, অবৈধ এই সরকার শুধু কেন্দ্রীয়ভাবেই নয়, স্থানীয় কোনো নির্বাচনেও জনগণের রায়কে মেনে নেয় না। গাজীপুর সিটি করপোরেশন গঠনের পর নির্বাচিত কোনো মেয়রকেই দায়িত্ব পালন করতে দেয়নি। একজন কাউন্সিলরকে দিয়ে গত দুটি নির্বাচিত পরিষদ পরিচালনা করে ১২ লাখ ভোটারকে অপমান করা হয়েছে।

এদিকে, দলের মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সম্মেলনে বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থক নিয়ে অংশ নেন সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অভিযোগে বহিষ্কৃত নেতারা। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় শোডাউন করেছেন সদর মেট্রো থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সভাপতি নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: আজমল হোসেন ভূইয়া। তিনি বিশাল মিছিল নিয়ে সম্মেলনে যোগ দেন।

দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ায় তাকেসহ মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৩১ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছিল বিএনপি। সম্মেলনে বহিষ্কৃত নেতাদের অধিকাংশকেই দলবল নিয়ে যোগদান করতে দেখা যায়।

মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক এম মঞ্জুরুল করীম রনির সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মো: শওকত হোসেন সরকারের সঞ্চালনায় নগরীর বাসন থানার টেকনগ পাড়ায় সাগর সৈকত কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ।

বক্তব্য দেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু, সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর খান, কেন্দ্রীয় নেতা মো: ওমর ফারুক সাফিন, ডা: মাজহারুল আলম, সাঈদ সোহরাব, আবু আশফাক, কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল, মেয়র মো. মজিবুর রহমান, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান, মহানগর বিএনপি নেতা মীর হালিমুজ্জাামান ননী, রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান এলিস, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম শামীম, মো: সুরুজ আহমেদ, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি প্রভাষক বসির উদ্দিন, টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাভেদ আহমেদ সুমন, বাসন থানা বিএনপির সভাপতি তানভীর সিরাজ, গাছা থানা বিএনপির সভাপতি মনিরুল ইসলাম বাবুল, কোনাবাড়ি থানা বিএনপির সভাপতি মো: ইদ্রিস আলী, কাশিমপুর থানা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আলী হোসেন, পূবাইল থানা বিএনপির সভাপতি মনিরুল ইসলাম বকুল, সদর মেট্রো থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম টুটুল, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক এজিএস সাজেদুল ইসলাম, মহানগর কৃষকদলের সভাপতি আতাউর রহমান, মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক শাহাদাৎ হোসেন শাহীন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রুহানুজ্জামান শুক্কুর, মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী শিরিন চাকলাদার, বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।