ঢাকার জনসমুদ্র থেকে সরকারকে ক্ষমতার ছাড়ার চূড়ান্ত আল্টিমেটাম

ঢাকার জনসমুদ্র থেকে সরকারকে ক্ষমতার ছাড়ার চূড়ান্ত আল্টিমেটাম

ভিন্ন এক ঢাকা! চেনা সব অলি-গলি, সড়ক, রাজপথ কোথাও পা ফেলার জায়গা নেই যেন। পঞ্চগড়, রাজশাহী, জামালপুরসহ দেশের নানান প্রান্ত থেকে মুক্তিকামী মানুষ এসে ভীড় জমিয়েছেন ঢাকায়। তাদের সবার গন্তব্য নয়াপল্টন। মুখে সরকারের পতন আর গণতন্ত্রের মুক্তির নানান স্লোগান, হাতে হাতে ব্যানার, ফ্যাস্টুন। সকাল গড়িয়ে বেলা বাড়ার আগেই তিল ধারণের ঠাঁই ছিলোনা নয়াপল্টনে। লাখো লাখো জনতার জনসমুদ্র ধীরে ধীরে বিস্তৃত হয়ে পড়ে পুরো ঢাকা শহরজুড়ে। এযেন পুরো মিছিলের নগরী। জনতা যুদ্ধে নেমেছে অধিকার আর গণতন্ত্র মুক্তির লড়াইয়ে। দীর্ঘ দিনের ফ্যাসিবাদের যাতাকলে পিষ্ট মুক্তিকামী এ মানুষেরা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আর তাদের মদদপুষ্ট আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর চোখ রাঙানি আর প্রতিবন্ধকতা পাশ কাটিয়ে একে একে নয়াপল্টনের সমুদ্রে যোগ দেয় আন্দোলনের বার্তা শোনার অপেক্ষায়।

বিকালে ডায়াস থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ঘোষণার মুহূর্তে লাখো নেতা-কর্মী স্লোগানে স্লোগানে তাকে স্বাগত জানান। চারপাশ মুখর হয়ে উঠে সরকারের পতন আর গণতন্ত্র মুক্তির স্লোগানে। জনতার অধীর অপেক্ষায় বাড়তি মাত্রা যোগ করে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেয়া বক্তব্য। 

বক্তব্যের শুরুতে তারেক রহমান বলেন, আজকে বাংলাদেশের সকল মুক্তিকামী গণতন্ত্রকামী জনতা জেগে উঠেছে। আজকে পল্টনের এই পিচঢালা পথে লাখো লাখো মানুষ তার প্রমাণ।

তিনি বলেন, আজকে আপনারা এই সমাবেশে উপস্থিত হয়েছেন। এই সমাবেশ শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশ নয়, আজকের এই সমাবেশ সমগ্র বাংলাদেশের তরুণ, ছাত্র, যুবক, নারী শিশু সকল শ্রেণী পেশার মানুষের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তোলার সমাবেশ।

মহাসমাবেশকে বাংলাদেশের ১২ কোটি মানুষের লুন্ঠিত ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ উল্লেখ করে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আজ এই লাখো জনতার দিকে সমগ্র বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ প্রত্যাশা নিয়ে তাকিয়ে আছে। কোন সেই প্রত্যাশা? সেই প্রত্যাশা হচ্ছে যে আজকে আপনারা এই লাখো মানুষ যারা উপস্থিত হয়েছেন বাংলাদেশের সর্বত্র থেকে সকল কর্নার থেকে আপনারা যারা উপস্থিত হয়েছেন, বাংলাদেশের কোটি মানুষের প্রত্যাশা তাদের হারিয়ে যাওয়া অধিকার, তাদের হারিয়ে যাওয়া ভোটের অধিকার, তাদের হারিয়ে যাওয়া গণতান্ত্রিক অধিকার, তাদের হারিয়ে যাওয়া নিরাপত্তা, মানুষের হারিয়ে যাওয়া সেইসব অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে আপনারা ফিরে যাবেন।

তিনি বলেন, আজ যদি এই সমাবেশ ব্যর্থ হয় তাহলে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়ে যাবে। এই বাংলাদেশ ব্যর্থ হতে পারে না। কারণ লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে এই দেশকে স্বাধীন করা হয়েছে।

তরুণ প্রজন্মকে উদ্দেশ্য করে তারেক রহমান বলেন, আমার সামনে উপস্থিত তরুণ প্রজন্মসহ লাখো ভাই বোনেরা, আপনাদের কাছে আজকে আমার জিজ্ঞাসা, আপনাদের সকলের কাছে আমার জিজ্ঞাসা। আপনারা কি সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত? আপনারা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুতু তাহলে আসুন যে প্রত্যাশা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ এই লাখো জনতার সমাবেশের দিকে তাকিয়ে আছে, বাংলাদেশের মানুষের সেই প্রত্যাশা পূরণ না করে,  এই সমাবেশের লাখো জনতা ঘরে ফিরে যাবে না। এই হোক আমাদের আজকের প্রতিজ্ঞা। এই হোক আজকে আমাদের শপথ। বাংলাদেশের মানুষের হারানো অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে, বাংলাদেশের মানুষের হারানো অধিকার পুনরুদ্ধার করে, এই জনতা ঘরে ফিরে যাবে। সংগ্রামের জন্য সকলে প্রস্তুত কিনা? হাত তুলে সমগ্র দেশকে,  সমগ্র বিশ্বকে দেখিয়ে দিন। দেশ বিদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ দেখে নাও, বাংলাদেশের জনগণ প্রস্তুত তাদের হারানো অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য।

এরপর প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকার পতনের একদফা দাবিতে শনিবার ঢাকার সব প্রবেশপথে সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন। আর তার এ ঘোষণাকে স্বাগত জানান উপস্থিত নেতা-কর্মীরা।

শুক্রবার বিকালে নয়াপল্টনে আয়োজিত মহাসমাবেশ থেকে এই ঘোষণা দেন তিনি।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। জনগণের ওপর অত্যাচার নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়েছে। আমাদের সামনে এখন একটিমাত্র লক্ষ্য, আমরা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ ফিরে পেতে চাই।

কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি বলেন, আশা করবো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের সহযোগিতা করবে। প্রশাসন এবং সরকার যেন সহযোগিতা করে সেই প্রত্যাশা আমরা করছি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। কারণ তাদের অধীনে কোনো নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারবে না। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।

বিপুল লোক সমাগমের মহাসমাবেশ থেকে বিএনপি নেতারা সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকারের পদত্যাগ ছাড়া কোনো পথ নেই। বেলা সোয়া ২টায় সমাবেশ শুরুর পর দফায় দফায় তুমুল বৃষ্টি হলেও বিএনপি’র লাখো নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে অবস্থান করে নেতাদের বক্তব্য শোনেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

মহাসমাবেশে অংশ নেন বিএনপির কয়েক লাখ নেতাকর্মী। ভোর থেকেই তারা নয়াপল্টনের সমাবেশস্থলে জড়ো হন দলটির নেতাকর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নয়াপল্টনে বাড়তে থাকে ভিড়। লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে পুরো এলাকা। সমাবেশের আগেই কাকরাইল মোড়, মালিবাগ, শান্তিনগর, কমলাপুর, শাপলা চত্বর,  দৈনিক বাংলা ও পুরানা পল্টনে নেতাকর্মীদের ঢল নামে।  পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে সড়কে মিছিল করেন তারা। বিএনপির নেতা-কর্মীরা সরকারবিরোধী স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন এসব এলাকা। দুপুরে বৃষ্টি নামলেও নেতাকর্মীদের সড়কে অবস্থান করতে দেখা গেছে। 

বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে ৯টি ট্রাকের উপর তৈরি অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য রাখেন নেতারা। আগে আসা নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে সকাল থেকেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাসাস। নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসে। সাদা, নীল, লাল, সবুজ ও হলুদ টুপি মাথায় হাজার হাজার নেতাকর্মী মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে স্লোগান দেন।  মানুষের ভিড় ও চাপ বাড়তে থাকায় সকাল থেকে নয়াপল্টনের দুই পাশের সড়কে যান চলাচল পুলিশ বন্ধ করে দেয়।  দুপুর  সোয়া ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসমাবেশ শুরু করে বিএনপি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আশা করবো প্রশাসন কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে দিয়ে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবে।

বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের ছয়শ’ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ৪০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। গত দুইদিনে মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করে কী আমাদের থামানো যাবে? আমরা পুলিশকে, প্রশাসনকে বলতে চাই, আপনারা এই ভয়াবহ একটা দলীয় সরকারের বেআইনি আদেশ-নির্দেশে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না।’

সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে লুটপাট করছে। স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়েছে। ডেঙ্গুর কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না। সরকার সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে ভোটের অধিকার নষ্ট করে। মানুষ এখন ভোট দিতে যায় না। ঢাকা-১৭ আসনে ভোটে কী হয়েছে? ওখানে তাকেও (হিরো আলম) সহ্য করতে পারেনি। মেরেছে, পিটিয়েছে। তারপরও দেখা গেল মাত্র ৫ শতাংশ ভোট দিয়েছে। নেত্রকোনায় ভোট হয়েছে। কেউ অংশ নেয়নি আওয়ামী লীগ ছাড়া। 

চলমান আন্দোলন নিয়ে ফখরুল বলেন, আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই একমত হয়েছি, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

সরকার আবারো ভোট চুরির নির্বাচন করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আবারো জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে ক্ষমতায় আসতে চায়। সেই সুযোগ আর পাবে না। শুধু আমরা নই, বাইরের দেশগুলোও বলছে তারা বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায়। তাদের (সরকার) অপকর্মের জন্য র‌্যাবের ওপর মার্কিন সরকার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য ভালো খবর নয়। আমাদের ছয় শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাগারে। লাখ লাখ মামলা দেয়া হয়েছে নেতাকর্মীদের নামে।

একদফা আন্দোলনের লক্ষ্য তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সমস্ত দলগুলো, যারা আন্দোলনে থাকবে, তাদের নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবো। আজকে আমরা শুধু একা নই। বাইরের দেশগুলো, আন্তর্জাতিক বিশ্ব তারাও বলছে তারা বাংলাদেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। সরকারকে আবারো আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বেআইনি গ্রেপ্তার বন্ধ করুন, যারা কারাগারে আছেন তাদের ছেড়ে দিন। খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। ভালো চাইলে আমাদের একদফা দাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করুন।

মহাসমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ফখরুল বলেন, সবাই ক্লান্ত নাকি? যুদ্ধ করতে হবে। লড়াই, সংগ্রাম করতে হবে না? ক্লান্ত হলে হবে না। নতুন ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে হবে তরুণদের। এজন্য আমাদের লড়াই, সংগ্রাম করতে হবে। এ সময় তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটি কবিতার অংশবিশেষ শোনান।  

মহাসমাবেশে ‘চমক’ আছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আপনাদের উদ্দেশ্যে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্য দেবেন। পরে তারেক রহমানের একটি অডিও বক্তব্য প্রচার করা হয়। 

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দেশের মানুষ খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়। কিন্তু আদালত তাকে জামিন দিলো না কেন?  কারণ, এই উচ্চ আদালত, নিম্ন আদালত শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় রাখতে চায়। সুতরাং যে আদালতে শেখ হাসিনার হাতের মুঠোয়, যে প্রশাসন তার হাতের মুঠো থেকে বেরুচ্ছে না সেই অবস্থায় ফয়সালা করতে হবে রাজপথে। যারা ঢাকায় আছেন, তারা ঢাকায় থাকেন। শেখ হাসিনার পদত্যাগের আগ পর্যন্ত ঘরে ফিরবেন না। 

ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আমরা বাংলাদেশে নতুন করে গণতন্ত্র কায়েম করবো। খালেদা জিয়ার নির্দেশক্রমে, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে। আজকের মহাসমাবেশ এই প্রত্যয় ব্যক্ত করছে। 

সরকারের সমালোচনা করে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হবে, এটা ভুলে যান। সংবিধান রেখেছেন, সংবিধান তো গিলে খেয়ে ফেলেছেন। এখন কোনো সংবিধান আছে? নির্বাচন কমিশন আছে? আমার বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার আবার চুরি করবেন, এটা হবে না। সংবিধান আপাতত একদিকে থাকুক।

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে এখানে (নয়াপল্টন এলাকায়) ইন্টারনেট নাই। বিএনপি’র যখন সমাবেশ হয় তখন ইন্টারনেট থাকে না। যারা এই ইন্টারনেট বন্ধের পেছনে কাজ করছেন তারা ভোট চোরদের দালাল হিসেবে কাজ করছেন।  আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই ভোট চোরের দালালরা সাবধান হয়ে যান। আপনারা  ভোট চোরের দালাল হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেছেন, আপনারা ভোট চুরির প্রকল্পে কাজ করছেন। 

সভাপতির বক্তব্যে মির্জা আব্বাস বলেন, এক হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে কি সমাবেশ আটকে রাখা গেছে। যায়নি, সামনেও যাবে না। অনুমতি নিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন করা যাবে না। এবারও চাইনি। শুধু অবহিত করেছিলাম। আমাদের অনুমতির আর কোনো প্রয়োজন নেই। আজকের এই জনসমুদ্র রায় দিয়ে গেলো, আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আর কেউ বাধা দিতে পারবে না। জনগণ ফুঁসে উঠেছে। এদের আর থামাতে পারবেন না।

তিনি বলেন, একমাত্র রাস্তা হলো ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া। আমাদেরও দাবি তাই। সরকারের পদত্যাগ এবং ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। জনগণ এই সরকারের পাশে নাই।

মহাসমাবেশে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান এবং দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সঞ্চালনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বরকত উল্লাহ বুলু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আযম খান, জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনু, জয়নুল আবদিন ফারুক, রুহুল কবির রিজভী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, হারুনুর রশীদ, আবদুস সালাম আজাদ, মাহবুবুর রহমান শামীম, আসাদুল হাবিব দুলু, সাখাওয়াত হোসেন জীবন, মোস্তাক মিয়া, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিলকিস জাহান শিরিন, শামা ওবায়েদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আমিনুল হক, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক খান, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, তাঁতি দলের আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।