ঢাকা, ২৭ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা পারভেজ সরকারকে অপহরণের সঙ্গে ৪ জন জড়িত ছিল। এদের সবার হাতে পিস্তল ও ওয়াকিটকি ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকার মিনার মসজিদ থেকে জুমার নামাজ পড়ে বের হওয়ার সময় তাকে একটি পাজেরো গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
পারভেজ সরকার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-২ আসন (তিতাস-হোমনা) থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। বর্তমানে কুমিল্লা উত্তরের সভাপতি তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বেলা পৌনে দুইটার দিকে মিনার মসজিদ থেকে জুমার নামাজ পড়ে কয়েক গজ দূরে লালমাটিয়ার সি ব্লকের ২৭ নম্বর সড়কে নিজ বাসার দিকে যাচ্ছিলেন পারভেজ। বাসার গেটের সামনে আসার পর প্যান্ট ও গেঞ্জি পরা এক ব্যক্তি তার সঙ্গে করমর্দন করেন। এ সময় লম্বা চুলের আরেক ব্যক্তি পেছন থেকে এসে পারভেজ সরকারের মুখ চেপে ধরেন। ঠিক ওই সময় পেছন দিক থেকে কালো রঙের একটি পাজেরো সামনে আসে। ধস্তাধস্তির পর পারভেজকে গাড়ির ভেতর ঢুকিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
পারভেজ সরকারের খালাতো ভাই ফাহাদ ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, পারভেজ সরকারকে অপহরণের সঙ্গে ৪ জন জড়িত ছিল। এদের সবার হাতে পিস্তল ও ওয়াকিটকি ছিল। দুজন বাইরে ও দুজন গাড়ির ভেতর ছিল। অপহরণকারীরা দীর্ঘ সময় পারভেজ সরকারকে অনুসরণ করছিল। ঘটনাস্থলের সামনে একটি বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া গেছে। তাতে দেখা গেছে, যে পাজেরোতে তুলে নেওয়া হয় পারভেজকে, সেটির নম্বর প্লেটে লেখা ছিল ঢাকা মেট্রো ঘ ১৪-২৫৭৭। তা ছাড়া বাসার সামনে দায়িত্ব পালনরত নিরাপত্তাকর্মীরাও গাড়ির নম্বর দেখেছেন।
পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মৃত্যুঞ্জয় দে সজল বলেন, ভিডিও ফুটেজটি অস্পষ্ট। পরিষ্কার করে কিছু বোঝা যাচ্ছে না। তাই ঘটনাস্থলের আশপাশের অন্যান্য বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে।
২০০৯ সালে কুমিল্লার তিতাস উপজেলা থেকে প্রথমবারের মতো উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন পারভেজ সরকার। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বাতাকান্দি গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের প্রয়াত ব্যবসায়ী বেলায়েত হোসেন সরকারের ছেলে।
পরিবার, স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তার সঙ্গে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার আওয়ামী লীগের একাংশের দ্বন্দ্ব রয়েছে। বছরখানেক আগে বাতাকান্দি বাজারে তার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। এরপর থেকে তিনি আর এলাকায় যাননি।
পারভেজের মামা কামরুল হোসেন দাবি করেন, তিনি সব সময় চার থেকে পাঁচজন লোক সঙ্গে নিয়ে চলাফেরা করতেন। আজ শুক্রবার মসজিদে একাই গিয়েছিলেন। কে বা কারা তাকে তুলে নিয়ে গেছে তা বলতে পারছেন না। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এই ঘটনা ঘটাতে পারে।
(জাস্ট নিউজ/একে/২০৩৫ঘ.)