ডু অর ডাই আন্দোলন চায় বিএনপির তৃণমূল

ডু অর ডাই আন্দোলন চায় বিএনপির তৃণমূল

ঢাকা, ৪ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশে। গত ১০ বছর ধরে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত নেতাকর্মীরা সরকারের নির্যাতন ও হামলা-মামলার শিকার। ঘুমাতে পারছেন না নিজ বাসাবাড়িতে। এমন অবস্থায় ডু অর ডাই আন্দোলন চান বলে সিনিয়র নেতাদের সাফ জানিয়েছেন বিএনপির তৃণমূল নেতৃবৃন্দ।

শুক্রবার গুলশানে বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বিএনপির জেলা পর্যায়ের নেতাদের বৈঠকে তৃণমূল নেতারা এমন কথা জানিয়েছেন।

বৈঠকে অংশ নেয়া অন্তত ডজন খানেক জেলা পর্যায়ের নেতার সঙ্গে কথা বলে এমন খবর জানা গেছে। জেলা পর্যায়ের নেতারা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের জানিয়েছেন- বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে ও বর্তমান সংসদ বহাল রেখে এই সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া উচিত হবে না। তাহলে গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মতো অবস্থা হবে। অন্যদিকে আগামী সেপ্টেরের মধ্যে কঠোর আন্দোলনের ডাক আসতে পারে বলে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে তৃণমূল বিএনপিকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।

আগামী দিনের সম্ভাব্য আন্দোলন-সংগ্রামকে সামনে রেখে মতামত ও পরামর্শ নেয়ার জন্য দলের ৮০টি সাংগঠনিক জেলার সুপার ফাইভ নেতাদের ঢাকায় ডাকে বিএনপির নীতিনির্ধারক ফোরাম। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি জেলা ও মহানগর কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র সহসভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এ বৈঠকে উপস্থিত হন।

শুক্রবার সকালে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের এবং বিকালে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সিনিয়র নেতারা। শনিবার বাকি বিভাগগুলোর জেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে সকাল বিকাল দুই শিফটে বৈঠক করার কথা রয়েছে।

বৈঠকে অংশ নেয়া যশোর জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামছুল হুদা এ প্রতিবেদককে জানান, আমরা তৃণমূলের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারক ফোরামের নেতাদের জানিয়েছি- এমন কোনো গ্রাম নেই যেখানে গত ১০ বছরে দু-একজন বিএনপি নেতাকর্মী নিহত হননি। এমন কোনো নেতা নেই যিনি ২-৪টা মামলার আসামি হননি। এ অবস্থায় দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি। তাই আর পেছন ফেরার সময় নেই। ডু অর ডাই আন্দোলন চাই আমরা।

যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচনে গেলে কোনো লাভ হবে না। একই সঙ্গে বর্তমান সংসদ বহাল রেখে এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে গিয়েও কোনো লাভ হবে না। এতে গত তিন সিটি করপোরেশন ও খুলনা এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মতো পরিণতি হবে।

বৈঠকে উপস্থিত থাকা রংপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান (জামান), বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন, চাপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম টিপু, রাজশাহী জেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু, যশোর জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবদুস সালাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকনের সঙ্গে আলাপ করেও এমন কথা জানা গেছে। নেতারা জানান, বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূল বিএনপি নেতারা অধিকাংশই বলেছেন এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে গেলে কি হবে তা সিটি নির্বাচনে স্পষ্ট হয়ে গেছে।

নওগাঁ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু জানান, সিনিয়র নেতারা আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রামে আমাদের করণীয় জানতে চেয়েছেন, আমরা জানিয়েছি। সবার কথার মধ্যে উঠে এসেছে- বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে ও এই সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনে যাওয়া উচিত হবে না। কেন্দ্রীয় নেতারা আমাদের সকলের কথা শুনে জানিয়েছেন এগুলো দলের হাইকমান্ডকে জানানো হবে। আন্দোলনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু না বললেও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে আগামী মাসের মধ্যে কঠোর আন্দোলনের ডাক আসতে পারে বলে তৃণমূল বিএনপিকে প্রস্তুত থাকার কথা বলা হয়েছে। তবে কবে ও কিভাবে আন্দোলন হবে বা কোন ফরমেটে আন্দোলন হবে সে বিষয়ে স্থায়ী কমিটিসহ বিএনপির হাইকমান্ড সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়ে দেবেন বলে জানানো হয়েছে। সূত্র: মানবজমিন

(জাস্ট নিউজ/একে/০১৩৯ঘ.)