স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে মুশফিকুল ফজল আনসারী
বিশ্ব রাজনীতির চড়াই উৎরাইয়ের মধ্যে কূটনীতির দুই শতক পূরণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।ইতিহাসের পালাবদলে যেমন থাকে সংঘাত, সংঘর্ষ, টানাপোড়েন, অস্থিরতা ঠিক তেমনি থাকে সাফল্য গাঁথা আর আনন্দ অশ্রুর মিশেল। নিজেদের সব ইতিহাস আর কূটনীতির সাফল্যগাঁথাকে সামনে রেখে কূটনীতির দুই শতক পাড়ি দিলো যুক্তরাষ্ট্র।
আর এ উৎসব পালনে সোমবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের বর্ণাঢ্য আয়োজন ছিলো মনোমুগ্ধকর! অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন কিংবদন্তী কূটনীতিক ও রাজনীতিক ড. হেনরি কিসিজ্ঞার। প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের শাসনামলে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর পরবর্তী প্রেসিডেন্ট গেরাল্ড ফোর্ডের মেয়াদে ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশকে "তলাবিহীন ঝুড়ি" মন্তব্য করে আলোচনার শীর্ষে আসেন তিনি। ৯৬ বছর বয়সেও ধাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বিশ্বব্যাপি আলোচিত-সামালোচিত কালের স্বাক্ষী কিসিজ্ঞার।
ওয়াশিংটন ডিসির হেরি এস ট্রুমেন ভবনে এ জমকাঁলো অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। এছাড়া ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সাংবাদিকসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের কলরব আর পদচারণায় মুখর ছিলো পুরো আয়োজন।
অনুষ্ঠানে হেনরি কিসিজ্ঞারকে যুক্তরাষ্ট্র ইতিহাসের সাফল্য, বাঁক-বদল, পররাষ্ট্রনীতি আর তাঁর বণাঢ্য জীবনের কূটনীতি নিয়ে নানান প্রশ্ন করেন তার বায়োগ্রাফার। সেসব প্রশ্নের উত্তর আর কথার বাঁকে উঠে আসে যুক্তরাষ্ট্রের ২৩০ বছরের ইতিহাস। বিশ্বযুুদ্ধ, দ্বন্দ্ব, সংঘাত, নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব আর এগিয়ে চলার গল্পগুলো।
দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিসিজ্ঞার বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস সমৃদ্ধি আর নেতৃত্বের। ইতিহাসের পরিক্রমায় নিজেদের প্রভাব ধরে রেখেছে দেশটি। পথ সুগম না হলেও আমরা পাড়ি দিয়ে এসেছি বছরের পর বছর। মানবাধিকার আর গণতন্ত্রের জন্য যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান থেকে লড়ে গেছে।"
দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে নিজেদের কূটনীতিকে অধিকতর হৃদ্ধ আর নীতির বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত করতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন ক্ষমতাধর দেশটির কালের রাজনীতির এই রহসম্যয় ব্যক্তি।
হেনরি কিসিজ্ঞার এর কথার ফাঁক গলে বের হয়ে আসে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিভক্তি, ভিয়েতনামের মরণযুদ্ধ, বাংলাদেশ-পাকিস্তান যুদ্ধসহ অতীত অভিজ্ঞতার সব নির্যাস। ভিয়েতনাম যুদ্ধে সমঝোতার জন্য ১৯৭৩ সালে নোবেল শান্তি পুরষ্কার লাভ করেন তিনি।
পম্পেও তার বক্তব্যে বলেন, "২৩০ বছরের কূটনীতির এ ইতিহাস শুধু স্টেট ডিপার্টমেন্টের একার কিছু নয়। এটা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের একার অধিকার প্রতিষ্ঠার ইতিহাস নয় বরং পুরো পৃথিবীর ইতিহাস।"
তিনি আরো বলেন, "অহেতুক সেনা সংঘাত এড়াতে আমরা মিত্র-শত্রু সবার সঙ্গেই গলা মিলিয়েছি। আর তার লক্ষ্য ছিলো নিরাপদ মানুষের যেন প্রাণহানি না হয়।
যেসব দেশ অন্য দেশের খবরদারি থেকে নিজেদের স্বাধীন রাখতে চেয়েছে আমরা তাদের সহযোগিতা করেছি।যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত মূল্যবোধ সামনে রেখেই আমরা সামনে অগ্রসর হয়েছি।"
জিএস/