বায়ার্নে বিধ্বস্ত বার্সা

বায়ার্নে বিধ্বস্ত বার্সা

ম্যাজিকের খুঁত আছে। তাতে যতই মায়াজাল তৈরি হোক, বাস্তবতা কঠিন। মেশিনের ভুল হয় না। মেশিন নিজের কাজটাই করে। ম্যাচের আগে সব পরিসংখ্যান আর ফর্ম বলছিল ম্যাচটা বায়ার্ন মিউনিখ মেশিন আর ম্যাজিশিয়ান লিওনেল মেসির। একা মেসি দাঁড়াতে পারলেন না মেশিনের সামনে। লিসবনের রাতে ম্যাজিক পাত্তাও পায়নি মেশিনের কাছে। বিপর্যস্ত এক বার্সেলোনাকে গুঁড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে উঠে গেছে জার্মান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ। হারেরও ধরন আছে, এই হার কোনো কিছুই মানলো না! গুনে গুনে বার্সাকে ৮ গোল দিলো বায়ার্ন! বার্সা পেল ইউরোপে সবচেয়ে বড় হার।

রোম, অ্যানফিল্ডের পর লিসবনেও বার্সার গল্পটা লেখা হলো হাহাকারের। এই গল্প কোথায় গিয়ে থামবে তা জানা নেই কারো! ফিলিপ কৌতিনহো যখন অষ্টম গোল করলেন, তখন বায়ার্নও আর উদযাপন করতে চাইলো না। দুর্দান্ত বায়ার্ন মিউনিখের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করা ছাড়া আর উপায় থাকল না বার্সার। বায়ার্নের প্রেসিং শুরু থেকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছিল বার্সাকে। প্রাণ বাঁচানোর কোনো উপায়ই জানা ছিল না কারো। ম্যাচের একেবারে শুরু থেকে বার্সার গলা চেপে ধরেছিল বায়ার্ন।

কিকে সেতিয়েনের দলের দুঃস্বপ্নের শুরু ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে। ইভান পেরিসিচ বাম পাশ থেকে বেশ গভীরে ক্রস ফেলেছিলেন। থমাস মুলার নিজেকে ফাঁকা রাখার কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন আরও আগে থেকে। বল পেয়ে রবার্ট লেভানডফস্কিকে পাস বাড়ালেন তিনি, ফিরতি পাসে বক্সের ভেতর ঢুকে মুলারের গোল।

ম্যাচ একপেশে হবে সেই ইঙ্গিত তখন পাওয়া গেলেও ৩ মিনিট বাদেই ভাগ্য খুলে গেল বার্সার। শুরু থেকেই হাইডিফেন্সিভ লাইনে খেলছিল বায়ার্ন। লং পাস থেকে বাম পাশে বল পেয়েছিলেন জর্দি আলবা। তার ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়েই ডেভিড আলাবা নিজেই গোল দিয়ে বসেন।

বার্সা এরপর খানিকক্ষনের জন্য ম্যাচে ফিরেছিল। ডান পাশ থেকে করা মেসির অন্তত দুইটি ক্রস থেকে গোল হতে পারত। তবে দুইবারের একবারও বক্সে থাকা খেলোয়াড়রা মাথা ছোঁয়াতে পারেননি ক্রসে। লুইস সুয়ারেজও এর মধ্যে একবার ম্যানুয়েল নয়্যারের সঙ্গে ওয়ান অন ওয়ানে চলে গিয়েছিলেন, কিন্তু নয়্যার তখন দারুণ সেভে আটকে দিয়েছেন তাকে। বার্সার দৌড় সেখানেই শেষ। এসব কেউ কোনোদিন মনে রাখবে। গল্প হবে রাতের বাকি সময় নিয়ে। সেই গল্পের সঙ্গে তুলনা হবে ২০১৪ বিশ্বকাপের জার্মানি-ব্রাজিল ম্যাচের।

এমজে/