৩১২ রানে এগিয়ে বাংলাদেশ

৩১২ রানে এগিয়ে বাংলাদেশ

স্কোর বোর্ডে বড় রান জমা করেই ইনিংস ঘোষণা দিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। কিন্তু ব্যাটিংয়ে নেমে শ্রীলঙ্কাও যে তার দাঁতভাঙা জবাব দেবে সেটা কে জানত! ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনিং জুটিতেই ১১৪ রান তুলে নেয় স্বাগতিকরা। সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন লঙ্কান ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে। তবে শেষ বিকেলে তিন উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ ও তাইজুল ইসলাম।

পাল্লেকেলেতে আজ শুক্রবার তৃতীয় দিন শেষে তিন উইকেটে ২২৯ রানে দিন শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা। দিন শেষে উইকেটে ৮৫ রানে অপরাজিত ছিলেন দিমুথ করুনারত্নে। তাঁর সঙ্গে ২৬ রানে অপরাজিত ছিলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। দিন শেষে এখনো ৩১২ রানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।

এর আগে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে সাত উইকেটে ৫৪১ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। বিপরীতে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে ও লাহিরু থিরিমান্নের শক্ত জুটিতে দারুণ শুরু করেছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশি পেসারদের পাত্তা না দিয়ে উইকেটে থিতু হয়ে যান দুই ওপেনার। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা এই জুটি অবশেষে ভাঙেন মিরাজ। থিরিমান্নেকে এলবির ফাঁদে ফেলে সাজঘরে পাঠিয়েছেন এই অফ স্পিনার। ১২৫ বলে আট বাউন্ডারিতে ৫৮ রানে থেমেছেন লঙ্কান ওপেনার।

মিরাজের পর স্বাগতিকদের দ্বিতীয় উইকেট নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। ফার্নান্দোকে ২০ রানে আউট করেছেন তিনি। এরপর শেষ বিকেলে আরেকটি স্বস্তি এনে দেন তাইজুল। শ্রীলঙ্কা শিবিরে তৃতীয় আঘাত হানলেন তিনি। টিকতে দিলেন না অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে। ৩২ বলে ২৫ রান করা ম্যাথিউসকে বোল্ড করে সাজঘরে ফিরিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার। তিন উইকেট হারানোর পর ডি সিলভাকে নিয়ে দিনের বাকি অংশ পার করেন করুনারত্নে।

এদিকে প্রথম সেশন পর্যন্ত ৫৪১ রান তুলতে বাংলাদেশ হারিয়েছে সাত উইকেট। ৬৮ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক ও ছয় রানে অপরাজিত ছিলেন তাসকিন। তৃতীয় দিন হাফসেঞ্চুরি করে আউট হন লিটন দাস। মিরাজ ও তাইজুল উইকেটে থিতু হতে পারেননি।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল চার উইকেটে ৪৭৪ রান।

বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি পেয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। সেঞ্চুরির পাশাপাশি নিজেদের ঝুলিতে নতুন রেকর্ড পুরেছেন মুমিনুল ও শান্ত। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাল্লেকেলে টেস্টের প্রথম ইনিংসে রেকর্ড বইয়ে নাম লিখিয়েছে এই জুটি। দুজন মিলে গড়েছেন ২৪২ রানের জুটি। তৃতীয় উইকেটে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি। এর আগে সর্বোচ্চ ছুটি ছিল ২৩৬ রানের।

গত বুধবার টেস্টের প্রথম দিন নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দ্বিতীয় দিন দেড়শ হাঁকিয়ে সম্ভাবনা এগিয়ে নেন ডাবল সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ডাবল সেঞ্চুরির মাইলফলক ছোঁয়া হলো না। ১৬৩ রানে থামল শান্ত এক্সপ্রেস। একদম টেস্ট মেজাজে খেলা শান্ত এই রান তুলতে খেলেছেন ৩৭৮ বল। তাঁর ইনিংসটি সাজানো ছিল ১৭টি বাউন্ডারি ও এক ছক্কায়।

কাল দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে সেঞ্চুরি হাঁকালেন মুমিনুল। লাঞ্চ বিরতির আগে ধনঞ্জয়ার বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের ১১তম সেঞ্চুরি তুলে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ২২৪ বলে শতক স্পর্শ করেন তিনি।

অফ স্পিনার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার অফ স্টাম্পের একটু বাইরের বল কাট করে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটান মুমিনুল। ক্যারিয়ারের অষ্টম বছরে এসে বিদেশে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন মুমিনুল। সেঞ্চুরির পর শেষ পর্যন্ত ১২৭ রানে থামেন অধিনায়ক। ৩০৪ বলে তাঁর ইনিংসে ছিল ১১টি বাউন্ডারি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ১৭৩ ওভারে ৫৪১/৭ (ডি.) (তামিম ৯০, সাইফ ০, শান্ত ১৬৩, মুমিনুল ১২৭, মুশফিক ৬৮*, লিটন ৫০, মিরাজ ৩, তাইজুল ২, তাসকিন ৬*; লাকমল ৩৬-১৪-৮১-১, বিশ্ব ৩৫-৯-৯৬-৪, কুমারা ২৮-৪-৮৮-১, ম্যাথিউস ৭-১-১৪-০, ধনাঞ্জয়া ৩০-১-১৩০-১, হাসারাঙ্গা ৩৬-২-১১১-০, করুনারত্নে ১-০-৫-০)।

শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস : ৭৩ ওভারে ২২৯/৩ (করুনারত্নে ৮৫*, লাহিরু ৫৮, ফার্নান্দো ২০, ম্যাথিউস ২৫, সিলভা ২৬ ; রাহি ৭-১-২৫-০, তাসকিন ১২-৩-৩৫-১, এবাদত ১০-১-৪৪-০, মিরাজ ২৪-৬-৬০-১, তাইজুল ২০-৫-৫৬-১)।