নেপালকে হারিয়ে সাফের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

নেপালকে হারিয়ে সাফের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

মেয়েদের সাফ ফুটবল মানেই যেন শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে বাংলাদেশ। ফের একবার সাফের শিরোপা জিতে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে ভুল করেনি বাংলাদেশ। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা।

আজ বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে বাংলাদেশ অধিনায়ক শামসুন্নাহারকে বাড়ানো বল ঠেকাতে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন নেপাল গোলরক্ষক। গোলরক্ষকের পায়ে বল লেগে আকলিমার পায়ে যায়। আকলিমার শট চলে যায় নেপাল গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে।

ম্যাচের ১৫তম মিনিটে চোট পেয়ে নেপালের ফুটলারকে সাইডলাইনে যেতে হয়। সুস্থ না হওয়ায় খেলোয়াড় বদলাতে বাধ্য হন নেপাল কোচ। ২২তম মিনিটে প্রথম কর্নার পায় নেপাল। তবে তা কাজে লাগাতে পারেনি নেপালের আক্রমণভাগ। ম্যাচের ২৩তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত নেপাল। তবে বাংলাদেশ গোলরক্ষক রূপনা চাকমার বিশ্বস্ত হাতে সে যাত্রায় রক্ষা পায় বাংলাদেশ।

প্রথমার্ধের ৩১তম মিনিটে শাহেদা আক্তার রিপার বাড়ানো বল অধিনায়ক শামসুন্নাহার নিয়ন্ত্রণে না নিতে পারায় গোল বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। এরপর ৩৬তম মিনিটে আবারও গোলের সুবর্ণ সুযোগ পায় বাংলাদেশ। এবারও জালে বল জড়াতে ব্যর্থ হন শামসুন্নাহার। পরের মিনিটেই রিপার দূরপাল্লার শট ঠেকিয়ে দলকে কোনোমতো রক্ষা করেন নেপাল গোলরক্ষক।

তবে ম্যাচের ৪১তম মিনিটে নেপাল রক্ষণের ভুলে গোলের সুযোগ পায় বাংলাদেশ। যা হাতছাড়া করেনি ফরোয়ার্ড রিপা। গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান কক্সবাজারের মেসি হিসেবে পরিচিত এই ফুটবলার। তার গোলেই ১-০ গোলের লিড নেয় বাংলাদেশ।

১ গোলে থেমে থাকেনি বাংলাদেশ। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে অধিনায়ক শামসুন্নাহারের নান্দনিক ফিনিশিংয়ে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় স্বাগতিকরা। তার এই গোলেই ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

বিরতি থেকে ফিরে আক্রমণের ধার বাড়ায় বাংলাদেশ। ৪৯তম মিনিটে রিপার বাড়ানো বলে আকলিমার জোরালো শট বারের ওপর দিয়ে চলে যায়। ৫১তম মিনিটে ম্যাচে ফেরার সুযোগ পায় নেপাল। তবে আরও একবার গোলরক্ষক রূপনার কাছে আটকে যায় নেপালের আক্রমণভাগ।

ম্যাচের ৫৫তম মিনিটে তৃতীয় গোলের দেখা পেয়ে যেতে পারত বাংলাদেশ। নেপাল গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেনি অধিনায়ক শামসুন্নাহার জুনিয়র। ৭২তম মিনিটে আরও একবার এগিয়ে যেত পারত বাংলাদেশ। তবে রিপার দূরপাল্লার শট গোলপোস্টের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়।

৭৯তম মিনিটে ম্যাচে ফিরতে পারত নেপাল। তবে বাংলাদেশ গোলরক্ষক রূপনা চাকমার অবিশ্বাস্য সেভে হতাশ হতে হয় নেপালকে। পুরো ম্যাচ জুড়ে রূপনার পারফরম্যান্স ছিল দেখার মতো। যতবারই বাংলাদেশের রক্ষণ ভেঙে গোল করতে এসেছিল নেপাল, ততবারই রুপনা আস্থার প্রতিদান দেন।

দ্বিতীয় গোলের পর তৃতীয় গোল পেতেও খুব বেশি সময় লাগেনি বাংলাদেশের। ৮৫তম মিনিটে ব্যবধান ৩-০ করে বাংলাদেশ। রিপার বাড়ানো বলে গোল করে সমর্থকদের উল্লাসে ভাসান উন্নতি খাতুন। ম্যাচের বাকি সময়ে আর তেমন কোনো জোরালো আক্রমণ না হওয়ায় ৩-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। এর আগে গত বছর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে তাদের ঘরের মাঠে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সাফের শিরোপা জিতেছিল শামসুন্নাহার-সাবিনারা।