আম বাগানের পাখির বাসাগুলো কোনো অবস্থাতেই ভাঙা যাবে না: হাইকোর্ট

আম বাগানের পাখির বাসাগুলো কোনো অবস্থাতেই ভাঙা যাবে না: হাইকোর্ট

রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় একটি আমবাগানে থাকা পাখির বাসা ভাঙা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের ওই আমবাগান এলাকাটি কেন অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ আদেশ দেন।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওই আমবাগান থেকে পাখির বাসা উচ্ছেদ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতের নজরে এনে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রজ্ঞা পারুমিতা রায়ের আবেদনের প্রেক্ষিতআদালত এই আদেশ দেন। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সামিউল আলম।

আমবাগানটির পাখির বাসাগুলো কোনো অবস্থাতেই ভাঙা যাবে না উল্লেখ করে আদালত অভয়ারণ্য ঘোষণার কারণে বাগানমালিক বা ইজারাদারের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না, তা নিরীক্ষা করে ৪০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে রাজশাহী জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

জানা যায়, খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের একটি আমবাগানে কয়েক হাজার শামুকখোল পাখির বাসা রয়েছে। সব বাসাতেই পাখির ছানা রয়েছে। এগুলো এখনো উড়তে শেখেনি। বাগানমালিক আমবাগান পরিচর্যার জন্য এসব পাখির বাসা ভাঙতে গেলে স্থানীয় পাখিপ্রেমীরা বাধা দেন। পাখিপ্রেমীদের প্রতিরোধের মুখে মঙ্গলবার বাগানমালিক ১৫ দিন সময় দিয়ে বলেছেন, এ সময়ের মধ্যে কোনো ব্যবস্থা না হলে তিনি সব পাখির বাসা ভেঙে দেবেন।

পাখিপ্রেমীরা জানান, চার বছর ধরে পাখিগুলো এই বাগানে বাচ্চা ফোটায়। বর্ষার শেষে এসে বাচ্চা ফুটিয়ে শীতের শুরুতে তারা আবার চলে যায়। বাচ্চাগুলো উড়তে শিখতে অন্তত আরও এক মাস সময় লাগবে।

আতাউর রহমান নামের একজন ব্যবসায়ী এই আমবাগান ইজারা নিয়েছেন। তিনি বলেন, সাত লাখ টাকা দিয়ে বাগানটি দুই বছরের জন্য ইজারা নিয়েছি। গত বছর পাখির কারণে আম নষ্ট হয়েছে। এবার আর তা হতে দেব না।

স্থানীয় পাখিপ্রেমী রফিকুল ইসলাম বলেন, বন অধিদপ্তর আমগাছের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প করার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু এ ব্যাপারে আর কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। এখন পাখিগুলোর বাসা ভেঙে দিলে হাজার হাজার পাখির বাচ্চা মারা পড়বে। এরই মধ্যে বাসা ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় স্থানীয় লোকজন ১০০ পাখির বাচ্চা ধরে নিয়ে গেছে।