ওমিক্রন মোকাবিলায় সব দেশকে প্রস্তুত থাকতে বলল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

ওমিক্রন মোকাবিলায় সব দেশকে প্রস্তুত থাকতে বলল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) উদ্বেগ সৃষ্টিকারী নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ বৃদ্ধি ও ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বিশ্বের দেশগুলোকে স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা ও টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ওমিক্রনের সংক্রমণ নিয়ে বিশেষ করে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোকে সতর্ক করে ডব্লিউএইচও শুক্রবার এ প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানায়।

সংস্থা বলেছে, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়াকে সাময়িকভাবে বিলম্বিত করতে পারে, তবে এককভাবে তা সমাধান নয়। খবর বিবিসি বাংলার

ওমিক্রনের সংক্রমণ ইতিমধ্যে এশিয়া, আফ্রিকা, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের ২৫টির বেশি দেশে শনাক্ত হয়েছে। আর প্রথম শনাক্ত হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার ৯টি প্রদেশের মধ্যে ৭টিতেই এই ধরনটিতে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরার চেষ্টায় অনেক দেশের সরকার ভ্রমণসংক্রান্ত বিধিনিষেধ আরও কড়াকড়ি করেছে।

ডব্লিউএইচওর পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক পরিচালক তাকেশি কাসেই বলেন, ‘সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া সাময়িকভাবে বিলম্বিত করা যেতে পারে। কিন্তু প্রতিটি দেশ ও কমিউনিটিকে অবশ্যই সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে তৈরি থাকতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, 'এই মুহূর্তে আমরা খবর পাচ্ছি ভৌগলিকভাবে ওমিক্রন ইতোমধ্যেই অনেক বেশি ছড়িয়ে গেছে।'

এক সংবাদ সম্মেলনে তাকেশি আরও বলেন, ‘সীমান্ত নিয়ে গৃহীত পদক্ষেপের ওপরই শুধু নির্ভর করে থাকলে মানুষের চলবে না, যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, সম্ভাব্য উচ্চ সংক্রমণ সক্ষমতার এই ধরনটিকে নিয়ন্ত্রণে নিজেদের প্রস্তুতি নিতে হবে। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, তাতে এ ইঙ্গিতই পাওয়া যায়, আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাচ্ছি না।’

দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিকেবল ডিজিজের বিজ্ঞানী মিশেল গ্রুম বলেন, 'ওমিক্রন নিয়ে তার দেশ এ মুহূর্তে করোনার এক নজিরবিহীন ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মুখোমুখি।'

সংস্থার আপদকালীন আঞ্চলিক ডিরেক্টার ড. বাবাতুন্ডে ওলউকুরে বলেছেন, অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের গতিপ্রকৃতি বুঝতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশাল সংখ্যক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে বর্তমানে এক যোগে কাজ করছে। তবে এখনও পর্যন্ত তারা এমন কোন তথ্য পায়নি, যার জন্য এই মহামারি মোকাবেলায় এই মুহূর্তে নতুন দিক নির্দেশনার প্রয়োজন রয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, প্রতিটি দেশ যেন তাদের নিজস্ব ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান পদক্ষেপগুলো জোরদার করে, যেমন: মাস্ক পরা, দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়া, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, সংক্রমিতদের ট্রেস করা, আক্রান্তদের আইসোলেশনে রাখা এবং টিকাদান অব্যাহত রাখা।

ড. কাসাই স্কুল খোলা রাখার ঝুঁকিগুলো মূল্যায়ন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেবার ওপরও জোর দিয়েছেন।

উল্লেখ্য. গত সপ্তাহে ওমিক্রনকে উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট হিসেবে ঘোষণা করা হয়।