২০২৪ সাল জুড়ে গাজায় যুদ্ধ চলবে : ইসরায়েল

২০২৪ সাল জুড়ে গাজায় যুদ্ধ চলবে : ইসরায়েল

২০২৪ সাল জুড়ে গাজার সংঘাত অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলছেন, দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের প্রস্তুতির জন্য সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, কয়েকজন সেনাকে যারা বিশেষ করে সংরক্ষিত রয়েছেন তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে মোতায়েন করা হবে। ২০২৪ সালে গাজায় সংঘাত চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা থেকে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন। তিনি আরও বলেন, অতিরিক্ত মিশন থাকবে এবং বছরের বাকি সময় সংঘাত কেমন চলবে তার জন্য আইডিএফকে অবশ্যই আগে থেকে পরিকল্পনা করতে হবে। এই সপ্তাহে বেশ কয়েকজন সেনা গাজা ছাড়বে যেন আসন্ন অভিযানের আগে তারা শক্তি অর্জন করে নতুনভাবে নামতে পারে।

মূলত গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা প্রায় ২২ হাজারে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

এছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৫৭ হাজার মানুষ। ইসরায়েলের এই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবিরসহ বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ১৫৬ জন নিহত এবং আরও ২৪৬ জন আহত হয়েছেন বলেও গাজার এই মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

আইডিএফ বলেছে, তারা দেইর আল-বালাহ শহরে রাতের আঁধারে হামলা চালিয়ে হামাস কমান্ডার আদিল মিসমাহকে হত্যা করেছে। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গাজা শহরে রাতভর বোমা হামলায় অন্তত ৪৮ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আরেকটি হামলায় শহরের পশ্চিমে আল-আকসা বিশ্ববিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে সোমবার সকালে আরেকটি হামলায় আল-মাগাজি শরণার্থী শিবিরে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

জাতিসংঘ বলছে, গাজার ২৪ লাখ মানুষের ৮৫ শতাংশই প্রায় ২০ লাখ - এখন বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। রয়টার্স জানিয়েছে, ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্য জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহায়তার জন্য পোলিও এবং হাম-সহ শিশুদের রোগ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে হাজার হাজার ডোজ টিকা গাজায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

বার্তাসংস্থাটি ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, ১৪ মাস পর্যন্ত টিকা দেওয়া যাবে এমন পরিমাণ চিকিৎসা সরবরাহ মিসরের রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গাজায় প্রবেশ করেছে।

রাফাহ থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আয়াদিল সাপারবেকভ বিবিসিকে বলেছেন, গাজাবাসীরা যে পরিস্থিতিতে বাস করছে তার জন্য এসব ভ্যাকসিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তার ভাষায়, ‘পানির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ, দুর্বল স্বাস্থ্যবিধি এবং খুব খারাপ স্যানিটেশন ব্যবস্থাসহ হাজার হাজার মানুষ জনাকীর্ণ শিবিরগুলোতে একত্রে বসবাস করছে। আর এগুলোই বিভিন্ন রোগের প্রজনন ক্ষেত্র।’