৪৩ জন ভারতীয় নাগরিককে মালদ্বীপ থেকে তাড়িয়ে দিল মুইজ্জু সরকার!

৪৩ জন ভারতীয় নাগরিককে মালদ্বীপ থেকে তাড়িয়ে দিল মুইজ্জু সরকার!

‘অপরাধী’ বলে চিহ্নিত করে মালদ্বীপ থেকে ৪৩ জন ভারতীয়কে নির্বাসন দিল সেই দেশের সরকার। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু ভারতীয় নয়, সব মিলিয়ে ১২টি দেশের ১৮৬ জন বিদেশীকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে মালদ্বীপ। তাদের বিরুদ্ধে সেই দেশে অবৈধ ব্যবসা চালানোর অভিযোগ করেছে মালদ্বীপ সরকার।

তবে, মজার বিষয় হল, এর মধ্যে একজনও চীনা নাগরিক নেই। মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট, মহম্মদ মুইজ্জু চিনপন্থী এবং ভারত বিরোধী হিসেবেই পরিচিত। কাজেই তার সরকারের এই পদক্ষেপে আশ্চর্যের কিছু নেই বলেই, মনে করছেন কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। বিতাড়িত এই বিদেশিদের মধ্যে অবশ্য সবচেয়ে বেশি রয়েছেন বাংলাদেশিরা। ৮৩ জন বাংলাদেশিকে নির্বাসন দিয়েছে মালে। এছাড়া, ২৫ জন শ্রীলঙ্কান এবং ৮ জন নেপালিকেও নির্বাসন দেয়া হয়েছে। তবে, তাদের ঠিক কবে মালদ্বীপ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে, সেই তারিখ এখনও জানা যায়নি।

মালদ্বীপের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, তাদের দেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই বিদেশি নাগরিরা তাদের উপার্জন জমা রেখেছেন। সেই অর্থ দিয়ে মালদ্বীপে তারা অবৈধভাবে ব্যবসা করছে। হোমল্যান্ড সিকিওরিটি মন্ত্রী, আলি ইহুসান জানিয়েছেন, বিভিন্ন নামে এই অবৈধ ব্যবসাগুলি চলছে। অর্থ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই অবৈধ ব্যবসাগুলি বন্ধ করার যৌথ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই ৪৩ জন ভারতীয়-সহ এই ১৮৬ জন বিদেশি নাগরিককে মালদ্বীপ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

মালদ্বীপ সরকারের দাবি, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, মালদ্বীপের কোনও নাগরিকের নামে ব্যবসা নিবন্ধন করছেন এই বিদেশি নাগরিকরা। এরপর, নিবন্ধিত ক্ষেত্রের বাইরেও তারা ব্যবসা করে চলেছে। অনেক ক্ষেত্রে এই অবৈধ ব্যবসা থেকে অর্জিত অর্থ, বিদেশিরা তাদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে জমা করছেন।

এই ধরনের ব্যবসাগুলি বন্ধ করে, ব্যবসাগুলি যে বিদেশিরা চালাচ্ছিল, তাদের নির্বাসনে পাঠানোর কাজ করছে মন্ত্রক। ব্যবসা নিবন্ধক কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে, কোনও ব্যবসা থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মুনাফা অর্জন করছেন কোনও বিদেশি, সেই ক্ষেত্রে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে চালু হওয়া আইন অনুসারে সেই ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া হবে।

সম্প্রতি, এই ধরনের অপরাধের দায়ে ১৮৬ জন বিদেশিকে দ্বীপরাষ্ট্রটি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মালদ্বীপের শরণার্থী দফতর জানিয়েছে, এর মধ্যে চীনের একজনও নাগরিক নেই। ক্ষমতায় আসার আগে মুইজ্জু শুধু ভারত বিরোধিতা নয়, অন্য কোন দেশকেই মালদ্বীপের বিদেশ নীতি প্রভাবিত করতে দেবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে, শাসনের শুরু থেকেই চীনের প্রতি তার পক্ষপাত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করতে চায় চীন। আর তাদের এই পরিকল্পনায় মালদ্বীপের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।