করোনা: শক্তিশালী গবেষণা ছাড়াই বাংলাদেশে ৫ ওষুধের অন্তর্ভুক্তি, বাড়াচ্ছে বিভ্রান্তি

করোনা: শক্তিশালী গবেষণা ছাড়াই বাংলাদেশে ৫ ওষুধের অন্তর্ভুক্তি, বাড়াচ্ছে বিভ্রান্তি

শক্তিশালী গবেষণা ছাড়াই জাতীয় গাইডলাইনে কোভিড চিকিৎসায় ৫টি ওষুধের অন্তর্ভুক্তি বিভ্রান্তি বাড়াচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সুপারিশকৃত ৩টি ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে নেই কোনো সতর্ক বার্তা।

শুধুমাত্র বিভিন্ন দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে এই মর্মে একের পর এক ওষুধ তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। মহামারীর এই সময়ে এ ধরনের ওষুধ ব্যক্তিগত উদ্যোগ বা স্বল্প পরিসরে চিকিৎসকরা ব্যবহার করতে পারলেও গাইডলাইনে অন্তর্ভুক্ত না করার পরামর্শ তাদের।

কোভিড চিকিৎসায় বিশ্বজুড়ে অর্ধশতাধিক ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা চলছে। গবেষণাধীন ওষুধের সবগুলোই অন্য রোগের ওষুধ হিসেবে অনুমোদিত।

ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের জাতীয় গাইডলাইনে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন, অ্যাজিথ্রোমাইসিন ও ক্লোরোকুইন এই তিনটি ওষুধের সুপারিশ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন হার্টে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে জানিয়ে হাইড্রোক্সিক্লোকুইনের বিষয়ে সতর্ক করলেও বাংলাদেশের গাইডলাইনে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি। এছাড়াও অপর্যাপ্ত ও দুর্বল গবেষণার ওপর ভিত্তি করে জাতীয় গাইডলাইনে আরো ৫টি ওষুধ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে যেটি কোনোভাবেই বিজ্ঞানসম্মত নয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান খসরু বলেন, ডাক্তার হিসেবে রোগীর উপকারের জন্য আমি ব্যবহার করতে পারি। কিন্তু সে জন্য হাসপাতালের যে সুপারিশ থাকা দরকার তা অনেক শক্ত থাকতে হয়।

মেডিসিন ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ফজলে রাব্বি বলেন, রেমডিসিভির নামক ওষুধ নিয়ে ইদানিং অনেক চাঞ্চল্য দেখা গেছে। ইমার্জেন্সি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তবে কোনো স্টাডিতে এটা সুফল দিয়েছে কোনোটাতে দেয়নি। তাই এটা ব্যবহারে আরো সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

অপ্রয়োজনে তালিকাভুক্ত এসব ওষুধ ব্যবহারের ফলে রোগীরা শারীরিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল ইসলাম বলেন, আক্রান্ত রোগীর জন্য এখন পর্যন্ত কোনো ওষুধই সম্পূর্ণ সফল বলে প্রমাণিত হয়নি।

করোনা চিকিৎসার বিষয়ে চিকিৎসকদের ধারণা দিতেই এসব ওষুধ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিকিৎসা বিষয়ক টেকনিক্যাল কমিটি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিকিৎসা বিষয়ক টেকনিক্যাল কমিটি সদস্য অধ্যাপক ডা. রিদওয়ানউর রহমান বলেন, যারা কনসাল্টেন্ট থাকবে ওরা যদি আলাদা করে কোনো রোগীর জন্য কোনো ওষুধ ব্যবহার করতে চায় তাদের জন্য এইটা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখন পর্যন্ত কোনো ওষুধ বা চিকিৎসাকে স্বীকৃতি দেয়নি। কার্যকর ওষুধ পেতে হলে আন্তর্জাতিক পরিসরে ব্যবহৃত কয়েকটি ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পাশাপাশি সলিডারিটি ও রিকভারি ট্রায়ালের ফলাফলের জন্য অপেক্ষার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

এমজে/