ফরিদপুরের আলোচিত সেই দুই ভাই গ্রেপ্তার

ফরিদপুরের আলোচিত সেই দুই ভাই গ্রেপ্তার

ফরিদুপরের আলোচিত প্রভাবশালী দুই ভাইকে আটক করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তারা হলেন ফরিদপুর শহর যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেল।

রবিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে ফরিদপুর শহর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুর জেলার পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান।

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের দুই জনকে। গত ১৬ মে রাত সোয়া ৯টার দিকে শহরের গোয়ালচামট মহল্লার মোল্লা বাড়ি সড়কে তার বাড়িতে এ হামলা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে হামলা প্রসঙ্গে ফরিদপুর জেলার পুলিশ সুপার জানান, মামলার যাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম দুইজন বরকত ও রুবেলকে আজ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে।

এর আগে গত বছরের ১৭ অক্টোবর ‘ফরিদপুরে দুই ভাইয়ের ত্রাসের রাজত্ব’ শিরোনামে একটি সরেজমিন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় মানবজমিনে।এর পরে তাদের বিষয়ে অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)। পরে দুদকের অনুসন্ধানে তাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে আয় বর্হিভূত প্রায় সাড়ে ৬৬ কোটি টাকা উপার্জনের তথ্য পাওয়া যায়।

‘ফরিদপুরে দুই ভাইয়ের ত্রাসের রাজত্ব’ প্রতিবেদনে ওঠে আসে তাদের উত্থান কাহিনী। এতে বলা হয়, গোটা রাজত্বেই চলছে তাদের খবরদারি। কুশাসন আর নির্যাতন। ভয়ে-আতঙ্কে নীরব সবাই। ফরিদপুর শাসন করলেও এক সময় তারা বাস-ট্রাকের হেলপারের কাজ করেছেন। ছিলেন অন্যের দোকানের কর্মচারি। কোন মতে জীবন চলতো তাদের। আর এখন তাদের আলিশান জীবন। চলেন দামি গাড়িতে। তাদের কথার বাইরে যাওয়ার সাহস নেই কারও। বলতে গেলে পুরো জেলা শহর তাদের নিয়ন্ত্রণে। নানা অপকর্ম জোর জবরদস্তি করে নিজেদের কব্জায় নিয়েছেন অন্যের বাড়ি, দোকান, জমি। তাদের ইশারা ছাড়া ফরিদপুর শহরে কিছুই নড়ে না। সাধারণ জীবন থেকে রাজনীতির ছোঁয়ায় ক্ষমতাধর হয়ে উঠা এই দুই ভাই হলেন ফরিদপুর শহর যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেল। অর্থ আর সম্পদের লোভে এক সময় বিএনপির রাজনীতিতে জড়ান এ দুই ভাই। পরে ক্ষমতা বদলের পর তারাও রূপ বদলান। রাজনীতিকে ব্যবহার করে ত্রাস হয়ে ওঠেন ফরিদপুরের। তাদের দাপটে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও এখন কোনঠাসা। কেউ কেউ অপমানে, অভিমানে রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছেন। আর যারা আছেন তারা দুই ভাগে বিভক্ত। সংখ্যালঘুদের জমি দখল নির্যাতন, টেন্ডার নিয়ন্ত্রনসহ তাদের রাজত্ব ছিলো পুরো ফরিদপুর শহরে। এমন শত শত অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

এমজে/